শংকর গোবিন্দ চৌধুরী (জন্ম: ৪ মার্চ, ১৯২৬ - মৃত্যু: ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৫) ছিলেন বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, সমাজসেবী এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৮ সালে তাকে “স্বাধীনতা পুরস্কার” (মরণোত্তর) সম্মাননায় ভূষিত করে।
জন্ম ও পারিবারিক জীবন
শংকর গোবিন্দ চৌধুরী ১৯২৬ সালের ৪ মার্চ তারিখে নাটোরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম জ্ঞানদা গোবিন্দ চৌধুরী; তিনি নাটোরের রাণী ভবানীর জমিদার ছিলেন। ১৯৫৪ সালে তিনি অনিমা চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৪৫ সালে বগুড়ার আদমদীঘি হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করে উচ্চশিক্ষার্থে কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে বিএসসিতে অধ্যয়নকালে ভারত বিভক্তির সময় তার শিক্ষাজীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। ।[১]
রাজনৈতিক জীবন
শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবনের শুরু। ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। মুক্তিযুদ্ধে ৭ নম্বর সেক্টরের জোনাল কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৫৪ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। তিনি আমৃত্যু নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯ সালের আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং এরশাদের শাসনামলে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য এক বছর কারাবরণ করেন তিনি।
১৯৬৯ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি নাটোর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন।
তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্যও ছিলেন। ১৯৭৫ সালে বাকশাল প্রবর্তিত হলে তিনি নাটোরের গভর্ণর নিযুক্ত হন।[২] ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৩][৪]
মৃত্যু
১৯৯৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সন্মাননা ও পুরস্কার
২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার “স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ” বিভাগে তাকে মরণোত্তর “স্বাধীনতা পুরস্কার” সম্মাননায় ভূষিত করে।[৫]
তথ্যসূত্র
বহি:সংযোগ