মসজিদে হারাম (আরবি: اَلْمَسْجِدُ ٱلْحَرَامُ, প্রতিবর্ণীকৃত: al-Masjid al-Ḥarām, অনুবাদ 'পবিত্র মসজিদ' )[৪] হলো সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে অবস্থিত একটি মসজিদ , যা মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় স্থাপনা। মসজিদটি বড় মসজিদ নামেও পরিচিত।[৫] এ মসজিদটি মুসলিমদের হজ্জ যাত্রাকালীন সফরের একটি স্থান, যা প্রত্যেক সামর্থবান মুসলমানের জন্য জীবনে কমপক্ষে একবার পালনীয়। এছাড়াও মুসলমানদের হজ্জের চেয়ে ছোট জিয়ারত "উমরাহের" একটি প্রধান অংশ হিসেবেও মুসলিমদের সেখানে ভ্রমণ করতে হয়। উমরাহ বছরে যে কোনো সময়ে সম্পাদন করা যায়। হজ্জ ও উমরাহ উভয়েরই অংশ হিসেবে মুসলিমদের মসজিদটি থেকে কাবাকে প্রদক্ষিণ করতে হয়। মসজিদটির আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানের মধ্যে রয়েছে: হাজরে আসওয়াদ, মাকামে ইব্রাহিম, সাফা ও মারওয়া ও জমজম কূপ।[৬]
বর্তমানে (২০২২ সালের এপ্রিলে) মসজিদটি পৃথিবীর বৃহত্তম মসজিদ ও অষ্টম বৃহত্তম স্থাপনা হিসেবে অক্ষত রয়েছে। কয়েক বছরে এটির গুরুত্বপূর্ণ মেরামত এবং বর্ধন করা হয়।[৭] এই মসজিদটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সুলতান, খলিফা ও রাজা-বাদশাহের তত্ত্বাবধানে ছিল এবং বর্তমান এটি সৌদি আরবের রাজার তত্ত্বাবধানে আছে, যাকে এ কারণে খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন পদবী প্রদান করা হয়।[৮]
ইতিহাস
সবচেয়ে পুরানো মসজিদ হিসেবে মসজিদটির সাথে মাসাওয়া এর ইরিত্রিয়া শহরের মসজিদ আস-সাহাবা এবং মাদিনার কুবা শহরের মসজিদে কুবা এর সাথে তুলনা করা হয়।[৯][১০] যে বিশেষজ্ঞরা ইসলামী ঐতিহ্য এবং কুরআন আলোচনা করেন তাদের মতে, ইসলাম বলে যে, মুহাম্মদের পূর্বেই ইসলাম এর আবির্ভাব ঘটে এবং ইব্রাহিম এর মতো পূর্ববর্তী নবীদের কথা ইসলামে উল্লেখ করা হয়।[১১][১২][১৩][১৪] মুসলিমদের মতে, ইব্রাহিম মক্কায় কাবা এবং তার সাথে একটি উপাসনালয় তৈরি করেন, যা মুসলিমদের বিশ্বাস অনুযায়ী পৃথিবীর সর্বোপ্রথম মসজিদ।[১৫][১৬][১৭][১৮] অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ৭ শতকে মুহাম্মদের সময়ে ইসলামের আবির্ভাব হয় এবং তাই এই মসজিদটি সহ ইসলাম সম্পর্কিত সকল স্থাপনা সে সময়েই তৈরি হয়।[১৯] সেই ক্ষেত্রে, মসজিদ আস-সাহাবা মসজিদ বা মসজিদে কুবা হচ্ছে ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে পুরানো মসজিদ।[১৫][২০]
ইব্রাহিম এবং ইসমাইল এর সময়ে
কুরআনে উল্লেখ আছে যে, ইব্রাহিম এবং তার পুত্র, ইসমাইল মিলে একটি স্থাপনার ভিত্তি নির্মাণ করেন, যেটিকে বিশেষজ্ঞরা কাবা হিসেবে চিহ্নিত করেন। প্রভু ইব্রাহিমকে জমজম কুপের নিকটে আদমের তৈরি স্থাপনার সঠিক স্থানটি প্রদর্শন করেন এবং ইব্রাহিম ও ইসমাইল সেখানে কাবা নির্মাণের কাজ শুরু করেন।[২১] ইব্রাহিম এর কাবা নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে, এক ফেরেশতা তার কাছে কালো পাথরটি (একটি স্বর্গীয় পাথর) নিয়ে আসে, যা নিকটবর্তী আবু কুবাইস পাহাড়ে পতিত হয়েছিল বলে কথিত আছে। ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মতে, কালো পাথরই ইব্রাহিম এর প্রকৃত নির্মাণের একমাত্র অক্ষত অংশ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
