রানি মঙ্গাম্মল (মঙ্গাম্মা, মৃত্যু ১৭০৫) ছিলেন মাদুরাই নায়ক রাজ্যের (বর্তমানে মাদুরাই, ভারত) রানি রাজ প্রতিনিধি। তাঁর নাতি বিজয় রঙ্গ চোক্কানাথের নাবালক থাকার সময় ১৬৮৯ থেকে ১৭০৪ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্য শাসন করেছিলেন।[১] তিনি একজন জনপ্রিয় প্রশাসক ছিলেন এবং এখনও রাস্তা ও পথের নির্মাতা হিসাবে তাঁকে ব্যাপকভাবে স্মরণ করা হয়। এছাড়াও তিনি মন্দির ও সরাইখানা নির্মাণ এবং পুকুর খনন করিয়েছিলেন। তাঁর অনেক জনসেবামূলক কাজের ব্যবহার এখনও করা হচ্ছে। তিনি তাঁর কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক দক্ষতা এবং সফল সামরিক অভিযানের জন্যও পরিচিত। তাঁর সময়ে মাদুরাই রাজ্যের রাজধানী ছিল তিরুচিরাপল্লী।
জীবন
মঙ্গাম্মল ছিলেন মাদুরাই শাসক চোক্কানাথ নায়কের (শাসনকাল ১৬৫৯ - ১৬৮২) একজন সেনাপতি তুপাকুল লিঙ্গম নায়কের কন্যা। তিনি চোক্কানাথ নায়ককে বিবাহ করেছিলেন। তাঁদের পুত্রের নাম ছিল রঙ্গকৃষ্ণ মুথু বীরাপ্পা নায়ক (শাসনকাল ১৬৮২ - ১৬৮৯)।[২]
রাজ প্রতিনিধিত্ব
১৬৮২ সালে যখন মঙ্গাম্মলের স্বামী মারা যান, তাঁদের পুত্র রঙ্গকৃষ্ণ সিংহাসন অধিকার করেন। কিন্তু সেই পুত্র ১৬৮৯ সালে মারা গেলে সিংহাসন খালি হয়ে যায়। তাঁর বিধবা পুত্রবধূ সন্তানসম্ভবা ছিলেন। ১৬৮৯ সালে সেই নবজাত শিশু মঙ্গাম্মলের পুত্রের স্থলাভিষিক্ত হয়। তাঁর পুত্রবধূ চিতায় সতী হিসেবে মৃত্যুবরণ করলে, মঙ্গাম্মল তাঁর নাতির নাবালকত্বের কারণে রাজ প্রতিনিধি হয়ে রাজ্য শাসন শুরু করেন।[২][৩]
মঙ্গাম্মলের রাজ্য শাসনকালে, অনেক সেচ খাল মেরামত করা হয়েছিল, নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছিল, রাস্তার ধারে বৃক্ষ রোপন হয়েছিল এবং বেশ কয়েকটি পৌরসভা ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। তিনি তামুক্কামে মন্দির এবং তাঁর "স্প্রিং প্যালেস" তৈরি করিয়েছিলেন।[৪] এখন মাদুরাইয়ের "স্প্রিং প্যালেস"টিতে গান্ধী স্মারক জাদুঘর হয়েছে।[৪] কন্যাকুমারী থেকে মহাসড়কটি মূলত মঙ্গাম্মলের সময়ে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি রানি মঙ্গাম্মল সালাই নামে পরিচিত ছিল।[৩][৫]
জিঞ্জি অবরোধ (জিঞ্জি দুর্গ) চলাকালীন মুঘল সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। রানী মঙ্গাম্মল বুঝতে পেরেছিলেন যে বিশ্বাসঘাতক রাজারাম জিঞ্জি দুর্গে লুকিয়ে আছে এবং যদি মুঘল সেনাবাহিনী প্রত্যাহৃত হয় তাহলে সে তাঞ্জাবুর এবং মাদুরাই আক্রমণ করতে আসবে। মঙ্গাম্মল তৎক্ষণাৎ আওরঙ্গজেব এবং মুঘলকে তাঁর সহযোগী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। এরপর তিনি জিঞ্জি দুর্গ আক্রমণে জুলফিকার খানকে সাহায্য করতে শুরু করেন। ৮ বছর পর যখন জুলফিকার খান এবং মঙ্গাম্মল উভয়েই দুর্গটি দখল করে নেন, তখন তিনি এবং তাঁর পরিবার মুঘলদের নেতৃত্বে দুর্গের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করে।
মঙ্গাম্মলের নাতি বিজয় রঙ্গ চোক্কানাথ নায়ক যখন ১৭০৪ সালে যথোপযুক্ত বয়সে পৌঁছোলেন, রানি এবং তাঁর প্রধানমন্ত্রী আচাইয়া ক্ষমতা ছাড়তে অস্বীকার করেন। বিজয় রঙ্গের সেনাপতি তাঁদের বন্দী করেন এবং শেষে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।[৩][৬]
তথ্যসূত্র
↑N. Subrahmanian: History of Tamilnad, Koodal Publishers, 1972
↑Balendu Sekaram, Kandavalli (১৯৭৫)। The Nayaks of Madura (English ভাষায়)। Hyderabad: Andhra Pradesh Sahithya Akademi। পৃষ্ঠা 24। ওসিএলসি3929107।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: অচেনা ভাষা (link) (no preview)
বহিঃসংযোগ
উইকিমিডিয়া কমন্সে রানি মঙ্গাম্মল সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।
"দ্য হিন্দু : এ টাউন বাই দ্য ভাইগাই"। দ্য হিন্দু। Archived from the original on ১৭ আগস্ট ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৬-১৪।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: ইউআরএল ফিট নয় (link)