তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যারয়ের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এবং বিদেশি আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ছিলেন তিনি।
মওদুদ আহমদ বার-অ্যাট-ল শেষ করে ৬০ এর দশকের মাঝামাঝি লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পরই হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তখন তিনি ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামের জুনিয়র হিসাবে কাজ শুরু করেন।
মওদুদ আহমদ স্কুলের ছাত্র থাকার সময় বাংলা ভাষা আন্দোলনের মিছিলে যোগ দিয়ে তিনি জেল খেটেছিলেন। তিনি ঢাকা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার সময় কলেজ ছাত্র সংসদের আপ্যায়ন সম্পাদক ছিলেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ফরমান উল্লাহ খানের প্রতিষ্ঠিত খেলাফত রব্বানীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশক্তির সাথে জড়িত হয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করার পর তিনি লন্ডনে বার-অ্যাট-ল পড়তে যান।
তিনি বার-অ্যাট-ল শেষ করে ৬০ এর দশকের মাঝামাঝি লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন। তখন ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমানছয় দফা ঘোষণা করলে তারা তার সমর্থনে সক্রিয়ভাবে মাঠে নামেন। একজন আইনজীবী এবং অরাজনৈতিক, অবৈতনিক সচিব হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে থেকেছেন। আইয়ুব খানের সাথে দুই দফা গোল টেবিল বৈঠকে তিনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
মওদুদ আহমদ মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত মুজিবনগর সরকারের পোস্টমাস্টার জেনারেল ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সংগঠকদেরও অন্যতম একজন ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে লন্ডনে অবস্থান করে তিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিদেশে জনমত সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ নামে একটি ইংরেজি মুখপত্র নিয়মিত প্রকাশ করার দায়িত্ব পালন করেন। তখন মুক্তিযুদ্ধসংক্রান্ত ডাকটিকিট প্রকাশ ও শুভেচ্ছামূল্য বাবদ অর্থ সংগ্রহ করে মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেন তিনি।
জনপ্রতিনিধি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট
মওদুদ আহমদকে ১৯৭৩ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের সময় বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার চর অভিযোগ এনে গ্রেফতার করা হয়। তার শ্বশুরপল্লীকবি জসীম উদ্দীনের একান্ত আবেদনে শেখ মুজিবুর তাকে মুক্তি দেন।
জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারে ১৫ এপ্রিল ১৯৭৯ থেকে ২ জানুয়ারি ১৯৮০ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিদ্যুৎ, পানি সম্পদ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সালে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও ইস্ট-ওয়েস্ট ইন্টারকালেক্টর প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে ১৯৮০ সালে জিয়াউর রহমান তাকে মন্ত্রীসভা থেকে অব্যাহতি দেন।
১৫ এপ্রিল ১৯৭৯ থেকে ২৪ মার্চ ১৯৮২ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় সংসদের উপনেতা ছিলেন।[৩][৪] ১৯৮২ সালে এরশাদের সামরিক শাসনামলে গুলশানের বাড়িসংক্রান্ত মামলায় মওদুদের বাড়ি বাজেয়াপ্ত হয়। তিনি ১২ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন।
তিনি ৯ জুলাই ১৯৮৬ থেকে ২৭ মার্চ ১৯৮৮ পর্যন্ত তিনি পুনরায় বাংলাদেশের উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নোয়াখালী-১ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৬] ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদে সংসদে তিনি সংসদ নেতাও ছিলেন। তিনি ২৭ মার্চ ১৯৮৮ থেকে ১২ আগস্ট ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকা হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
১২ আগস্ট ১৯৮৯ থেকে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়, বিশেষ কার্যাদি (কল্যাণ) মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের মুখে এরশাদ সরকারের পতন হলে তিনি জেলে যান।
Bangladesh: Constitutional Quest for Autonomy (১৯৭৬),
Bangladesh: Era of Sheikh Mujibur Rahman (১৯৮৩),
Democracy and the Challenge of Development – A Study of Politics and Military Interventions in Bangladesh (১৯৯৫),
South Asia Crisis of Development: The Case of Bangladesh (২০০২),
Bangladesh: A Study of the Democratic Regimes (২০১২),
Bangladesh: Emergency and the Aftermath 2007-2008 (২০১৪)
পারিবারিক জীবন
মওদুদ আহমদের স্ত্রী পল্লিকবিজসিমউদদীনের মেয়ে হাসনা জসীমউদদীন মওদুদঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং এরশাদ সরকারের সময়ে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। এই দম্পতির দুই ছেলে এবং এক মেয়ে। বড় ছেলে আসিফ মওদুদ ছোট বয়সেই মারা যান। দ্বিতীয় সন্তান আমান মওদুদ প্রতিবন্ধী ছিলেন এবং তিনিও ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মারা যান। একমাত্র মেয়ে ব্যারিস্টার আনা আসপিয়া মওদুদ স্বামীসহ থাকেননরওয়েতে।