কাবার পূর্ব কোণে কালো পাথরটি স্থাপন করার পর, ইব্রাহিম একটি বার্তা পান। এ বার্তায় মানুষ প্রভু তাকে মানবজাতির কাছে তীর্থযাত্রার স্থানটি ঘোষণা করতে বলেন, ফলে আরব এবং আরবের বাহিরে থেকে মানুষ উটের পিঠে বা পায়ে হেটে সেখানে করে।[২২]
মুহাম্মদ এর সময়ে
৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে, আরবে মুহাম্মদ এর বিজয়ী হয়ে ফিরে আসার পর, তিনি কাবা এবং তার আশেপাশে থাকা মুর্তিগুলো ভেঙে ফেলেন, যা কুরআন অনুযায়ী ইব্রাহিম তার মাতৃভূমিতে করেছিলেন।[২৩] এভাবে তিনি কাবার বহুঈশ্বরবাদী ব্যবহার বন্ধ করেন এবং সেখানে ও তার আশেপাশের স্থানে একেশ্বরবাদী শাসন করেন।[২৪][২৫][২৬][২৭]
উমাইয়াদ এর সময়
৬৯২ সালে, আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান এর অধীনে মসজিদটির গুরুত্বপূর্ণ মেরামত করা হয়। এই মেরামতের অংশ হিসেবে মসজিদের বাহিরের ছাদ আরো উঁচু করা হয় এবং ছাদটি সাজানো হয়।[২৮] এর পূর্বে মসজিদটি একটি ছোট একটি স্থান ছিল, যার কেন্দ্রে ছিল কাবা। ৮ শতকের মধ্যে প্রথম আল-ওয়ালিদ এর অধীনে মসজিদটির কাঠের স্তম্ভগুলোকে মার্বেলের স্তম্ভ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়, মসজিদের এলাকা বৃদ্ধি করা হয় এবং মিনার নির্মাণ করা হয়।[২৯][৩০] মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামের বিস্তারের কারণে তীর্থযাত্রীদের জন্য মসজিদটি পুনরায় সম্পূর্ণভাবে নির্মাণ করা প্রয়োজন হয়, যার অংশ হিসেবে আরো মার্বেল এবং আরো তিনটি মিনার যুক্ত করা হয়।
উসমানীয় সাম্রাজ্যে
১৫৭০ সালে, সুলতান দ্বিতীয় সেলিম তার প্রধান স্থপতি, মিমার সিনানকে মসজিদটির মেরামতের জন্য অর্থ প্রদান করেন। এই মেরামত কার্যক্রমে মসজিদটির সমতল ছাদটি গম্বুজ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয় এবং তার ভেতরে লীপি দিয়ে সাজানো হয় এবং সহায়ক স্তম্ভ যুক্ত করা হয়, যা বর্তমানে মসজিদটির সবচেয়ে পুরানো অংশ হিসেবে বিবেচিত। এগুলো স্থাপনাটির সবচেয়ে পুরানো অক্ষত বৈশিষ্ট্য হিসেবে অক্ষত আছে।
১৬২১ এবং ১৬২৯ সালের ভারী বৃষ্টিপাত এবং বন্যায় কাবার দেয়ালগুলো প্রচুর পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৬২৯ সালে, সুলতান চতুর্থ মুরাদ এর অধীনে মসজিদটির সংস্কার করা হয়।[৩১] এই সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে একটি নতুন পাথরের পথ এবং তিনটি মিনার নির্মাণ করা হয় এবং মার্বেলের মেঝেটি পুনর্নিমাণ করা হয়। ৩ শতাব্দি ধরে এটিই মসজিদটির অপরিবর্তিত অবস্থা ছিল।
১৮৫২ সালে, মুহি আল-দিন লারি এর অঙ্কিত “ফাতেহ আল হুমায়ন” এ মসজিদটি
১৮৫০ সালে, উসমানীয় সাম্রাজ্যে মসজিদটি
১৯১০ সালে, উসমানীয় সাম্রাজ্যে মসজিদটি
সৌদি আরবের সময়ে
প্রথম সৌদি প্রসারণ
