জ্বীন, তাদের বৈশিষ্ট্যযুক্ত খুর দ্বারা স্বীকৃত, নায়ক ফারামারজের সাথে যুদ্ধ করতে জড়ো হয় । ইরানী মহাকাব্য শাহনামেহ- এর একটি আলোকিত পাণ্ডুলিপিতে চিত্রণ
জ্বীন জাতি (বিকল্প বানান জিন) হলো ইসলামধর্মেরমূল গ্রন্থকুরআনে বর্ণিত একটি জীব/ সৃষ্টি। প্রাক ইসলামী যুগেও জ্বীন জাতি সংক্রান্ত বিশ্বাস আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন জাতির মাঝে প্রচলিত ছিল। আরবি জ্বীন শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল যা গুপ্ত, অদৃশ্য, অন্তরালে বসবাসকারী অথবা অনেক দূরবর্তী। [২] বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব এবং আধুনিক জ্ঞান অনুসারে, অ্যান্টিম্যাটার বা ডার্ক ম্যাটারের সাথে জ্বীনদের সৃষ্টির ধারণা তুলনা করা যেতে পারে। [৩] বিভিন্ন সমাজে কিছু কিছু মানুষ কর্তৃক জ্বীন বশ করা বা জ্বীনের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টি প্রচলিত আছে। ইসলামি বিশ্বাস মতে, জীনের অস্তিত্ব কুরআন দ্বারা প্রমাণিত।[৪][৫]
জ্বীন জাতি
জ্বীন জাতি একটি রহস্যময় সত্তা, যার উল্লেখ ইসলামিক ধর্মগ্রন্থ কুরআন ও হাদিসে পাওয়া যায়। মুসলিম ধর্মবিশ্বাস অনুসারে, জ্বীন এমন এক জাতি যারা আগুন থেকে সৃষ্টি এবং মানুষ ও ফেরেশতাদের থেকে পৃথক। বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব এবং আধুনিক জ্ঞান অনুসারে, অ্যান্টিম্যাটার বা ডার্ক ম্যাটারের সাথে জ্বীনদের সৃষ্টির ধারণা তুলনা করা যেতে পারে।[৬][৭]
সংজ্ঞা ও ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি
ইসলামে জ্বীনকে এমন এক সৃষ্টি হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে যা মানুষ ও ফেরেশতাদের মতো নয়। কুরআনে বলা হয়েছে,
“এবং আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মাটি থেকে এবং জ্বীনকে সৃষ্টি করেছি আগুনের বিষাক্ত শিখা থেকে।”
[৮][৯]জ্বীন জাতি আধ্যাত্মিক এবং অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার অধিকারী। তারা মানুষের মতো স্বাধীন ইচ্ছা ও ক্ষমতা রাখে।
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি
বিজ্ঞান অনুসারে, মহাবিশ্বে সাধারণ পদার্থের বাইরেও ডার্ক ম্যাটার ও অ্যান্টিম্যাটারের অস্তিত্ব রয়েছে। স্টিফেন হকিং এবং অন্যান্য বিজ্ঞানীদের তত্ত্ব অনুসারে, মহাবিশ্বের ৭৩% ডার্ক এনার্জি, ২৩% ডার্ক ম্যাটার এবং মাত্র ৪% সাধারণ পদার্থ নিয়ে গঠিত। অ্যান্টিম্যাটার এবং ডার্ক ম্যাটারের গঠন ও বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এগুলি এমন এক রহস্যময় উপাদান যা দৃশ্যমান হয় না, কিন্তু শক্তিশালী মাধ্যাকর্ষণ তৈরি করতে সক্ষম।[১০]
কুরআনের আলোকে জ্বীন জাতিকে "সামুম আগুন" বা বিষাক্ত আগুন থেকে তৈরি বলা হয়েছে, যা অ্যান্টিম্যাটারের বৈশিষ্ট্যের সাথে তুলনীয় হতে পারে।[১১]
জ্বীন জাতির বৈশিষ্ট্য
১. দেহগত গঠন
জ্বীনদের অদৃশ্যতা কুরআনে স্পষ্টভাবে উল্লেখিত। বিজ্ঞান অনুযায়ী, অ্যান্টিম্যাটারের কণা আমাদের দৃষ্টিগোচর হতে পারে না কারণ এগুলো সাধারণ আলো শোষণ বা প্রতিফলন করে না।[১২]
২. দীর্ঘায়ু
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, জ্বীনদের জীবনকাল হাজার বছরেরও বেশি হতে পারে। এটি তাদের পদার্থবিরোধী প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।[১৩]
৩. শক্তি ও গতি
জ্বীনদের গতিশীলতা এবং দ্রুত চলাচলের ক্ষমতা তাদের ধর্মীয় বর্ণনার পাশাপাশি আধুনিক বিজ্ঞান দ্বারা আংশিকভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। অ্যান্টিম্যাটার বা ডার্ক ম্যাটারের কণাগুলি উচ্চ শক্তি ধারণ করতে পারে।[১৪]
ধর্ম এবং বিজ্ঞান: সমন্বিত বিশ্লেষণ
ধর্ম এবং বিজ্ঞানকে একসঙ্গে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, জ্বীন জাতি এমন একটি রহস্যময় সত্তা যা এখনো পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়নি।[১৫]
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে জ্বীনদের অস্তিত্ব আল্লাহর সৃষ্টির রহস্যের একটি অংশ। অন্যদিকে, বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অনুযায়ী অ্যান্টিম্যাটার বা ডার্ক ম্যাটার হতে পারে এমন কিছু যা দৃশ্যমান নয় কিন্তু প্রভাব ফেলে।[১৬]
প্রাক ইসলাম যুগের আরবে
