টাস্ক ফোর্স ৭৪ ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সপ্তম নৌবহরের একটি বিশেষ দল যাদেরকে নিক্সন প্রশাসন কর্তৃক ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বঙ্গোপসাগরে মোতায়েন করা হয়েছিল। যুদ্ধবিমান পরিবাহী রণতরী ইউএসএস এন্টারপ্রাইজের নেতৃত্বে নৌবহরটি বঙ্গোপোসাগরে মোতায়েন করাকে পাকিস্তানের সমর্থনে ও তাদের সাহায্য করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তির প্রদর্শন হিসেবে দেখা হয়। এটি এমন এক সময় করা হয় যখন বাংলাদেশের মুক্তি বাহিনী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাত থেকে ঢাকা মুক্ত করার দ্বারপ্রান্তে ছিল।[১] টাস্ক ফোর্সের নাম্বারটি বর্তমানে সপ্তম নৌবহরের সাবমেরিন ইউনিট কর্তৃক ব্যবহৃত হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান অপারেশন চেঙ্গিস খান নাম দিয়ে ভারতের রাডার স্থাপনা ও বিমান বন্দরে আক্রমণ চালালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ৫ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চালায় কিন্তু তা সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক দুই বার বিরোধীতার সম্মুখীন হয়। ৬ ডিসেম্বর ভারত বাংলাদেশকে দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।[২] যুক্তরাষ্ট্র ৮ ডিসেম্বর গোয়েন্দা প্রতিবেদনে জানতে পারে যে, ভারত পশ্চিম পাকিস্তানে হামলার পরিকল্পনা করছে।[৩] ফলশ্রুতিতে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিমান পরিবাহী রণতরী ইউএসএস এন্টারপ্রাইজের নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স ৭৪ নৌবহরটি বঙ্গোপোসাগরে মোতায়েন করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলীয় ক্রুজ শীপ ও ডেস্ট্রয়ারের সমন্বয়ে গঠিত দক্ষিণ-পশ্চিম প্যাসিফিক অঞ্চলের নৌবহরের নাম ছিল টাস্ক ফোর্স ৪৪। ১৯৪৩ সালের ১৫ মার্চ এই বহরের নামকরণ করা হয় টাস্ক ফোর্স ৭৪। ১৯৪৫ সালের ২৬ মার্চ সেবু শহরের মূল যুদ্ধটি শুরু হয়। এসময় মিত্র বাহিনী ভিক্টর ২ নামে একটি অপারেশন শুরু করে। টাস্ক ফোর্স ৭৪ এই আক্রমণের সময় আক্রমণকারী দলকে পাহারা দিয়ে দ্বীপে পৌঁছে দেয়। এসময় মোট ৫০০০ সৈন্য মেজর জেনারেল উইলিয়াম এইচ. আরনল্ডের নেতৃত্বে সেবু শহর থেকে ৪ মাইল দূরে সেবু দ্বীপে অবতরণ করে। যদিও সেখানে কোন জাপানি সেনাবাহিনীর কোন সদস্য ছিল না কিন্তু মিত্র বাহিনী মাইন ও পূর্ব থেকে পেতে রাখা ফাঁদে পড়ে ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়।[৪][৫]
তথ্যসূত্র