১৯৫৫ এবং ১৯৭৩ সালে, সৌদি রাজাদের অধীনে মসজিদটির প্রথম গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করা হয়। এই সংস্কারের অংশ হিসেবে আরও চারটি মিনার যুক্ত হয়, ছাদ পুনরায় সংস্কার করা হয় এবং মেঝে কৃত্রিম পাথর এবং মার্বেল দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা হয়। আচ্ছাদন এবং সংযুক্তির মাধ্যমে মসজিদটিতে মাস’আ গ্যালারী অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এই সংস্কারের সময়ে উসামীয় সাম্রাজ্যের তৈরি অনেক ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য ধ্বংস করে ফেলা হয়।
১৯৭৯ সালের নভেম্বর মাসের ২০ তারিখে, কিছু চরমপন্থি জঙ্গি মসজিদটি দখল করে এবং সৌদি রাজবংশের পতনের দাবি করে। তারা মানুষকে জিন্মি করে এবং এ ঘটনায় শত শত মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। মসজিদটিতে সহিংসতা নিষিদ্ধ থাকায় এটি ইসলামিক বিশ্বের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল।
দ্বিতীয় সৌদি প্রসারণ
রাজা, ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ এর অধীনে দ্বিতীয় সৌদি প্রসারণে মসজিদটিতে আরেকটি শাখা এবং মসজিদটির বাহিরে প্রার্থনা করার স্থান যুক্ত করা হয়। নতুন শাখাটিও ছিল প্রার্থনার জন্য এবং সেটি রাজা ফাহাদের প্রবেশদ্বারের মধ্য দিয়ে যায়। ১৯৮২-১৯৮৮ সালের মধ্যে এই সংস্কার করা হয়।[৩২]
১৯৮৮-২০০৫ সালে, মসজিদটিতে আরো মিনার নির্মাণ করা হয় এবং মসজিদটির ভেতর ও সেটিকে ঘিরে আরো প্রার্থনার স্থান যুক্ত করা হয়, কিন্তু রাজার বাসস্থান একই সময়ে নির্মাণের কারণে মসজিদটি অবহেলার সম্মখীন হয়। মসজিদের এই সংস্কার আরাফাত, মিনা এবং মুজদালিফার মসজিদগুলোর সংস্কারের সাথে একই সময়ে সংঘটিত হয়। এই সংস্কারের অংশ হিসেবে আরো ১৮টি প্রবেশদ্বার নির্মান করা হয়। প্রতিটা প্রবেশদ্বারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থানে ৩টি গম্বুজ এবং ৫০০টি মার্বেলের স্তম্ভ যুক্ত করা হয়। এই সংস্কারের অংশ হিসেবে উত্তপ্ত মেঝে, নিষ্কাশন ব্যবস্থা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ এবং এসকেলেটর নির্মাণ করা হয়।
তৃতীয় সৌদি প্রসারণ
২০০৮ সালে, আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ এর অধীনে সোৗদি সরকার মসজিদটির প্রসারণের ঘোষণা দেয়, যে ঘোষণা অনুসারে, মসজিদটির উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমে ৩,০০,০০০ (৩,২০০,০০০ বর্গফুট) বর্গমিটার এলাকা বর্ধন করা হবে।[৩৩] সেই সময়ে মসজিদটি মোট ৩,৫৬,৮০০ (৩,৮৪১,৪০০ বর্গফুট) বর্গমিটার এলাকা জুড়ে ছিল। প্রকল্পটির জন্য ৪০ মিলিয়ন রিয়াল (১০.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বরাদ্দ করা হবে।[৩৪]
২০১১ সালের আগস্ট মাসে রাজা, আবদুল্লাহ এর অধীনে সৌদি সরকার প্রকল্পটির আরো বিস্তারিত ঘোষণা করে। এই ঘোষণা বিস্তারিত অনুযায়ী, মসজিদটি ৪০০,০০০ বর্গমিটার (৪,৩০০,০০০ বর্গফুট) এলাকা নিয়ে অবস্থান করবে এবং ১.২ মিলিয়ন প্রার্থনাকারী সেখানে প্রার্থনা করতে পারবে, স্থাপনাটির উত্তরদিকে বহু পর্যায়িক বিস্তার করা হবে, নতুন সিড়ি এবং টানেল, রাজা আবদুল্লাহ এর নামে একটি প্রবেশদ্বার এবং দুটি মিনার নির্মাণ করা হবে, ফলে মিনার সংখ্যা হবে মোট ১১টি। কাবা প্রদক্ষিণের স্থানটি আরো বর্ধিত করা হবে এবং সকল বদ্ধ স্থানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হবে। এই প্রসারণ বাস্তবায়িত হওয়ার পর, মসজিদের ধারণ ক্ষমতা ৭৭০,০০০ জন থেকে ২.