ইসলাম ধর্ম আবির্ভাবের অন্তত কয়েক শত বছর পূর্বে প্রাচীন আরবে জ্বীনের কিংবা সেরূপ কোন চরিত্রের আরাধনা প্রচলিত ছিল বলে নৃতত্ত্ববিদেরা প্রমাণ পেয়েছেন। পালমাইরার নিকট বেথ ফাসি'এল থেকে প্রাপ্ত আরামিক লিপিতে "জিনায়ে" কে "ভাল এবং ফলপ্রসূ ঈশ্বর" হিসেবে সম্মান জানানো হয়েছে।[১৭][১৮] এই ব্যাপারে তর্ক আছে যে, "জিনায়ে" শব্দটির থেকে আরবি জ্বীন শব্দের উৎপত্তি।[১৯]কুরআন এবং ইসলাম ও প্রাক-ইসলাম যুগের সাহিত্যে অনেক সংখ্যকবার জ্বীনের উল্লেখ ইঙ্গিত দেয় যে জ্বীনের অস্তিত্বে বিশ্বাস প্রাক-ইসলামিক বেদুইন ধর্মে বেশ প্রভাবশালী ছিল।[২০]
জ্বীন শব্দটি যে আরামিক থেকে আগত তা প্যাগান ঈশ্বরদের "ডিমন (Demon)" হিসেবে আখ্যা দেয়ার মাধ্যমে সে ব্যাপারে কিছুটা প্রমাণ পাওয়া গেছে। যা পরবর্তীতে আরবীয় লোকগাঁথায় প্রাক-ইসলামিক যুগে প্রবেশ করে।[২০] জুলিয়াস ওয়েলহসেন পর্যবেক্ষণ করেন যে এই ধরনের আত্মারা জনশূন্য, অন্ধকার ও নোংরা পরিবেশে বিরাজ করে যেখানে সচরাচর এদের জন্য ভয় পাওয়া হয়।[২০] প্রচলিত মতে, মানুষকে এদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করে চলতে হয় যদিও এদের বাস্তব অস্তিত্ব প্রশ্নস্বাপেক্ষ।[২০]
ইসলাম পূর্ব আরব উপকথা গুলোতে জ্বীন সদৃশ সত্ত্বার উল্লেখ আছে। প্রাচীন সেমাইট জাতির জনগণ জ্বীন নামক সত্ত্বায় বিশ্বাস করতো। তাদের মতানুসারে নানাপ্রকারের জ্বীন পরিলক্ষিত হয়। যেমন, গুল (দুষ্ট প্রকৃতির জ্বীন যারা মূলত কবরস্থানের সাথে সম্পর্কিত এবং এরা যেকোন আকৃতি ধারণ করতে পারে), সিলা (যারা আকৃতি পরিবর্তন করতে পারতো) এবং ইফরিত (এরা খারাপ আত্মা)। এছাড়া মারিদ নামক এক প্রকার জ্বীন আছে যারা জ্বীনদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী। প্রাচীন আরবদের মতে জ্বীনরা আগুনের তৈরি। (বিস্তারিত দেখুন ইউটিউবে জিনের প্রজাতি[২১]
ইসলামে জ্বীন সংক্রান্ত বিশ্বাস
কুরআন অনুসারে জ্বীন জাতি মানুষের ন্যায় আল্লাহ সৃষ্ট অপর আরেকটি জাতি, যারা পৃথিবীতে মানব আগমনের পূর্ব থেকেই ছিল এবং এখনো তাদের অস্তিত্ব রয়েছে। সাধারণত মানুষের চোখে তারা দৃষ্টিগ্রাহ্য নয়। কিন্তু, জ্বীনরা মানুষদেরকে দেখতে পায়। তাদের মধ্যেও মুসলিম এবং কাফির ভেদ রয়েছে। কুরআনে এসেছে,
“আমাদের মাঝে আছে মুসলমান এবং আছে কঠর আত্মার কাফির।[২২]
ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, মুহাম্মদ জ্বীন ও মানব উভয়জাতির নবী হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন। সুলায়মান আঃ এর সেনাদলে জ্বীনদের অংশগ্রহণ ছিল বলে কুরআনে উল্লেখ আছে। আরো বলা হয় "ইবলিশ" তথা শয়তান প্রকৃতপক্ষে জ্বীন জাতির একজন ছিল।
কুরআন অনুযায়ী জ্বীন
কুরআনে জ্বীন সংক্রান্ত একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা নাযিল করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সূরাহতে অনেক আয়াত রয়েছে। যেমনঃ
"যখন আমি একদল জ্বীনকে আপনার (অর্থাৎ মুহাম্মাদ এর) প্রতি আকৃষ্ট করেছিলাম, তারা কোরআন পাঠ শুনছিল। তারা যখন কোরআন পাঠের জায়গায় উপস্থিত হল, তখন পরস্পর বলল, চুপ থাক। অতঃপর যখন পাঠ সমাপ্ত হল, তখন তারা তাদের সম্প্রদায়ের কাছে (জ্বীন সম্প্রদায়) সতর্ককারীরূপে ফিরে গেল।” (সূরা আল-আহক্বাফ, ২৯)
"হে জ্বীন ও মানব সম্প্রদায়, তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে নবীগণ আগমন করেনি? যাঁরা তোমাদেরকে আমার বিধানাবলী বর্ণনা করতেন এবং তোমাদেরকে আজকের এ দিনের সাক্ষাতের ভীতি প্রদর্শন করতেন? তারা বলবে, আমরা আমাদের গোনাহ স্বীকার করে নিলাম। পার্থিব জীবন তাদেরকে প্রতারিত করেছে। তারা নিজেদের বিরুদ্ধে স্বীকার করে নিয়েছে যে, তারা কাফের ছিল।” (সূরা আল-আনআ’ম, ১৩০)
“আমি জ্বীন ও মানুষকে কেবলমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি” (সূরা আয্-যারিয়াত, ৫৬)
”হে জ্বীন ও মানবকূল, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের প্রান্ত অতিক্রম করা যদি তোমাদের সাধ্যে কুলায়, তবে অতিক্রম কর। কিন্তু ছাড়পত্র ব্যতীত তোমরা তা অতিক্রম করতে পারবে না।” (সূরা আর-রহমান, ৩৩)
”বলুনঃ আমার প্রতি ওহী নাযিল করা হয়েছে যে, জ্বীনদের একটি দল কোরআন শ্রবণ করেছে, অতঃপর তারা বলেছেঃ আমরা বিস্ময়কর কোরআন শ্রবণ করেছি।” (সূরা জ্বীন, ১)
"আর এই যে মানুষের মধ্যের কিছু লোক জ্বীন জাতির কিছু লোকের আশ্রয় নিত, ফলে ওরা তাদের পাপাচার বাড়িয়ে দিত।” (সূরা জ্বীন, ৬)
গঠন
কুরআন এবং হাদীস অনুসারে জ্বীনদের তৈরি করা হয়েছে ধোঁয়াবিহীন আগুন (আরবি শব্দ- 'নার') হতে। কুরআনে বলা হয়েছে,
