বার্নার্ডিন অ্যান মোবোলাজি এভারিস্টোওবিইFRSLএফআরএসএ (ইংরেজি: Bernardine Anne Mobolaji Evaristo; জন্ম: ২৮ মে ১৯৫৯) একজন ব্রিটিশ লেখিকা ও শিক্ষায়তনিক ব্যক্তি। তার রচিত উপন্যাস গার্ল, ওম্যান, আদার[১] ২০১৯ সালে মার্গারেট অ্যাটউডেরদ্য টেস্টামেন্টস-এর সাথে যৌথভাবে বুকার পুরস্কার অর্জন করে, এর মধ্য দিয়ে তিনি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী হিসেবে বুকার পুরস্কার অর্জন করেন।[২][৩][৪][৫][৬] এভারিস্টো লন্ডনের ব্রুনেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃজনশীল লেখনীর অধ্যাপক এবং রয়্যাল সোসাইটি অব লিটারেচারের সভাপতি, তিনি ১৮২০ সালে এটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দ্বিতীয় নারী ও প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি হিসেবে এই দায়িত্ব পালন করেছেন।
এভারিস্টো অসংখ্য পুরস্কার, সম্মাননা, ফেলোশিপ, মনোনয়ন ও স্বীকৃতি স্মারক লাভ করেছেন। তিনি সেন্ট অ্যান্স কলেজ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আজীবন সম্মানিত ফেলো ও আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের আন্তর্জাতিক সম্মানিত সদস্য। ২০২১ সালে তিনি রোজ ব্রাফোর্ড কলেজ অব থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্সের সভাপতি হন। এভারিস্টো রয়্যাল সোসাইটি অব লিটারেচারের সহ-সভাপতি ছিলেন ও ২০২০ সালে তিনি আজীবন সহ-সভাপতি হন এবং ২০২২ থেকে ২০২৬ সালের জন্য এর সভাপতি হন।[৭] সাহিত্যে তার অবদানের জন্য ২০০৯ সালে রানীর জন্মদিন সম্মাননায় তিনি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ারের সদস্য এবং ২০২০ সালে রানীর জন্মদিন সম্মাননায় তিনি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ারের অফিসার খেতাবে ভূষিত হন।[৮]
প্রারম্ভিক জীবন
এভারিস্টো ১৯৫৯ সালের ২৮শে মে দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনের এলথামে জন্মগ্রহণ করেন। বাপ্তিস্ম করার পর তার নাম রাখা হয় বার্নার্ডিন অ্যান মোবোলাজি এভারিস্টো।[৯] এভারিস্টো তার আট ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। তার মাতা জ্যাকলিন এম. ব্রিঙ্কওয়ার্থ একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন[১০] এবং পিতা জুলিয়াস তাইয়ো বায়োমি এভারিস্টো (১৯২৭-২০০১), ড্যানি নামে পরিচিত ছিলেন। তার মাতা ইংরেজ ও তার পূর্বপুরুষগণ ইংরেজ, আইরিশ ও জার্মান ছিলেন।[১১] তার পিতা নাইজেরীয়, যিনি ১৯৪৯ সালে ব্রিটেনে অভিবাসিত হয়ে আসেন এবং তিনি গ্রিনিচ বরার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ কাউন্সিলর ছিলেন।[১২] তার পিতামহ গ্রেগরিও বাঙ্কোল এভারিস্টো (মৃত্যু ১৯২৭) ইয়োরুবা আগুদা ছিলেন, যিনি নৌপথে ব্রাজিল থেকে নাইজেরিয়া এসেছিলেন। তিনি একজন কাস্টমস কর্মকর্তা ছিলেন। তার পিতামহী জেনোবিয়া এভারিস্টো (জন্ম: সোয়েমিমা, মৃত্যু ১৯৬৭) নাইজেরিয়ার আবেওকুটার বাসিন্দা ছিলেন।[১৩][১৪][১৫][১৬]
লেখনী
এভারিস্টোর প্রকাশিত প্রথম বই হল কবিতার সংকলন আইল্যান্ড অব আব্রাহাম (১৯৯৪)।[১৭] তিনি দুটি অ-কল্পকাহিনী ও আটটি কল্পকাহিনী ও কাব্যিক কল্পকাহিনীর বই লিখেছেন, যেগুলোতে আফ্রিকান অভিবাসীদের চিত্রায়ন দেখা যায়।[১৮] তাকে গল্পের শৈলী ও বর্ণনার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিরীক্ষণ করতে দেখা যায়, যেমন তিনি বর্তমানের সাথে অতীত, কবিতার সাথে কল্পকাহিনী, দূরকল্পনার সাথে প্রকৃত এবং ব্যতিক্রমী বাস্তবতার সাথে বাস্তবতার মিশ্রণ করে থাকেন (তার ২০০৮ সালের ব্লন্ড রুটস উপন্যাসে)।[১৯] তার কাব্যিক উপন্যাস দি এম্পেরার্স বেব এক কৃষ্ণাঙ্গ কিশোরীকে নিয়ে, যার পিতামাতা নুবিয়া থেকে ২০০০ সাল পূর্বে রোমান লন্ডনে এসেছিলেন।[২০] বইটি ২০০০ সালে আর্টস কাউন্সিল ইংল্যান্ড রাইটার্স পুরস্কার, ২০০৩ সালে ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট অব সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড দ্য আর্টস (নেস্টা) ফেলোশিপ পুরস্কার এবং দ্য টাইমস (ইউকে) "দশকের ১০০ সেরা বই"-এর একটি নির্বাচিত হয়।[২১] বইটি ২০১৩ সালে বিবিসি রেডিও ৪-এর বেতার নাটক হিসেবে উপযোগ করা হয়।[২২] এভারিস্টোর চতুর্থ বই সোল টুরিস্টস (২০০৫) ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচে ভ্রমণরত এক দম্পতির গল্প বর্ণিত হয়েছে, যাতে ইউরোপীয় ইতিহাস থেকে নেওয়া সত্যিকারের কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিদের প্রেতাত্মার বর্ণনা রয়েছে।[২৩]
ব্যক্তিগত জীবন
এভারিস্টো লেখক ডেভিড শ্যাননকে বিয়ে করেন। ২০০৬ সালে তাদের পরিচয় হয়। শ্যাননের প্রথম উপন্যাস ২০২১ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয়।[২৪][২৫][২৬]
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
১৯৯৯: লারা-এর জন্য এমা শ্রেষ্ঠ বই পুরস্কার
২০০০: দ্য এম্পেরার্স বেব-এর জন্য আর্টস কাউন্সিল ইংল্যান্ড রাইটার্স পুরস্কার ২০০০
২০০২: ইউইএ রাইটিং ফেলো, ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
২০০৩: ন্যাশনাল এনডাউমেন্ট অব সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড দ্য আর্টস (নেস্টা) ফেলোশিপ পুরস্কার