৫ মিলিয়ন প্রার্থনাকারীতে পরিণত হবে।[৩৫][৩৬] ২০১৫ সালের, জুলাই মাসে পরবর্তী রাজা, সালমান বিন আবদুল আজিজ তার প্রসারণের অংশ হিসেবে ৪৫৬,০০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে (৪,৯১০,০০০) ৫টি বড় প্রকল্প শুরু করেন। সৌদি বিনলাদেন গ্রুপ প্রকল্পটি পরিচালনা করে।[৩৭] ২০১২ সালে, ৬০১ মিটার উঁচু মক্কা রোয়াল ক্লোক টাউয়ার এর সাথে আবরাজ আল-বাইত ভবনটি নির্মাণ করা হয়।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১১ তারিখে, মক্কায় একটি ক্রেন ভেঙে পরলে কমপক্ষে ১১১ জন নিহত এবং ৩৮৪ আহত হন।[৩৮][৩৯][৪০][৪১][৪২] এই দুর্ঘটনার পর নির্মাণ কাজটি বাতিল করা হয় এবং ২০১০ এর দশকের উচ্চ তেল সরবরাহের সময়ে অর্থনৈতিক কারণে নির্মাণ কাজটি স্থগিত থাকে। তবে ২ বছর পরে, ২০১৭ সালে নির্মাণ কাজটি আবার চালু করা হয়।
২০২০ সালের মার্চ মাসের ৫ তারিখ থেকে, মসজিদটি রাতে বন্ধ করে দেওয়া হতো এবং উম্মাহ বাতিল করে দেওয়া হয়। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের ৪ তারিখে, ধীরে ধীরে উম্মাহর প্রথম পর্যায় চালু করার মাধ্যমে উম্মাহ এর কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হয়, যাতে শুধু সৌদি আরবের নাগরিক এবং ৩০ শতাংশ প্রবাসীদের অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের দ্বিতীয় দ্বিতীয় সৌদি প্রসারণের পর রাজা আবদুল আজিজ প্রবেশপথ
মসজিদটির সাবেক এবংবর্তমান ইমাম, খতিব এবং মুয়াজ্জিনদের তালিকা
আবদুল্লাহ আল-খুলাফি (আরবি: عَبْد ٱلله ٱلْخُلَيْفِي), ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৯৩ সালে মৃত্যু পর্যন্ত ইমামের দায়িত্ব পালন করেন।
আহমেদ খতিব (আরবি: أَحْمَد خَطِيْب), ইন্দোনেশিয়ার ইসলাম বিশেষজ্ঞ
আলী বিন আবদুল্লাহ যাবের (আরবি: عَلِى بِن عَبْدُ ٱلله جَابِر),১৯৮১-১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ইমামের দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৮৬-১৯৮৯ সাল পর্যন্ত অতিথি ইমাম হিসেবে ছিলেন
উমর আল সুবায়িল (আরবি: عُمَر ٱلسُّبَيِّل), ১৯৯৩-২০০২ সাল পর্যন্ত ইমাম এবং খতিবের দায়িত্ব পালন করেন।
মুহাম্মদ আল-সুবায়িল (আরবি: مُحَمَّد ٱلسُّبَيِّل), ২০১৩ সালের মৃত্যুবরণ করেন।
আবদুল্লাহ আল-হারাজি (আরবি: عَبْد ٱلله الْحَرَازِي), সৌদি মসজিদ আল সুরা এর সাবেক সভাপতি।
আলী বিন আবদুর রহমান আল হুজায়ফী (আরবি: عَلِي بِن عَبْدُ ٱلرَّحۡمٰن ٱلْحُذَيْفِي), ১৯৮১, ১৯৮৫-১৯৮৬ এবং ১৯৮৮-১৯৯১ সাল পর্যন্ত অতিথি ইমাম ছিলেন এবং বর্তমানে মসজিদে নববী এর প্রধান ইমাম।২০০৫ ও ২০০৬ সালের রমজান মাসের তারাবিহ নামাযের ইমাম এবং বর্তমানে মসজিদে নববী এর প্রধান ইমাম
সালেহ ইবনে মুহাম্মদ আল বুদাইর (আরবি: صَلَاح ابْن مُحَمَّد ٱلْبُدَيْر), ২০০৫ (১৪২৬) ও ২০০৬ (১৮২৭) সালের রমজান মাসের তারাবিহ এর নামাযের ইমাম
সৌদ আশ-শুরাইম (আরবি: سعود بن ابراهيم بن محمد الشرين) ১৪১২ হিঃ (১৯৯২ ঈসায়ী) ইমাম ও খতিব নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৪৪৪ হিঃ (২০২২ ঈসায়ী) তিনি ইমামতির পদত্যাগ করেন। [৪৫]