“আর তিনি জ্বীনকে সৃষ্টি করেছেন আগুনের শিখা দিয়ে।” (সূরা আর-রহমান, ১৫)
আরেকটি আয়াতে বলা হয়েছে,
“আর আমি এর আগে জ্বীন সৃষ্টি করেছি প্রখর আগুন দিয়ে।” (সূরা আল-হিজর, ২৭)
“ফেরেশতারা আলোর তৈরী, জ্বীনরা আগুনের স্ফুলিংগ থেকে তৈরী এবং আদমকে যেভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে তার বর্ণনা (মাটি থেকে) পবিত্র কুরআনে রয়েছে।” (মুসলিম শরীফ ১৮/১২৩ – তাফসীর আন নববী)
প্রকারভেদ
লিঙ্গ অনুযায়ী
জ্বীন জাতি মানুষের মত পুরুষ ও স্ত্রী জাতিতে বিভক্ত। একটি হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে-
“যে এই আয়াত (আয়াতুল কুরসী) পড়বে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য একজন প্রহরী নিযুক্ত করে দিবেন এবং কোন পুরুষ এবং নারী জ্বীন-শয়তান তার কাছে আসতে পারবে না।” (সহিহ বুখারী, ৫০১০)
গঠন অনুযায়ী
গঠন অনুযায়ী জ্বীন তিন ধরনের হয়ে থাকে। এক হাদীসে বলা হয়েছে, সা’লাবা আল খাসানি থেকে বর্ণিত, রাসুল(সঃ) বলেছেন-
“তিন ধরনের জ্বীন আছে- এক প্রকারের জ্বীন পাখার মাধ্যমে বাতাসে ওড়ে, এক প্রকারের জ্বীন সাপ এবং মাকড়শার আকারে থাকে, শেষ প্রকারের জ্বীনরা সাধারনভাবে থাকে এবং চলাচল করে।” (আত তাবারানী, আল হাকিম ৩৭০২, বায়হাক্বী এবং সহীহ আল জামে’ ৩১১৪)
নাম ও কাজ অনুযায়ী
ইবলিস: এই জ্বীন আদম আঃ কে সিজদা/সালাম করতে অস্বীকার করেছিল বলে কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। মুসলিমরা বিশ্বাস করে, এই জ্বীন জান্নাতে থাকাকালে আদম আঃ কে আল্লাহর আদেশ অমান্য করতে প্ররোচিত করেছিল এবং পৃথিবীতেও সে মানুষদেরকে পথভ্রষ্ট করে।
খানজাব: এই জ্বীন সালাতরত মানুষের মনে নানারকম চিন্তা ঢুকিয়ে নামাজ থেকে অমনোযোগী ও উদাসীন করে তুলে।এর ফলে তারা সালাতে ভুল করে, কত রাকাত পড়েছে মনে থাকেনা, কোনটা কি করছে সন্দেহে পড়ে যায়। এর কারণে সওয়াবও কমে যায়। তাই আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে যথাযথ খুশু ও খুজু সহকারে মনোযোগী হয়ে সালাত আদায় করার জন্য।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
“নামাযের জন্য আযান দেওয়ার সময় শয়তান সশব্দে বায়ু ছাড়িতে ছাড়িতে পালায়, যেন সে আযানের শব্দ না শোনে। আযান শেষ হইলে সে আবার আসে। ইকামত আরম্ভ হইলে আবার পলায়ন করে। ইকামত বলা শেষ হইলে পূনরায় উপস্থিত হয় এবং ওয়াসওয়াসা ঢালিয়া নামাযী ব্যক্তি ও তাঁহার অভীষ্ট লক্ষ্যের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃস্টী করে। যে সকল বিষয় তাহার স্বরণ ছিল না সেই সবের প্রতি আকৃষ্ট করিয়া সে বলিতে থাকেঃ অমুক বিষয় স্বরণ কর, অমুক বিষয় স্বরণ কর। ফলে সেই ব্যাক্তি কত রাকাআত নামায পড়য়াছে এমনকি সেটাও ভুলিয়া যায় ।(বিঃদ্রঃ নামাযে ওয়াসওয়াস প্রদাওনকারী শয়তানের নাম হচ্ছে "খানজাব")
[মুয়াত্তা মালিক :স্বলাত অধ্যায় ৩, হাদিস ১৫২]
এ থেকে বাচার উপায়ঃ
নামাযে কিরাত পড়া শুরু করার আগে “আ'উযু বিল্লাহিমিনাশ-শাইতানির রাযীম” পড়বেন। আ’উযুবিল্ললাহ শুধু প্রথম রাকাতেই পড়তে হয়, এর পরের রাকাতগুলোর শুরুতে পড়তে হয়না। এই দুয়া পড়ে শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়া হয়, কারণ নামাযে দাড়ালে খানজাব নামের শয়তান কুমন্ত্রনা দিয়ে নামাযকে নষ্ট বা ক্ষতি করতে চায়।
নামাযের মাঝখানে সুরা-কেরাতে বা কত রাকাত, রুকু সেজদা নিয়ে শয়তান খুব বেশি ওয়াসওয়াসা দেয়/সন্দেহে ফেলে দেয় তাহলে কি করতে হবে?
সালাতে ও কেরাতের মাঝে শয়তানের কুমন্ত্রণায় পতিত ব্যক্তি যেই দো‘আ করবেঃ
“আ‘ঊযু বিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বানির রাজীম”
এই দুয়া বলে তারপর বাম দিকে তিনবার থুতু ফেলবে (থুতু ফেলার মতো করে নিঃশব্দে ফু দিবে, কিন্তু থুতু ফেলবেনা)।
উসমান ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! শয়তান আমার ও আমার নামাযের মাঝে অনুপ্রবেশ করে এবং কিরাতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সেটা (উপরে যা বলা হয়েছে) বলার নির্দেশ দেন, তিনি সেটা করার পর আল্লাহ তাঁকে সেটা থেকে মুক্ত করেন। [মুসলিম ৪/১৭২৯, ২২০৩]
[২৩]
ওলহান: এরা হচ্ছে একপ্রকার শয়তান জ্বীন যারা মানুষকে ওযুর সময় ওয়াসওয়াসা দেয়।ওয়াসওয়াসাগ্রস্থ মানুষেরা ওযুতে ভুল করে বেশি, এক কাজ কয়েকবার করে, তবুও মনে সন্দেহ থেকে যায় ওযুর অমুক অংগ ধোয়া হয়েছে কিনা? এরা পানি বেশি অপচয় করে।
কি করতে হবে?
