সিরামিক শিল্প বাংলাদেশের একটি ক্রমবর্ধমান উৎপাদন খাত। প্রথম সিরামিক শিল্প কারাখানা ১৯৫০এর দশকে স্থাপিত হয় এবং সেসময় থেকেই এই শিল্পের যাত্রা শুরু। প্রধানত খাবার থালাবাসন, টয়লেট সামগ্রী এবং টাইলস তৈরি করাই এই শিল্পের কাজ। ২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষ এই শিল্পের সাথে যুক্ত। ২০১৩-১৪ অর্থবর্ষের প্রথম নয়মাসে দেশের ৮০% চাহিদা মিটিয়ে, বিদেশে প্রায় ৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সিরামিক সামগ্রী বাইরে রপ্তানি করা হয়। ইউরোপ, আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে প্রধানত সিরামিক সামগ্রী রপ্তানী করা হয়। [১][২]
ইতিহাস
প্রথম সিরামিক প্ল্যান্ট ১৯৫৮ সালে বগুড়াতে স্থাপন করা হয়। তাজমা সিরামিক ইন্ড্রাস্টি নামে এই প্ল্যান্টটি ছিল ছোট এবং চীনা মাটির বাসন-কোসন তৈরি করত।
পিপলস সিরামিক ইন্ডাস্ট্রি, যার পূর্বের নাম পাকিস্তান সিরামিক ইন্ডাস্ট্রি ১৯৬৬ সালে উৎপাদন শুরু করে।
বেঙ্গল ফাইন সিরামিক লিমিটেড বাংলাদেশের প্রথম পোড়ামাটির তৈরি পণ্যের উৎপাদক। এই কোম্পানি ১৯৮৬ সালে চালু হয়।
মুন্নু সিরামিক বাংলাদেশের বৃহত্তম কারখানাগুলোর মধ্যে একটি, যেটি ১৯৮৫ সালে চালু হয়। প্রথম দিকে এই কোম্পানি চিনামাটির বাসন তৈরি করলেও, পরবর্তীতে সকল ধরনের সিরামিক পণ্য উৎপাদন করে।
শাইনপুকুর সিরামিক ১৯৯৭ সালে স্থাপিত হয়। দেশের প্রয়োজনের প্রায় শতকরা ৬০ ভাগ পণ্য এই কোম্পানি উতপাদন করে।[৩]
আরএকে সিরামিকস ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০০০ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে।[৪]
কাঁচামালের উৎস
ময়মনসিংহ, সিলেট ও নেত্রকোণায় কিছু চীনামাটির সন্ধান পাওয়া গেছে। ১৯৫৭[৩] সালে ময়মনসিংহের বিজয়পুরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চীনামাটির খনি পাওয়া যায়। সিরামিক প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো চীন, ভারত, নিউজিল্যান্ড ও জার্মানি থেকেও কাঁচামাল আমদানি করে।[৫]
বৈদেশিক বিনিয়োগ
সিরামিক শিল্প খাত বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করেছে। বিনিয়োগ প্রধানত চীন ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে হয়েছে। প্রধান যৌথ উদ্যোগ অংশীদারদের মধ্যে আছে আরএকে সিরামিকস, ফু ওয়াং ও চীন-বাংলা।[৬] যাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংযুক্ত আরব আমিরাতের আরএকে, যেটি দেশের শতকার ৮০ ভাগ টয়লেট সামগ্রীর প্রয়োজন মেটায়।[৭]