প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ

প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ
প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ যেটি ১৯৫২ সালের তৈরি করা হয়েছিল কিন্তু পাকিস্তান পুলিশ ও সেনাবাহিনী সেটা ভেঙে ফেলে
মানচিত্র
সাধারণ তথ্যাবলী
অবস্থাসম্পূর্ণ
ধরনস্তম্ভ
স্থাপত্যশৈলীআধুনিক
অবস্থানরাজশাহী, বাংলাদেশ
ঠিকানারাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাস
স্থানাঙ্ক২৪°২১′৫৭″ উত্তর ৮৮°৩৫′৩৯″ পূর্ব / ২৪.৩৬৫৯০৭° উত্তর ৮৮.৫৯৪০৬৪° পূর্ব / 24.365907; 88.594064
সম্পূর্ণ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২
সংস্কার২০১৫
স্বত্বাধিকারীরাজশাহী সিটি কর্পোরেশন
কারিগরী বিবরণ
উপাদানইট, কাঁদামাটি, বাঁশ
পরিচিতিবাংলাদেশের প্রথম শহীদ মিনার

প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ বা প্রথম শহীদ মিনার ঢাকায় মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদদের স্মৃতি রক্ষার জন্য নির্মিত প্রথম স্মৃতি স্তম্ভ।[] ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজশাহী কলেজ মুসলিম হোস্টেলের এফ ব্লকের সামনে নির্মিত এই স্মৃতিস্তম্ভটি ২২ ফেব্রুয়ারি পুলিশ প্রশাসন দ্বারা ভেঙে ফেলা হয়।[]

ইতিহাস

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজশাহী কলেজের মুসলিম হোস্টেলের একটি কক্ষে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভা থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে শহীদদের স্মরণে হোস্টেল প্রাঙ্গণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হবে। বৈঠকে রাজশাহী মেডিক্যাল স্কুলের এস.এম.এ গাফ্ফারকে সভাপতি এবং রাজশাহী কলেজের হাবিবুর রহমান ও গোলাম আরিফ টিপুকে যুগ্ম-সম্পাদক করে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।[] পরিষদের সিদ্ধান্তে ওই রাতেই ছাত্ররা রাজশাহী কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গনে ইট, কাঁদামাটি ও বাঁশ দিয়ে ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ তৈরী করে। রাজশাহী কলেজ হোস্টেলের জনাদশেকের সঙ্গে আরও জনাদশেক মিলে রাত সাড়ে ৯টায় শুরু হলো শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজ। অদক্ষ হাতে রাত ১২টায় নির্মাণ হলো দেশের প্রথম শহীদ মিনার। এর গায়ে লেখা হলো 'শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ'। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে ওই শহীদ স্মৃতি স্তম্ভের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। অবশ্য কয়েক ঘণ্টা পরই তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের পুলিশ সেটি ভেঙ্গে দেয়।[]

১৯৫২ সালের সে সময়কার পরিস্থিতিতে ঢাকা শহরে কোনো শহীদ মিনার তৈরি করার পরিবেশ ছিল না। এই শহীদ মিনার তৈরির আগে দেশের কোথাও এ ধরনের কোনো স্মৃতিস্তম্ভ বা শহীদ মিনার তৈরি করা হয়নি।[]

পুনঃনির্মাণ

রাজশাহী কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে মুসলিম হোস্টেলের গেটের কাছে ২০০৯ সালে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির সেই স্থানটিতে একটি ফলক নির্মাণ করা হয়। ফলকটি উন্মোচন করেন তৎকালীন মেয়র এবং জাতীয় নেতা এ. এইচ. এম. কামারুজ্জামান হেনার ছেলে এ. এইচ. এম. খায়রুজ্জামান লিটন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে এই স্থানটিতে ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ২০১৫ সালে।[]

নির্মিতব্য শহীদ মিনারটির নকশায় মোট তিনটি পিলার আছে। বড় পিলারটির উচ্চতা রাখা হয় ৫৫ ফুট যা সিলভার রং এর। মধ্যম পিলারের উচ্চতা ৪০ ফুট এবং ছোট পিলারের উচ্চতা হবে ৩০ ফুট। মধ্যম ও ছোট পিলার দুটি পোড়ামাটির রং এ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মিনারের বেদীতে প্রথম শহীদ মিনার তৈরির ইতিহাস ও ঐতিহ্য লিপিবদ্ধ থাকবে।

চিত্রশালা

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. হাবিব, সৌরভ (১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। "রাজশাহীতেই হয়েছিল প্রথম শহীদ মিনার"দৈনিক সমকাল। ১৩৬ তেজগাঁও শিল্প এলাকা ঢাকা - ১২০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-২৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "রাজশাহীতে নির্মিত দেশের প্রথম শহীদ মিনারের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি"মানবজমিন। জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫: মিডিয়া প্রিন্টার্স। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। ২০২২-০২-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-২৪ 
  3. "রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি রাজশাহীতে নির্মিত দেশের প্রথম শহীদ মিনারের"ভোরের কাগজ। মালিবাগ, ঢাকা: মিডিয়াসিন লি:। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। ২০১৬-০৮-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-২৪ 
  4. ইসলাম, উদিসা (ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬)। "প্রথম শহীদ মিনার ঢাকায় নাকি রাজশাহীতে!"বাংলা ট্রিবিউন। এফ আর টাওয়ার, ৮/সি পান্থপথ, শুক্রাবাদ, ঢাকা-১২০৭। ২০১৬-০২-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-২৪ 
  5. রনি, আবু সাঈদ (২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩)। "দেশের 'প্রথম' শহীদ মিনারের স্বীকৃতি মিলবে কবে?"ঢাকা মেইল। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  6. "অবশেষে রাজশাহীতে নির্মিত হচ্ছে স্থায়ী শহীদ মিনার"মানবকণ্ঠ। রোড -১৩৮, প্লট - ১/এ, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২: মানবকণ্ঠ। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!