এই ওয়াসওয়াসায় যারা আক্রান্ত তারা মনোযোগের সাথে কোন পাত্রে নির্দিষ্ট পানি নিয়ে ওযু করবেন, টেপ ছেড়ে দিয়ে অমনোযোগী হলে শয়তান সহজেই ওয়াসওয়াসা দিবে। অবশ্যই আল্লাহর নাম ‘বিসমিল্লাহ’ বলে আস্তে ধীরে ওযু শুরু করবেন, অবশ্যই তাড়াহুড়া করবেন না। প্রতিটা অংগ মনোযোগের সাথে উত্তমরুপে ধৌত হচ্ছে কিনা সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। আর কোন অংগ ধৌত করতে ভুলে গেলে নিশ্চিত হলে মেজাজ খারাপ না করে ঐ অংগ থেকে ধোয়া শুরু করবেন। আর ওয়াসওয়াসা পড়লে এই দুয়া পড়বেনঃ
“আ’উযু বিল্লাহিমিনাশ-শাইতানির রাযীম” – এই দুয়া পড়ে শয়তান মনে কি ওয়াসওয়াসা দেয় সেইদিকে কোন লক্ষ্য করবেন না। যেই অংগ থেকে ভুল করেছেন সেখান থেকে ওযু সম্পূর্ণ করবেন। আস্তে আস্তে মনোযোগী হয়ে ওযু করার অভ্যাস গড়ে তুললে আস্তে আস্তে শয়তানের বিরুদ্ধে বিজয়ী হতে পারবেন ইনশা'আল্লাহ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
'''ক্বারীন''': ক্বারিন অর্থ হচ্ছে সঙ্গী, প্রত্যেক মানুষের সাথেই শয়তান জ্বীন লেগে থাকে, সঙ্গী হিসেবে। এরা সবসময় বান্দার অন্তরে খারাপ চিন্তা ঢুকিয়ে দিয়ে পাপ কাজ করতে উৎসাহিত করে।ক্বুরানে আল্লাহ এদের কথা উল্লেখ করেছেন সুরাতুল ক্বাফে।
আ'উযু বিল্লাহি মিনাশ-শাইতানির রাযীম
“মৃত্যুযন্ত্রণা নিশ্চিতই আসবে। এ থেকেইতো তুমি টালবাহানা করতে। এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে এটা হবে ভয় প্রদর্শনের দিন। প্রত্যেক ব্যক্তি আগমন করবে। তার সাথে থাকবে চালক ও কর্মের সাক্ষী। তুমি তো এই দিন সম্পর্কে উদাসীন ছিলে। এখন তোমার কাছ থেকে যবনিকা সরিয়ে দিয়েছি। ফলে আজ তোমার দৃষ্টি সুতীক্ষ্ন। তার সঙ্গী ফেরেশতা বলবেঃ আমার কাছে যে, আমলনামা ছিল, তা এই। তোমরা উভয়েই নিক্ষেপ কর জাহান্নামে প্রত্যেক অকৃতজ্ঞ বিরুদ্ধবাদীকে, যে বাধা দিত মঙ্গলজনক কাজে, সীমালঙ্ঘনকারী, সন্দেহ পোষণকারীকে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্য গ্রহণ করত, তাকে তোমরা কঠিন শাস্তিতে নিক্ষেপ কর। ‘ক্বারীন’ (তার সঙ্গী শয়তান) বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমি তাকে অবাধ্যতায় লিপ্ত করিনি। বস্তুতঃ সে নিজেই ছিল সুদূর পথভ্রান্তিতে লিপ্ত। আল্লাহ বলবেনঃ আমার সামনে বাকবিতন্ডা করো না, আমি তো পূর্বেই তোমাদেরকে আযাব দ্বারা ভয় প্রদর্শন করেছিলাম। আমার কাছে কথা রদবদল হয় না এবং আমি বান্দাদের প্রতি জুলুমকারী নই।
গইলান: এরা হচ্ছে যাদুকর জ্বীন এরা মানুষের পথ বদলে দেয়। হযরত সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস রা. বলেন "আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে আমরা গইলান দেখলে যেন আযান দেই"।
মাতিয়ানাক:- এরা হচ্ছে শক্তিশালী ও অনেক ভয়ংকর জ্বীন, মানুষের সন্তান হয়ে জন্মগ্ৰহণ করে।
সান্ডেকালা:-এরা হচ্ছে শক্তিশালী ও অনেক ভয়ংকর জ্বীন, সন্ধ্যা হলেই বাচ্চাদের ধরে নিয়ে মরে যায়।সান্ডেকালা,আনজার ও মাতিয়ানাক প্রজাতির জ্বীনেরা দুষ্ট জ্বীন এবং এরা ইবলিস শয়তানের অনুসারী হয়ে থাকে।
আনজার:-এরা হচ্ছে শক্তিশালী, অনেক ভয়ংকর ও হিংস্র পশুর ন্যায় স্বভাবের জ্বীন, এদের কোন কাজে ব্যাঘাত ঘটলে সব মানুষের বংশের সবার উপরে আছড় করে ও রূপের প্রলোভন দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং বেছে বেছে প্রাপ্তবয়স্ক সুদর্শন পুরুষ ও মহিলা যারা দাইয়্যূস প্রকৃতির মানুষ।
সাবরাদ:-সাবরাদ দায়িত্বে আছে বিপদাপদে ধৈর্য হারানোর কাজ। মানুষের বিপদ বিপর্যয়ের সময় এই শয়তান তাকে অধৈর্য্য হয়ে মৃত্যুকে ডাকতে, জামাকাপড় ছিঁড়তে, বুক মুখ চাপড়াতে এবং ইসলাম-বিরোধী অজ্ঞসূচক কথাবার্তা বলতে প্ররোচিত করে।এ জ্বীন ইবলিস সয়তানের প্রথম সন্তান।
আঊর:- আঊরের দায়িত্বে আছে জিনা-ব্যাভিচার। এই শয়তান মানুষকে জিনা-ব্যাভিচারের নির্দেশ দেয় এবং ওই কাজের দিকে আকৃষ্ট করে।এ জ্বীন ইবলিস সয়তানের দ্বিতীয় সন্তান।
মাসূত:- মাসূতের দায়িত্বে আছে মিথ্যা সংবাদ রটানো। যেমন, এই শয়তান মিথ্যা কথা শুনে অন্য লোককে তা বলে। সে আবার তার এলাকার লোকেদের কাছে গিয়ে বলে- একজন আমাকে এইসব কথা বলেছে। তার নাম জানি না বটে, তবে সে আমার মুখচেনা।এ জ্বীন ইবলিস সয়তানের তৃতীয় সন্তান।
দাসিম:-দাসিমের কাজ হলো মানুষের সাথে সাথে তার বাড়িতে আসা এবং বাড়ির লোকেদের দোষের কথাগুলো বলে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে তাকে ক্ষেপিয়ে তোলা।এ জ্বীন ইবলিস সয়তানের চতুর্থ সন্তান।
আর যিলনাবূর:-আর যিলনাবুরের দায়িত্বে আছে হাট-বাজার। সে তার (গুমরাহীর) পতাকা পুঁতে রেখেছে হাটে বাজারে।এ জ্বীন ইবলিস সয়তানের পঞ্চম সন্তান।
