১৯৪৭ সালে ভারত ভাগ ও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় পূর্ববঙ্গ থেকে হিন্দু বাঙালি বিতাড়িত হয়ে বর্তমান ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যে শরণার্থী হয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেন। এই শরণার্থীরা মূলত পশ্চিমবঙ্গ , ত্রিপুরা , মেঘালয় , আসাম , মধ্যপ্রদেশ , আন্দামান নিকোবর দ্বীপ পুঞ্জ ও ভারতের অন্যান্য স্থানে আশ্রয় গ্রহণ করেন। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে কিছু শরণার্থী ফিরে গেলেও বাকিরা ভারতেই থেকে যান।[ ১] [ ২] [ ৩] [ ৪]
পূর্ববঙ্গ থেকে আগত শরণার্থী পরিসংখ্যান বাংলা ভাগের পরবতী রাজনৈতিক সীমারেখা
শরণার্থীদের পূর্ববর্তী আবাসস্থল পূর্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পর অধুনা বাংলাদেশ) শরণার্থী সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ( ১৯৭১ সাল পর্যন্ত)[ ১] [ ৩] শরণার্থীদের আশ্রয়স্থল পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ শরণার্থীদের ধর্ম মূলত বাঙালি হিন্দু[ ১] [ ১] দেশ ত্যাগের কারণ মূলত দেশভাগ [ ১]
আগত শরণার্থীদের মধ্যে শতকরা ৯০ শতাংশ ছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী, বাকি কিছু মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ছিলেন।
বিভিন্ন রাজ্যে আগত শরণার্থীদের পরিসংখ্যান
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনের পর পশ্চিম পাকিস্তানের থেকে হিন্দুরা ভারতের পশ্চিমাংশে পাঞ্জাব প্রদেশে এবং পূর্ব পাকিস্তান থেকে অধিকাংশ হিন্দুরা এসে পশ্চিমবঙ্গে আসেন। এছাড়া ত্রিপুরা , মেঘালয় , আসাম , মধ্যপ্রদেশ , উত্তরপ্রদেশ , কর্ণাটক , বিহার ইত্যাদি রাজ্যে আশ্রয় নেন।
বিভিন্ন রাজ্যে আগত শরণার্থীদের পরিসংখ্যান[ ১]
পশ্চিমবঙ্গ (৭৩.০৯%)
ত্রিপুরা (১৩.৯৫%)
মেঘালয় (৬.৭৫%)
অসম (৩.৫১%)
মধ্যপ্রদেশ (২.২১%)
বিহার (০.৩৭%)
উত্তরপ্রদেশ (০.১০%)
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আগত শরণার্থীদের পরিসংখ্যান[ ১] [ ৫]
রাজ্য
শরণার্থী সংখ্যা
শতাংশ
পশ্চিমবঙ্গ
৭২,৩৫,৯১৬
৭৩.০৯
ত্রিপুরা
১৩,৮১,৬৪৯
১৩.৯৫
মেঘালয়
৬,৬৮,৯৮৬
৬.৭৫
অসম
৩,৪৭,৫৫৫
৩.৫১
মধ্যপ্রদেশ
২,১৯,২৯৮
২.২১
বিহার
৩৬,৭৩২
০.৩৭
উত্তরপ্রদেশ
১০,১৬৯
০.১০
মোট
৯৮,৯৯,৩০৫
১০০
ধর্ম ভিত্তিক পরিসংখ্যান
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনের পর আগত শরণার্থীদের মধ্যে মূলত হিন্দুরা ভারতে আসেন। হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের (মুসলিম বাদে) মোট জনসংখ্যা ৯৪.৮৯%।
শরণার্থীদের ধর্ম ভিত্তিক পরিসংখ্যান[ ১]
ধর্ম
জনসংখ্যা (লক্ষ)
শতাংশ
হিন্দু
৬৯.৭১
৬৬.০৩
মুসলিম
৫.৪১
৫.১২
অন্যান্য
৩০.৪৪
২৮.৮৬
মোট
১০৫.৫৬
১০০
অসমে জনবিন্যাসের পরিবর্তন
আগত শরণার্থীর পরিসংখ্যান
আসামে বিভিন্ন সময়ে আগত শরণার্থীর সংখ্যা[ ১]
সাল
শরণার্থী সংখ্যা
মন্তব্য
১৯৪৬
৬৮৬০
পূর্ব পাকিস্তান থেকে
১৯৪৭
৪২৩৪৬
পূর্ব পাকিস্তান থেকে
১৯৪৮
৪১৭৪০
পূর্ব পাকিস্তান থেকে
১৯৪৯
৩৩১৩৮
পূর্ব পাকিস্তান থেকে
১৯৫০
১৪৪৫১২
পূর্ব পাকিস্তান থেকে
১৯৫১
৩৪৭৯
পূর্ব পাকিস্তান থেকে
বিভিন্ন সময়ে
৬৪৭
পশ্চিম পাকিস্তান থেকে
বিভিন্ন সময়ে
১৭৩৩
এছাড়াও নানা অঞ্চল থেকে
মোট
২৭৪৪৫৫
বাংলাভাষী ও অসমীয়াভাষীর জনগণনা
জনগননা অনুসারে আসামে বাংলাভাষী ও অসমীয়াভাষীর তুলনা[ ১]
সাল
বাংলা
অসমীয়া
মন্তব্য
১৯১১
২৬.৯০
৩৫.৩১
১৯২১
২৭.৬০
৩৪.৪৩
১৯৩১
২৭.৫৬
৩২.৩২
১৯৫১
১৯.৬৮
৫৬.২৯
১৯৬১
১৭.৬০
৫৭.১৪
১৯৭১
১৯.৭১
৬০.৮৯
জনগণনা অনুযায়ী বাঙালি ও অসমীয়া পরিসংখ্যান[ ১]
জনগণনা
বাঙালি বা বাংলাভাষী
অসমীয়া
১৯১১
১৯২১
১৯৩১
১৯৫১
১৯৬১
১৯৭১
ত্রিপুরার জনবিন্যসের পরিবর্তন
ত্রিপুরার আগত শরণার্থীর সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গের পরই। ত্রিপুরায় আগত শরনার্থীদের দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।
১৯৪৭ - ১৯৪৯ (ভারত স্বাধীনের পর কিন্তু ত্রিপুরা ভারতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আগে)
১৯৪৯ - পরবর্তী (ত্রিপুরা ভারতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর)
১৯৪৭ - ১৯৪৯ সালের মধ্যে শরণার্থী পরিসংখ্যান[ ৬]
সাল
শরণার্থী সংখ্যা
১৯৪৭
৮,১২৪
১৯৪৮
৯,৫৫৪
১৯৪৯
১০,৫৭৫
১৯৪৭ - ১৯৪৯ সালের মধ্যে শরণার্থী পরিসংখ্যান
বছর
শরণার্থী সংখ্যা
১৯৪৭
৮,১২৪
১৯৪৮
৯,৫৫৪
১৯৪৯
১০,৫৭৫
অর্থ বন্টন
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনের পর দ্বিজাতি তত্ত্ব অনুসারে পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানের মূলত হিন্দুরা ভারতবর্ষে চলে আসেন। ভারত সরকার শরণার্থীদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করে।
তথ্যসূত্র
আরো তথ্যসূত্র[ ৭] [ ৮]