দেওসাই জাতীয় উদ্যান (উর্দু: دیوسائی نیشنل پارک) পাকিস্তানের গিলগিট বেলিস্তান জেলার স্কারদুতে অবস্থিত একটি উদ্যান।[১]
উৎপত্তি
দেওসাই (উর্দু: دیوسای) উর্দুতে দৈত্যদের ভূমি। বালতি সম্প্রদায়ের মানুষ এটিকে (Balti: غبیارسہ) জায়গাটি 'ঘবিয়ার' বলে সম্বোধন করেন, যার অর্থ হল 'গ্রীষ্মের স্থান'। কারণ এটি শুধুমাত্র গ্রীষ্মকালেই প্রবেশযোগ্য।
ভৌগোলিক অবস্থান
দেওসাই জাতীয় উদ্যান খারামং, এস্টোরের এবং গিলগিত বেলুচিস্তানের স্কারদুয়ে মধ্যে অবস্থিত। উদ্যানটি সমুদ্র সমতল হতে এর গড় উচ্চতা ৪,১১৪ মিটার (১৩,৪৯৭ ফু) বিদ্যমান। যার ফলে দেওসাই জাতীয় উদ্যান বিশ্বের উচ্চতম একটি মালভুমি হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে। উদ্যানটি ৩,০০০ বর্গকিলোমিটার (১,২০০ মা২) এলাকাজুড়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এটি সমৃদ্ধ উদ্ভিদরাজির জন্য সুপরিচিত এবং কারাকোরাম-পশ্চিম তিব্বত মালভূমি অ্যালপিইন স্টেপ ইকো অঞ্চলের প্রাণী উল্লেখযোগ্য। বসন্তকালে এটি বাকানো বন্যফুল এবং বিভিন্ন প্রকার প্রজাপতি দিয়ে আচ্ছাদিত থাকে। তিব্বতের চাঁং থং মালভূমির পরে দেওশাই জাতীয় উদ্যান দ্বিতীয় উচ্চতম মালভূমি।
অঞ্চলটির পর্যটন পথ
দেওসাইয়ের উত্তরে স্কারদু জেলা, দক্ষিণ-পূর্বে গালতারির খার্মাঙ্গ জেলা এবং পশ্চিম এস্টোর জেলা অবস্থিত। স্কারদু শহরটি প্রায় ৩০ কিলোমিটার দৃরে দেওসাই অবস্থিত এবং এটি দেওশাই পরিদর্শনের জন্য সবচেয়ে সহজ ছোট পথ। বেশিরভাগ বিদেশী ভ্রমনার্থীরা স্কারদুর মাধ্যমে দেওসাই ভ্রমণ করে থাকেন। সাদাপাড়া স্কারদু দিয়ে দেওসাই শীর্ষে পৌছানোর জন্য ১ ঘণ্টা সময় লাগে। চিলিমের মাধ্যমে অষ্টোর উপত্যকায় পৌছানোর আরো আরেকটি বিকল্প পথ। এটি শিলা উপত্যকা থেকেও প্রবেশযোগ্য। গালতারী সম্প্রদায়ের লোকজন দেওসাই এর মাধ্যমে পর্যটন কেন্দ্রটি ভ্রমণ করে থাকেন। স্কারদু উপত্যকায় বুরগি লা সক রাস্তাটি হলো আরো একটি দেওসাই পৌছানোর বিকল্প পথ।[২][৩][৪]
ভূতত্ত্ব ও মৃত্তিকা
এই এলাকার মাটি গুরুতরভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত বা ঝরঝরে একটি প্রকৃতিক জারক ও বিভিন্ন উপাদান এবং মাপ বৃত্তাকার এবং পাথর সঙ্গে মিশ্রিত রয়েছে। এছাড়া পর্বতগুলি মাটির মধ্যে সমতল এলাকায় জমির গাছপালা সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ততা রয়েছে।
প্রাণিকুল ও উদ্ভিদকুল
দেওশাই জাতীয় উদ্যানটি মূলত হিমালয়ের বাদামী ভালুকগুলি বাচানোর জন্য এবং তাদের বাসস্থানের জন্য ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল। গত দশকের মাঝামাঝি সময়ে, অঞ্চলটির বাদামী ভাল্লুকগুলিকে বাচিয়ে থাকার তাগিদে পাকিস্তান সরকার বেশ কয়েকটি কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ১৯৯৩ সালে হিমালয় বিশ্বপ্রাণী প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক পরিবেশগত উদ্বেগগুলির কথা বিবেচনা করে উল্লেখযোগ্য আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে উদ্যানটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃর্ভাগ্যক্রমে বাদামী ভাল্লুকগুলি এখনও পর্যন্ত হুমকিরমুখে জীবনযাপন করছে। এছাড়াও দেওশাই সমভূমিকে হিমালায় আইবেক্স, লাল শিয়াল, গোল্ডেন মরমোট যা স্থানীয়ভাবে ফিয়া নামে ডাকা হয়, ধূসর নেকড়ে, উরিল লাদাখ, তুষার চিতাবাঘ, ১২৪টির উপর বাসিন্দা এবং অভিবাসী পাখি এর আবাসভূমি বলে উল্লেখ করা হয়।
চিত্রমালা
-
দেওশাই জাতীয় উদ্যান এর পর্যটন তথ্য মানচিত্র
-
গ্রিন প্লেইন, পর্বতমালা এবং পানির মিশ্রণ। কখনও শেষ দেওশাই মালভূতি
-
দেওশাই জাতীয় উদ্যান "অবিরাম সমতলভূমি"
-
দেওসাই লেক ও দিওসাই সমতলভূমি, দেওসাই জাতীয় উদ্যান
-
আগস্টে দেওসাই জাতীয় উদ্যান
-
দেওসাই জাতীয় উদ্যান
-
দেওসাই জাতীয় উদ্যান
-
-
-
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
টেমপ্লেট:Baltistan