ঘৌল:-এরা উত্তর থেকে পশ্চিম দিকে ভ্রমণ করে।ঘৌল জ্বীনদেরকে আদমখোর জ্বীন বলা হয়।এরা বড়দের চেয়ে শিশু ও বালেগ-প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এবং দাইয়্যুস কিশোর-কিশোরীদেরকে বেশি আক্রমণ করে।ঘৌল জ্বীন সাধারণত কবরস্থানে বা তার আশেপাশে পরিত্যক্ত অন্ধকার স্থানে থাকতে বেশি পছন্দ করে।যেসব মানুষের বাসস্থান মাটির নিচে বা পাতালে, তাদের এ জাতের জ্বীন বেশি আছড় করে।এ জাতের মেয়ে জ্বীন বা পরী অনেক ভয়ংকর হয়ে থাকে,যাদের ঘৌলা বলা হয়।এসব ঘৌলা পরীরা সুন্দরী বালিকা রূপ ধারণ করে বালেগ পুরুষ বা কিশোর ছেলেদের আকর্ষণ করে বিয়ে করার জন্য।বিয়ে করা কিশোর ছেলেরা এসব ঘৌলা পরীদের খাবারে পরিণত হয়।ঘৌল হচ্ছে বিশেষ প্রজাতির এক জ্বীন। এরা নিজেদের রুপ পরিবর্তন করতে পারা ছাড়াও মানুষের মাংস ভোক্ষণ ও রক্ত পান করে থাকে। এরা মূলত ভ্রমণপিপাসু,যৌনপিপাসু ও শিশুদেরকে তাদের লক্ষ্যবস্তু করে থাকে। এছাড়া এরা কবর থেকেও মানুষের লাশ চুরি করে।বিভিন্ন বই-পুস্তকে বলা হয়েছে, ঘৌলরা হলো জ্বীন জাতির মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক প্রজাতির। এদের মধ্যে নারী ঘৌলরা মানুষের রুপ ধারণ করতে পারে। তারা সাধারণ নারীর রুপ ধারণ করে পুরুষদের শিকার করে থাকে এবং চাইলে মানুষের সাথে জোরজবরদস্তি করে প্রচুর পরিমাণে শারীরিক সম্পর্ক করে বাচ্চা জন্ম দিতে পারে।ফারসি বিভিন্ন বইয়ে বলা হয়েছে যে, ঘৌলদের বাস্তব রুপে গাধার মতো পা ও ছাগলের মতো শিং থাকে।
জ্যান:-জ্যানরা মূলত মরুভূমি অঞ্চলে বসবাস করে থাকে। এরা সাধারণত ঘূর্ণিবায়ু বা সাদা উটের বেশ ধারণ করে চলাফেরা করে।জ্যানদের সঙ্গে ঘৌলদের চরম শত্রুতা রয়েছে। তারা মানুষের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করে থাকে। এছাড়া বলা হয়ে থাকে, জ্যানরা হলো জ্বীন জাতির মধ্যে সর্বপ্রথম যারা মানবজাতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলো।এরা মানুষের বন্ধু হয়ে থাকে।এরা অন্যান্য জ্বীন থেকে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী, খুবই পরোপকারী, আল্লাহওয়ালা বা আল্লাহভীরু ও বন্ধুত্বপরায়ণ এবং ন্যায়পরায়ণ জ্বীন হয়ে থাকে।
শিক:-জ্বীন জাতির মধ্যে অন্যতম একটি প্রজাতি হলো শিক। এরা কিছুটা দানবীয় আকৃতির হলেও তুলনামূলক ভাবে দূর্বল হয়ে থাকে। এ কারণে শিকদের নিম্ন প্রজাতির জ্বীন বলে গণ্য হয়। এরা ঘৌল জ্বীনদের ন্যায় মানুষের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে বাচ্চা জন্ম দিতে পারে।
নাসনাস:-এরা ভিন্ন শক্তিশালী জ্বীন। এরা অর্ধেক জ্বীন এবং অর্ধেক পশু হয়। অর্ধেক জ্বিন হয় আর বাকি অর্ধেক কোন পশুপাখি, গাছপালা ইত্যাদি মত মত। এরা নোংরা জায়গায় বেশি থাকে। অর্ধেক দেখা যায় আর বাকি অর্ধেক অদৃশ্য থাকে। এরা বরাবরই মানুষের ক্ষতি করে থাকে এবং বড় বড় ক্ষমতা না থাকা সত্য না জানার খবর দেয়। এরা আমাকে বলা খুব পটু।জ্বীনদের মধ্যে দূর্বল আরেকটি প্রজাতি হলো নাসনাস। শিক ও মানুষের মিলনের ফলে এদের সৃষ্টি বলে বলা হয়ে থাকে। এরা দেখতে অর্ধেক মানুষের মত ও বাকি অর্ধেক পশুর মতো।‘এক হাজার এক রাত’ বইয়ে বলা হয়েছে যে, নাসনাসদের মুখমণ্ডলের একাংশ, এক হাত ও এক পা মানুষের মত হয়ে থাকে। বাকিটা হয়ে থাকে পশুর মতো।
ইফরিত:-ইফরিতরা নিজেদের ক্ষমতা ও চতুরতার জন্য সুপরিচিত। এদের বিশাল আগুনের ডানা থাকে ও এরা আগুন ছুঁড়তে সক্ষম। এরা সাধারণত স্বভাবে হিংস্র ও দুষ্ট হয়ে থাকে।ইফরিতরা ভূগর্ভে বসবাস করে বলে বলা হয়। এরা সাধারণত অন্যান্য জ্বীনদের বিয়ে করলেও কখনো কখনো মানুষদেরও বিয়ে করে থাকে।এরা কালোজাদুর ব্যবহার করতে পারে।এরা খারাপ আত্মা। মানুষের মতো সমাজব্যবস্থা রয়েছে এদের। সাধারণ কোনো অস্ত্র তাদের ক্ষতি করতে পারেনা। তবে মানুষ চেষ্টা করলে তাদের বশে আনতে পারে, এমনকি সাদাজাদুর মাধ্যমে হত্যাও করতে পারে।সাদাজাদু মানুষ করতে পারেন।ইফরিত জ্বীনদেরকে জুহান্না অর্থাৎ দোযখ, জাহান্নাম বা সিজ্জিনের শয়তান বলা হয়।
মারিদ:-মারিদ হলো জ্বীনদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজাতি। ইসলাম পূর্ববর্তী সময়কাল থেকেই আরবের বিভিন্ন লোককথায় এর অস্তিত্বের কথা জানা যায়।আরবি ভাষায় ‘মারিদ’ শব্দের অর্থ হলো –দানব। সুবিশাল আকৃতি ও শক্তিমত্তার জন্য তাদেরকে এই নামে ডাকা হয়। তারা নিজেদের খেয়াল-খুশী মতো সবকিছু করে থাকে। তবে এরা প্রচন্ড শক্তিশালী ও বিশাল আকৃতির হওয়া সত্ত্বেও এদেরকে বশ করার মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ করিয়ে নেয়া যায়।এ মারিদ জ্বীনদের মারাত্মক একটি রূপ ধারণ করতে পারে। এরা হচ্ছে শয়তানের অনুসারী হয়ে থাকে।
