প্রদীপ ঘোষ (১৫ আগস্ট ১৯৪২ — ১৬ অক্টোবর ২০২০) ছিলেন বিশিষ্ট বাঙালি আবৃত্তিকার ও খ্যাতনামা বাচিক শিল্পী। [১]
তার পিতা চিন্ময় জীবন ঘোষও প্রখ্যাত বাচিক শিল্পী ছিলেন। অসামান্য মন্ত্রিত কণ্ঠস্বরে স্পষ্ট উচ্চারণে নিখুঁত স্বরক্ষেপণের গুণে ষাটের দশকের বাংলা শিল্প ও সংস্কৃতির জগতে কিংবদন্তি আবৃত্তিকার ছিলেন। অসম্ভব স্মৃতিশক্তির অধিকারী প্রদীপ তিন বৎসর বয়স থেকেই পিতার কাছে আবৃত্তি শেখেন।
ছোটবেলা থেকেই বাবার প্রতিভায় বিস্মৃত প্রদীপের আবৃত্তি বিষয়ে প্রবল আগ্রহ জন্মে। বাচিক শিল্প ও আবৃত্তিকে তিনি জনপ্রিয় করে তুলেছেন। কাজী নজরুল ইসলামের পুত্র প্রখ্যাত আবৃত্তিকার কাজী সব্যসাচীর সাথে তার গভীর বন্ধুত্ব ছিল। দুজনে এক সঙ্গে একই মঞ্চে অংশগ্রহণ করেছেন। ছয়ের দশকের শেষের দিকে কাজী সব্যসাচী এবং প্রদীপ ঘোষ দুজনে মিলে একই মঞ্চে একই কবিতা ভাগাভাগি করে বলতেন। প্রদীপ ঘোষ তার নিজস্ব আঙ্গিকে আবৃত্তির গুণে স্মরণীয় হয়ে আছেন। সিডি ও ক্যাসেটে তার বহু আবৃত্তি রেকর্ড হয়েছে। কাজী সব্যসাচীর পরে তার কণ্ঠে 'কামাল পাশা' বা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'দেবতার গ্রাস' জনপ্রিয়তার চূড়া স্পর্শ করেছিল। [৩] (কমল পাশা - কাজী নজরুল ইসলামের লেখা একটি কবিতা) এবং দেতার গ্রাস (দেবোতর গ্রাস - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি কবিতা)[৪][৫] তিনি 'বাণীচক্র' এবং 'সুরভি সংগীত পরিষদ' সহ বহু সাংস্কৃতিক সংস্থার সাথে যুক্ত ছিলেন। আবৃত্তি শৈলীর উপর তিনি বইও রচনা করেছেন।[৬] উল্লেখযোগ্য বই হল -
আবৃত্তির কবিতা,কবিতার আবৃত্তি
লোকসংস্কৃতির বিপন্নতা ও অন্যান্য
পুরস্কার
২০১৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের 'কাজী সব্যসাচী' পুরস্কার লাভ করেন। [৭][৮]
অটোগ্রাফ
তিনি শৈল্পিক পদ্ধতিতে অটোগ্রাফ দেওয়ার জন্য পরিচিত ছিলেন।
মৃত্যু
প্রদীপ ঘোষ কলকাতায় তার যোধপুর পার্কের বাসভবনে ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ১৬ ই অক্টোবর প্রয়াত হন। তিনি বিগত কয়েকদিন উপসর্গহীন করোনায় ভুগছিলেন, মৃত্যুর পর নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তার স্ত্রী রবিচন্দ্রিমা ঘোষ আগেই প্রয়াত হয়েছেন।[৬] তিনি কন্যা প্রীতি ঘোষ এবং গুণ্মুগ্ধ অসংখ্য শিষ্য ও শিক্ষার্থী মাধ্যমে রেখে গেছেন।[৯]