ডেরেক ল্যান্স মারে (ইংরেজি: Deryck Murray; জন্ম: ২০ মে, ১৯৪৩) ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর পোর্ট অব স্পেনে জন্মগ্রহণকারী সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও কার্যকরী ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন ডেরেক মারে। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সদস্য থাকাকালে দলের অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি। ইংল্যান্ডের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে ওয়ারউইকশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেন। ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রথম ও দ্বিতীয় শিরোপা বিজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সদস্য ছিলেন।
শিক্ষাজীবন
কুইন্স রয়্যাল কলেজে অধ্যয়ন করেন। বিদ্যালয়ে থাকাকালীন ত্রিনিদাদ ও টোবাগো জাতীয় ক্রিকেট দলে প্রথম খেলার সুযোগ লাভ করেন। দলে তিনি উইকেট-রক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮১ সময়কালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগো দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় ও কেমব্রিজের জিসাস কলেজে পড়াশোনা করেছেন। এসময়েই তিনি কেমব্রিজ ব্লু লাভ করেন। এছাড়াও ১৯৬৭ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট ক্লাবের অধিনায়কত্ব করেন।
খেলোয়াড়ী জীবন
১৯৭০-এর দশকে অ্যান্ডি রবার্টস, মাইকেল হোল্ডিং, জোয়েল গার্নার ও কলিন ক্রফটের ন্যায় প্রথিতযশা ফাস্ট বোলারদের বল রক্ষার্থে উইকেটের পিছনে সফলভাবে মোকাবেলা করেছেন তিনি। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৬২ টেস্টে অংশ নিয়ে ১৮৯টি টেস্ট ডিসমিসালে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন মারে।[১]
২০ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে খেলার জন্য মনোনীত হন। ১৯৬৩ সালে ফ্রাঙ্ক ওরেলের নেতৃত্বাধীন সিরিজে রেকর্ডসংখ্যক ২৪ ডিসমিসালে অংশ নেন। এছাড়াও দলে মাঝারি সারির ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামতেন। কিন্তু টেস্টে কোন সেঞ্চুরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ১৯৭৫ সালে ভারতের বিপক্ষে তিনি তার সর্বোচ্চ টেস্ট রান ৯১ তোলেন। তবে ক্লাইভ লয়েডের (২৪২*) সাথে ২৫০ রানের মূল্যবান জুটি গড়েন।
১৯৭৫ ও ১৯৭৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রথম দুই শিরোপা বিজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সদস্য ছিলেন। দলে তিনি সহঃ অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এছাড়াও, ১৯৭৯ সালে তৎকালীন বিখ্যাত অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েডের অনুপস্থিতিতে একটি টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দেন।
১৯৭৮ থেকে ১৯৮৯ সময়কালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগে কূটনীতিবিদের দায়িত্ব পালন করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ফিফথ কমিটিতে সহঃ সভাপতি ও প্রোগ্রাম এন্ড কো-অর্ডিনেশন বিষয়ক কমিটিতে সভাপতি ছিলেন তিনি।
১৯৯২ সালে তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিকে ম্যাচ রেফারি হিসেবে খেলা পরিচালনার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন মারে। বর্তমানে তিনি ত্রিনিদাদ ও টোবাগো ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ক্রিকেটের বাইরে ত্রিনিদাদ ও টোবাগো ট্রান্সপারেন্সি ইনস্টিটিউটের সভাপতিত্ব করছেন যা দুর্নীতি বিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের স্থানীয় শাখা।
১৯৬৭ সালে তিনি ‘মরিন’ নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। তাদের সংসারে ‘মাইকেল’ ও ‘নাইজেল’ নামে দুই পুত্র রয়েছে।