হিন:-এরা জ্বিনের মধ্যে এমন এক জাতির অদ্ভুত প্রকৃতির হয়। এরা বড়ই আক্রমণের শিকার হয়। এরা মানুষের কোনো ক্ষতি করতে পারে না। হিন 🧞জ্বীনদের মুখটা শিয়ালের মতো কখনও কখনও ইঁদুরের মতো, হাতের আঙ্গুল তিনটা করে থাকে, তার গা রঙ কুৎসিত। এরা বোকা প্রকৃতির হয়। এরা সাধারণ শয়তান এবং ইবলিশের অনুসারী। মহাপ্রধান কাজ চালান করা।হিন হচ্ছে এমন এক প্রজাতির জ্বীন যারা দেখতে অনেকটা পশুর মতো হয়ে থাকে। এরা সাধারণত কুকুরের বেশে চলাফেরা করে। মুসলিম দার্শনিক জাকারিয়া ইবনে মুহাম্মাদ আল-কাজওয়ানি তার ‘দ্য বুক অব জ্বীন’ –এ দাবি করেছেন যে, তিনি সৌদি আরব, পারস্য ও ভারতে অনেকবার হিন দেখেছেন।বিশ্বজাহান ও সমগ্ৰ মাখলুকাতের মালিক মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বান্দা ফেরেশতারা ইবলিস সয়তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে তখন এ হিন ও জ্যান জ্বীনরা ফেরেশতাদের পক্ষ হয়ে ইবলিস সয়তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।
সিলাত:-জ্বিনদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী জ্বিন হচ্ছে সিলাত জ্বিন। এরা দ্রুত আকৃতি পরিবর্তন করতে সক্ষম। বরাবরই মেয়ে জ্বিন বা পরী🧚 হয়। অত্যন্ত বুদ্ধিমান বলে মনে হয়। এরা খুব কমই মানুষের কাছে আসে। এরা সাধারণ মানুষের ক্ষতি না করে বরং পরোপকার করে থাকে। তবে এরা অনেক সময়ই বিভিন্নভাবে সাহায্য করে।[২৪]
পালিস(পালিশ):-সাধারণত এরা মরুভূমিতে বেশি থাকে। দেখতে প্রচন্ড কুৎসিত, শরীর খুব দুর্গন্ধময় এবং অন্ধকার ও জনমানবহীন জায়গায় বেশি থাকে। এরা বসবাসের জন্য অন্য লুকানোর জন্য জায়গা পছন্দ করে। মানুষের ক্ষতি করতে পারে এবং ভয় দেখাতেও বেশি অ্যাক্সপার্ট হতে পারে।পালিস জ্বীনরা ঘুমন্ত অবস্থায় মানুষদের উপর আক্রমণ করে এবং তাদের পা ও অন্যান্য শরীরের অংশ থেকে চেটেপুটে রক্ত খায়।এরা অনেক বোকা টাইপের জ্বীন হয়ে থাকে এবং এদের সহজে বোকা বানানো যায়।পালিসরা সাধারণত মরুভূমিতে বসবাস করে। এরা মানুষকে ঘুমের মধ্যে আক্রমণ ও পায়ের পাতা চাটার মাধ্যমে রক্ত শোষণ করে থাকে বলে বলা হয়। এদের বুদ্ধিমত্তা খুবই কম থাকায় খুব সহজেই এদের বোকা বানানো যায়।
ভেতালা(ভেটালা):-ভেতালা দিয়ে মত ভ্যাম্পায়ার🧛 ও জম্বিদের 🧟 আলোচনা করা হয়। তারা মানুষের মৃতদেহ ধারণ করে ও অনায়াসে মানুষের মৃতদেহ ঢুকতে পারে এবং তাদের মৃতদেহ পচনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে প্রতিরোধ করতে পারে এবং তাদের বিশ্বাসকে তিরস্কার করে সাধারণ মানুষ বলে। এরা মানুষের রক্তের সাথে খুব মিশে যেতে পারে এবং মানুষের শরীর থেকে রক্ত দ্রুত শুকিয়ে যেতে পারে। এরা প্রচন্ড জ্বীন হয়। ভেতালা জ্বীনও অন্যান্য জ্বীনদের মতো আকৃতি পরিবর্তনে সক্ষম। অনেক সময়কে মনের ভবিষ্যতবাণী করতে পারে ও এদের আধ্যাত্নিক ক্ষমতা রয়েছে এবং অতীতে কোনো তথ্য লাভ করতে সক্ষম বলে মনে করা হয়। এরা মানুষের ব্রেইনে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে। পশ্চিমা বিশ্বের একে জম্বি বলে অভিহিত করা হয়।
খান্নাস (খাবাইস): খান্নাস বিশেষ এক জ্বিন। এরা সাধারণ ব্যবসায় ভূতাবিষ্ট না ক্ষতি করে। এদের কে অনেক সময় খাবাইস বলা হয় এবং এদের পরীদের কে খুবসি বলা হয়।এরা অপবিত্র জায়গায় এবং পানিতে পরিবার বেশি পছন্দ করে। আমাদের ওয়াশরুমে খান্নাস সময় জ্বিন থাকে। এরা সকলেই শয়তান টাইপ হয়। পশ্চিমা বিশ্বের একে সুকুবাস ও ইনকিউবাস বলে অভিহিত করে।
যাথুম (যথুমে): যাথুম জ্বিনকে ওভারপাওয়ারড জ্বিন বলা হয়। এরা ভয়ংকর জ্বীন। মুখ্য প্রধান আবাস বটবৃক্ষ। এরা যদি কোনো অজান্তে একবার ভূতাবিষ্ট করে তাহলে আমার ছাড়ানো বেশ কঠিন। কোনো প্রকার তাবিজে কাজ হবে না গারা টি। এরা মেয়েকে বেশি ভূতাবিষ্ট করে। এরা মানুষের যদি থাকে তাদের কাছে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে। এরা মানুষের ক্ষতি করার পাশাপাশি মানুষের ব্যবস্থাও করে থাকে।
হামজাদ:-হামজাদ জ্বীন একটি জনপ্রিয় ধারণা যা উপমহাদেশের লোকবিশ্বাসে বিদ্যমান। বলা হয়, প্রতিটি মানুষের সঙ্গে তার জন্ম থেকে একটি হামজাদ জ্বীন থাকে, যাকে ডপেলগেঞ্জার বা ছায়া জ্বীন বলা যায়। এই জ্বীনটি নাকি মানুষের মতো দেখতে হয় এবং তার মতোই আচরণ করে। হামজাদ জ্বীন মানুষের মনোভাব, অভ্যাস এবং চিন্তাভাবনা সম্পর্কে অবগত থাকে এবং কখনো কখনো তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়।হামজাদ জ্বীনেরা সাধারণত ইবলিস শয়তান 😈 এর অনুসারী হয়ে থাকে।
