নাগামি বা নাগা ভাষা নাগাল্যান্ডে প্ৰচলিত একটা মিশ্ৰ ভাষা। অসমীয়া ভাষাকে ভিত্তি করে এর সৃষ্টি হয়েছে। তার সাথে বাংলা, হিন্দী, বিভিন্ন নাগা ভাষা এবং অন্যান্য ভাষারো কিছু মিল দেখা যায়।[১] পাঁচ লাখেরও বেশি নাগাল্যাণ্ডের বিভিন্ন ভাষার মানুষ একে যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে ।[১] অল্ ইণ্ডিয়া রেডিও 'স্টেশনের কর্মীরা "নাগামি" (নাগা+অসমীয়া) শব্দটির উদ্ভাবন করেন।[২] যদিও নাগাল্যান্ড সরকার ইংরেজি ভাষাকে রাজ্যভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, প্ৰশাসনিক কাজ-কর্ম, বিদ্যালয়, প্ৰচারের মাধ্যম ইত্যাদিতে নাগামি ভাষা সমানেই ব্যবহৃত হয়।
সৃষ্টি এবং বিকাশ
১৯৬৩ সালে পৃথক রাজ্য রুপে স্বীকৃতি পাওয়ার পূৰ্বে নাগাল্যাণ্ড আসাম-এর একটি জেলা ছিল। আহোম শাসনামলে অসম এবং নাগাল্যান্ড অঞ্চলের মানুষের সংস্পৰ্শ ঘটেছিল। এই সমগ্ৰ অঞ্চলের একটা মান ভাষার প্ৰয়োজনে নাগামি গড়ে উঠে বলে ভাবা হয়।[৩] কারো কারো মতে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে অসমীয়া ভাষা বা বাংলা ভাষা আয়ত্ত করতে কষ্ঠসাধ্য হওয়ার ফলে নাগামি ভাষার উদ্ভব হতে পারে ।[৩] ১৯৩৬ সালে নাগামি ভাষার আদর্শ রূপ গড়ে উঠার প্ৰমাণ পাওয়া যায়।[৩]
নাগামিতে ১৮টি উপভাষা দেখতে পাওয়া যায়।[৩] সেগুলোর শব্দাবলী একই, কিন্তু রূপ-বিন্যাস ভিন্ন ভিন্ন। সেগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:
- দক্ষিণ: আংগামি, কছারী, জেমি, লিয়াংমেই, রংমেই, রেংমা, চেমা, খেজা, চক্ৰি, মাঅ'।
- উত্তর: কন্যাক, চাংটাম, ফোম, চাং এবং খিয়াংগান।
- মধ্য: আঅ', লোথা, য়িম্চুংগার।
ভাষাতত্ব
নাগামি এ দুটা ফলা, দুটা কাল, তিনিটা দৃশ্যগত বৈশিষ্ট আছে, কোনো পুরুষ নাই। এর বেশিরভাগ শব্দের অসমীয়া ভাষার সাথে মিল আছে, কিন্তু ধ্বন্নিসমূহের নাগা ভাষার সাথে মিল বেশি। সংস্কৃত তৎসম শব্দের সরলীকরণ, শব্দের অসম্পূৰ্ণ উচ্চারণ ইত্যাদি বৈশিষ্টও এতে দেখতে পাওয়া যায়।[২][৩]
তথ্যসূত্ৰ
বহিঃসংযোগ