৭)বান্দার বালিলাহ,১৪৩৪ (২০১৩) সালে, ইমাম এবং ১৪৪১ (২০১৯) সালে, খতিব হিসেবে নিযুক্ত হন।.[৪৭]
৮)ইয়াসির আদ-দৌসারি (আরবি: عَلِى بِن عَبْدُ ٱلله جَابِر) ১৪৩৬ হিঃ (২০১৫ ঈসায়ী) থেকে রমজান মসে তারাবীহর ইমাম ছিলেন। ১৪৪১ হিঃ (২০১৯ ঈসায়ী) থেকে ইমাম নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৪৪৪ হিঃ (২০২২ ঈসায়ী) খতিব নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৪৪৫ হিঃ (অক্টোবর ২০২৩) তাকে ইমামতি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২৬ শা'বান ১৪৪৫ হিঃ (০৬ মার্চ ২০২৪ ঈসায়ী) তাকে পুনরায় নিয়োগ দেয়া হয়।
৯)বদর আল তুর্কি (আরবি: بدر التركي) ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ (০৩ অক্টোবর ২০২৪) ইমাম নিযুক্ত হয়েছেন।[৩]
১০)ওয়ালিদ আশ-শামসান (আরবি: وليد الشمسان) ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিঃ (০৩ অক্টোবর ২০২৪) ইমাম নিযুক্ত হয়েছেন।[৩]
মসজিদটি জ্বিলহজ্জ মাসে মুসলিমদের হজ্জ এবং বছরের যেকোনো সময়ে উমরাহ পালনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান।[৪৯] হজ্জ ইসলামের একটি ভিত্তি এবং সামর্থ্যবানদের জন্য বাধ্যতামূলক। সম্প্রতিক সময়ে প্রতি বছর প্রায় ৫ মিলিয়ন মুসলিম হজ্জ পালন করতে আসেন।[৫০]
স্থাপত্য
মসজিদটির কেন্দ্রে রয়েছে কাবা নামক ঘনক আকারের একটি স্থাপনা, যা ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র স্থান।[৫১] এটি প্রার্থনা বা তীর্থযাত্রার মতো প্রথাগুলোর কেন্দ্রবিন্দু।[৫১][৫২][৫৩]
কাবার পূর্ব কোণে অবস্থিত কালো পাথরটি তীর্থযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[৫৪][৫৫]
মাকামে ইব্রাহিম হলো একটি পাথর যার উপর ইব্রাহিম এর পায়ের ছাপ রয়েছে। পাথরটি কাবার পাশে একটি কাঁচের গম্বুজে রাখা হয়েছে।[৫৬]
সাফা ও মারওয়া হলো দুটি পর্বত, যেখানে ইব্রাহিম এর স্ত্রী হাজেরা (হাগার) তাঁর শিশু সন্তান ইসমাইলের জন্য পানি অনুসন্ধান করতে দৌড়াদৌড়ি করেছিলেন। এ ঘটনাটি মুসলিমদের তীর্থযাত্রায় স্মরণ করা হয়।
জমজম কূপ হলো একটি পানির উৎস। কথিত আছে যে, হাজেরা সাফা ও মারওয়া পর্বতে পানি খুজে না পেলেে এই কুপটি অলৌকিভাবে তৈরি হয়।
মেঝের নিচে জমজম কূপের অবস্থান (বর্তমানে এর প্রবেশ পথ আবৃত্ত)
ঐতিহ্যবাহী স্থানের ধ্বংস
মক্কা এবং মসজিদটির প্রসারণ প্রকল্পে পুরানো ইসলামিক ঐতিহ্য ধ্বংস হয়ে গেছে বলে বিতর্ক রয়েছে। প্রসারণের জন্য স্থান বর্ধিত করার উদ্দেশ্যে অনেক প্রাচীন স্থাপনা ধ্বংস করা হয়, যার কয়েকটি ছিল কয়েক হাজার বছরের পুরানো। যেমণ:[৫৭][৫৮]
বায়তুল মাওলিদ, যেখানে মুহাম্মদ জন্মগ্রহণ করেন, তা ধ্বংস করে একটি গ্রন্থাগার হিসেবে পুনর্নিমাণ করা হয়েছে।
দার আল আরকাম, যে ইসলামী বিদ্যালয়ে মুহাম্মদ প্রথম পাঠদান করতেন।
↑General statistics of the Umrah season of 1436 A.H. until 24:00 hours, 28/09/1436 A.H. Total Number of the Mu`tamirs: 5,715,051"General statistics of the Umrah season of 1436 A.H."। The Ministry of Hajj, Kingdom of Saudi Arabia। ১৩ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।