ইতিহাসে দেখা গেছে, নেপালী এবং তিব্বতীয়রা গিরিপথগুলো দিয়ে একে অপরের সাথে বাণিজ্য করতো।[১] বাণিজ্যকৃত সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলোর দুটি ছিল তিব্বতের হ্রদ হতে প্রাপ্ত লবণ (যেমন নামটসো), এবং নেপালের মধ্য পাহাড়ের চাল।[২][৩] বহু শতাব্দী ধরে, তিব্বতের লবণ ও উল এবং নেপালের শস্য ও অন্যান্য কৃষি পণ্যের বিনিময় একটি বাণিজ্যিক ভিত্তি তৈরি করে যা ঐতিহ্যগতভাবে বিভিন্ন, অধিকাংশ তিব্বতি-ভাষী সম্প্রদায়ের কাছে ছিল।[৪]খ্যাম্পার মতন যাযাবর দল, যাদের নিজেদের কোন জমি ছিলো না, বেঁচে থাকার নিমিত্তে তারা ভেড়া, ছাগল এবং চমরী গাই ব্যবহার করে লবণ ও চাল ক্রয়ে অংশ নিতো। ভারত ও চীনের অন্যান্য পণ্যগুলোও বাণিজ্যে বিক্রি করা হত।[৫]
তিব্বতের প্রচুর লবণ থাকলেও তাদের কাছে চাল ছিলো সামান্য, অন্যদিকে দক্ষিণ নেপালে প্রচুর চাল পাওয়া গেলেও লবণের অভাব ছিলো। ব্যবসায়ীরা এই সমস্যা সমাধানে সক্ষম ছিল; তারা তিব্বত থেকে লবণ যতই নিয়ে যেত, তা ততই মূল্যবান হয়ে ওঠেছিলো। ভারত/নেপাল সীমান্তে ভারত থেকে সামুদ্রিক লবণ সহজপ্রাপ্য হওয়ার পর লবণের দাম কমে আসে। যাযাবর ব্যবসায়ীরা ভারতীয় লবণ কেনা শুরু করে এবং নেপালের নিম্নভূমিতে শীতকালে শিবির নির্মাণ করে বসবাস শুরু করে। সেখানে তারা তাদের ভেড়া থেকে উল উৎপাদন করে তা থেকে তৈরি কম্বল ও লবণের বিনিময়ে গ্রামবাসীদের কাছে চাল ক্রয় করত। মার্চ মাসে তারা নিজেদের ভেড়া, ছাগল এবং গার্হস্থ্য জিনিসপত্র বহনকারী চমরী গাই নিয়ে উত্তরের দিকে চলে যেত।[১][৫] তুষার যথেষ্ট পরিমাণে গলে যাওয়ার পর তারা পাহাড়ের পথ অতিক্রম করে চলে যেত। আগস্ট মাসে তিব্বতের পুরাংয়ে পৌঁছানোর পর তারা চালের বিনিময়ে তিব্বতীয় লবণ কিনত এবং পরের মাসে দক্ষিণে ফিরে যেত।[৫]
১৯৫০ এর দিকে, তিব্বতে চীনের উপস্থিতির ফলে তিব্বতীয় মালভূমিতে মহাসড়ক নির্মাণ শুরু হয় যা চীন থেকে তিব্বতীয় যাযাবরদের নিকট আটা ও চাল পৌঁছানো সম্ভব করে দেয়। একই সময় নেপালে উন্নত সড়কের অর্থ হল ভারত থেকে আয়োডিনযুক্ত লবণ আসা সহজতর হওয়া। এটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ কেননা গলগন্ড ও বামনত্ব নেপালে অনেক হতো। তাদের বহন করা পণ্যের চাহিদা কম থাকায়, ঐতিহ্যবাহী আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য অর্থনৈতিকভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ১৯৮০ সালের দিকে নতুন দাদেলধুরা হতে দোতি এবং কোহলপুর হতে বানবাসা মহাসড়ক দুটি বাণিজ্যের উপর সিলমোহর দিয়ে দেয়।[৬]
ইতিহাস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, এখানে ছিল একাধিক সীমান্ত ক্রসিং। উচ্চ মুস্তাং এবং তিব্বতের মধ্যকার কোড়া লা ক্রসিং ছিল মূখ্য লবণ বাণিজ্য পথের একটি উদাহরণ। যদিও এই ক্রসিংটি ১৯৬০ এর দশকে তিব্বতীয় গোরিলাদের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটি বছর অধিকাংশ দিবসগুলো বন্ধ থাকলেও অর্ধবার্ষিক দ্বী-সীমান্ত বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হয়।[২]
↑Eede, Joanna (২০১৫-০৬-১২)। "Nomads of Dolpo"। National Geographic Voices। National Geographic। ২০১৫-০৭-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-১০।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑Chhakka Bahadur Lama (২৯ জুন ২০০১)। "Karnali's salt caravans"। Nepali Times। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০২০।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)