নলিনীকান্ত ঘোষ (অক্টোবর ১৮৯২ - ২২ এপ্রিল ১৯৭৫ ) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী। অনুশীলন সমিতির সদস্য। স্বাধীনতার পর ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে দেশসেবায় ব্রতী ছিলেন। [১]
জীবনী
নলিনীকান্ত ঘোষ ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার তৎকালীন ঢাকা জেলার আড়াই হাজারী জাওগড়া গ্রামে। পিতা জয়চাঁদ ঘোষ। গ্রামের স্কুলে পড়ার সময় সংস্কৃত ভাষার প্রধান পণ্ডিত সতীশচন্দ্র কাব্যতীর্থের অনুপ্রেরণায় নলিনীকান্ত পড়াশোনার পাশাপাশি অনুশীলন সমিতিতে যোগ দেন। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক পাশ করেন এবং চিকিৎসাশাস্ত্র পাঠের জন্য তৎকালীন ঢাকার মিডফোর্ড মেডিক্যাল স্কুলে ভর্তি হন। তিন বছর পড়াশোনার পর ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে দলের নির্দেশে বৈপ্লবিক কাজের জন্য তাকে পড়াশোনা ছেড়ে চট্টগ্রাম যেতে হয়। কিছুদিন সেখানে অবস্থানের পর উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জে দলের বৈপ্লবিক ক্রিয়াকলাপের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তিনি রাজেনবাবু ছদ্মনামে পূর্ব বাংলার সংগঠনের সঙ্গে সর্বভারতীয় সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। বৈপ্লবিক কর্মের জন্য তাকে গোপন আস্তানায় যেতে হয়। আত্মগোপনকালে একবার গ্রেফতার হয়ে ব্রিটিশ আমলে কলকাতার কুখ্যাত ডালান্দা হাউসে (অধুনা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে) আটক থাকেন ও নির্যাতন সহ্য করেন। পরে ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের ২৩ ডিসেম্বর কোনক্রমে পালিয়ে গৌহাটির গোপন আস্তানায় চলে যান। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দের ৯ জানুয়ারি তাদের সেই আস্তানা ঘিরে ফেললে পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াই করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। কিন্তু দুদিন পর ধরা পড়েন। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি লাভের পর তিনি জাতীয় কংগ্রেসের মাধ্যমে দেশসেবায় আত্মনিয়োগ করেন। কিছুদিন তিনি ঢাকা জেলা কংগ্রেস কমিটির সভাপতি পদে ছিলেন।
১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ২২ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়।
তথ্যসূত্র
- ↑ সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ৩৪৭, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