লোকবিশ্বাসে, হামজাদ জ্বীন মানুষের মন্দ কাজ ও নেতিবাচক চিন্তা করতে উৎসাহিত করে। এটি নাকি সবসময় মানুষের কাছাকাছি থাকে, কিন্তু সাধারণত চোখে দেখা যায় না। কিছু মানুষ বিশ্বাস করে, হামজাদ জ্বীনকে নিয়ন্ত্রণ করা বা তার সাহায্য পেলে বিশেষ ক্ষমতা অর্জন করা যায়। তবে এই ধরনের বিশ্বাসের ভিত্তি সাধারণত অলৌকিক বা অতিপ্রাকৃত কাহিনীতে নিহিত, যার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
মানুষের বসবাসের স্থানে সাধারণত জ্বীন থাকে না। তারা মানুষের পরিত্যক্ত স্থানে থাকতে পছন্দ করে। তাদের অধিকাংশই মানুষের কাছ থেকে দুরে নির্জন এলাকায় বসবাস করে। তবে কিছু প্রজাতির জ্বীন মানুষের সাথে লোকালয়ে থাকে, যেমনঃ ক্বারীন জ্বীন। এক হাদিস থেকে জানা যায়, জ্বীনেরা নোংরা ও গন্ধময় জায়গায় থাকতে পছন্দ করে, যেখানে মানুষরা ময়লা এবং খাবারের উচ্ছিষ্ট অংশ ফেলে রাখে। পায়খানা এবং প্রস্রাব করার জায়গাগুলোতে জ্বীনদের অবাধ বিচরণ। জায়েদ বিন আরকাম বর্ণিত হাদীস থেকে জানা যায়, রাসুল(সঃ) বলেছেন-
“এই জায়গাগুলোতে (পায়খানা এবং প্রস্রাব করার জায়গা) জ্বীন এবং শয়তানরা অবাধে বিচরণ করে। তোমাদের মধ্যে যেই এই স্থানগুলোতে যাবে, সে যেন বলে- ‘আমি আল্লাহর কাছে পুরুষ এবং মহিলা শয়তানের থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি’।” (আহমেদ ইবনে হাম্বল, ‘পবিত্রতা’ খন্ড, ৪/৩৬৯)
খাদ্য
জ্বীনের খাবার সম্পর্কে বলা হয়েছে, তারা মানুষের ফেলে দেওয়া খাবার খায়। এছাড়া হাড়, গোবর ইত্যাদি খায়। হাদীসে বলা হয়েছে, আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল(সঃ) বলেছেন-
“হাড় এবং গোবর জ্বীনদের খাবার। নসীবাঈন শহরের জ্বীনদের একটি দল আমার সাথে দেখা করতে আসে। কত বিনয়ী ছিল তাঁরা। তাঁরা আমার কাছে মানুষের খাবারের উচ্ছিষ্ট সম্পর্কে জানতে চায়। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যে তাঁরা এমন কোন হাড় কিংবা গোবর অতিক্রম করবে না যা তাঁদের জন্য খাবার না হয়ে যাবে।” (বুখারী, ৩৫৭১)
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল(সঃ) বলেছেন-
“জ্বীনদের একজন আমাকে একদিন ডাকলে আমি তাঁর সাথে যাই। সেখানে আরো জ্বীন ছিল এবং আমি তাদের জন্য পবিত্র কুরআন পাঠ করি। তারা তাদের খাবারের বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে আমি বলি- আল্লাহর নাম পড়ে খাওয়া হয়েছে এমন যে কোন হাড় তোমাদের সামনে এলে তা মাংসে পরিনত হয়ে যাবে। একইভাবে গোবর তোমাদের পশুদের খাবার হয়ে যাবে। তাই, ভারমুক্ত (টয়লেট করার পরে) হওয়ার পরে তোমাদের কেউ যাতে এই বস্তুগুলোকে (শুকনো হাড়, গোবর) দিয়ে নিজেকে পরিষ্কার না করে। কারণ তা হলো তোমাদের ভাইদের খাবার। (মুসলিম, ৪৫০)
ধর্ম
জ্বীনরা মানুষের মত মুসলিম ও অমুসলিম (যেমন:- ইহুদি, খ্রিস্টান,নাসারা, হিন্দু, বৌদ্ধ ইত্যাদি)জাতিতে বিভক্ত।
জ্বীন ও অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে সম্পর্ক
মানুষ ছাড়াও অন্যান্য কিছু প্রাণী জ্বীনের উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারে। হাদীসে বলা হয়েছে, আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল(সঃ) বলেছেন-
“যখন তোমরা গাধার চিৎকার শুনতে পাও, তখন আল্লাহর কাছে শয়তানের থেকে আশ্রয় প্রার্থনা কর. কারণ শয়তানকে দেখতে পাবার কারণেই তারা চিৎকার করে।” (বুখারী, ৬/৩৫০. মুসলিম ১৭/৪৭)
জ্বীনদের চলাচলের সময়
জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল(সঃ) বলেছেন-
“যখন রাত নামে (সন্ধ্যার শুরুতে) তোমাদের সন্তানদের ঘরের বাইরে যেতে বারণ কর। কারণ শয়তান এই সময়ে বের হয়। এক ঘণ্টা পার হলে সন্তানদের যেতে দিও এবং আল্লাহর নাম নিয়ে ঘরের দরজাগুলো বন্ধ কর। কারণ শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। তারপর আল্লাহর নাম নিয়ে পানির পাত্রের মুখ বন্ধ কর। এরপরে আল্লাহর নাম নিয়ে খাবারের পাত্রগুলো ঢেকে রাখো। যদি ঢেকে রাখার কিছু না পাওয়া যায়, তবে অন্তত অন্য কিছু উপরে দিয়ে রাখো (কাঠ/বই ইত্যাদি)। এবং রাতে শোবার সময়ে কুপি বাতি নিভিয়ে শুতে যেও।” (বুখারী, ১০/৮৮. মুসলিম ১৩/১৮৫)
প্রাণীর আকার বা রূপধারণ
ইসলাম ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী জ্বীনেরা মানুষের আকার ধারণ করতে পারে এবং মানুষের মত কথা বলতে পারে। মানুষ ছাড়াও অন্যান্য প্রাণীর আকারও ধারণ করতে পারে বলে হাদীসে বলা হয়েছে।
আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত দীর্ঘ একটি হাদীসে এক দুষ্ট লোকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে যে প্রতি রাতে যাকাতের মাল চুরি করতে আসতো। আবু হুরায়রা প্রতি রাতেই তাকে ধরে ফেলতেন। কিন্তু লোকটি বিভিন্ন অনুরোধ করে মাফ নিয়ে চলে যেত এবং পরের রাতে আবার চুরি করতে আসতো। পরপর তিন রাতে সেই মানুষটিকে ধরার পরে রাসুল(সঃ) কে ঘটনা অবহিত করলে তিনি আবু হুরায়রা কে জিজ্ঞেস করেন, “ওহে আবু হুরায়রা, তুমি কি জানো তুমি এই তিন রাতে কার সাথে কথা বলেছ? ওটা শয়তান ছিল।” (বুখারী, ৩২৭৫)
বদরের যুদ্ধের সময় ইবলিশ শয়তান মক্কার কুরাইশদের কাছে বানু কিনানাহর গোত্রসর্দার সূরাক্বা ইবনে যুশাম এর আকার ধরে গিয়ে তাদেরকে রাসুল(সঃ) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার প্ররোচনা দিয়েছিল। (ইবনে কাসীর, আল বিদায়া ওয়াল নিহায়া, ৫/৬২)
আবু সাইদ খুদরী থেকে বর্ণিত, রাসুল(সঃ) বলেছেন-
“মদিনার কিছু সংখ্যক জ্বীন মুসলমান হয়েছে। এদেরকে (প্রাণী হিসেবে) যদি কেউ দেখো, তাহলে তিনবার সাবধান করবে। তারপরেও আবার এলে সেই প্রাণীকে হত্যা করবে।” (মুসলিম, ২২৩৬)
সাহর
মানুষের ওপর জ্বীন ভর করাকে সাহর বলা হয়। এটি এমন একটি অবস্থা যখন মানুষের নিজের ওপর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং সাময়িক স্মৃতি বিভ্রম ঘটে। একে আসর করাও বলে। কুরআনে বলা হয়েছে,
“যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়।” (সূরা বাক্বারা, ২৭৫)
হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে- রাসুল(সঃ) বলেছেন,
“শয়তান আদম সন্তানের শরীরে প্রবাহিত হয়, যেমন রক্ত শরীরে প্রবাহিত।” (বুখারী, ৩৩/২৫১। মুসলিম, ২১৭৫)। ইমাম আহমদের ছেলে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, “আমি আমার বাবা (ইমাম আহমাদ) কে বললাম- কিছু মানুষ মানুষের শরীরে জ্বীনের ভর করাকে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন- ও আমার সন্তান, তারা মিথ্যা বলছে। আসর করা অবস্থায় অসুস্থ লোকের মুখ দিয়ে জ্বীন কথাও বলতে পারে।” (মাজমু ফতোয়া- ইবনে তাইমিয়াহ ১৯/১২)
অন্য হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, রাসুল(সঃ) একবার একটি অসুস্থ বালকের সাক্ষাত পেয়েছিলেন যার ওপর জ্বীনের ভর ছিল। রাসুল ছেলেটির দিকে ফিরে জোরে বলেন- “ও আল্লাহর শত্রু, বের হয়ে আসো। ও আল্লাহর শত্রু, বের হয়ে আসো। ছেলেটি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।” (ইবনে মাজাহ, ৩৫৪৮। আহমদ ৪/১৭১, ১৭২)।
পুরাতন নিয়ম এ যে হিব্রুশব্দকেইংরেজিতে সাধারণত “ফ্যামিলিয়ার স্পিরিট” ( Strong's Concordance|স্ট্রং]] #0178) বলা তা ভ্যান ডিকের আরবি অনুবাদে সমষ্টিবাচক বহুবচন হিসেবে কয়েক জায়গায় (الجانআল-জান) হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।[২৬]
Untuk kegunaan lain, lihat Aku Jatuh Cinta. Aach... Aku Jatuh Cinta!SutradaraGarin NugrohoAldo Swastia (Asst. Sutradara)Produser Raam Punjabi Ditulis oleh Garin Nugroho PemeranPevita PearceChicco JerikhoNova ElizaBima AzrielAnnisa HertamiSinematograferBatara GoemparPenyuntingAndhy PulungPerusahaanproduksiMultivision PlusDistributor Vidio Prime Video Tanggal rilis5, 6, dan 9 Oktober 2015 (Festival Film Internasional Busan)4 Februari 2016 (Indonesia)Durasi90 menitNegara Indonesia Bahasa Indones...
American carbonated beverage This article needs additional citations for verification. Please help improve this article by adding citations to reliable sources. Unsourced material may be challenged and removed.Find sources: Mug Root Beer – news · newspapers · books · scholar · JSTOR (February 2013) (Learn how and when to remove this template message) Mug Root BeerProduct typeRoot beerOwnerPepsiCo (1986–present)Produced byNew Century Beverage Co....
American air-to-surface missile AGM-114 Hellfire A model of Longbow Hellfire's componentsTypeAir-to-surface and surface-to-surface missilePlace of originUnited StatesService historyIn service1984–presentWarsWar on Terror1991 Gulf WarRussian Invasion of UkraineProduction historyManufacturerLockheed Martin, Boeing (prior second source), and Northrop Grumman (seeker only for AGM-114L Longbow Hellfire)Unit costUS$150,000[1] (FY 2021)US$117,000 (FY2017)[2]Prod...
Secita CeritaAlbum studio karya Achmad AlbarDirilis1981Direkam?GenrepopDurasi?LabelSky RecordsMusica Studio's (rilisan ulang 2021)Kronologi Achmad Albar ?String Module Error: Match not foundString Module Error: Match not found Secita Cerita 1981 Langkahkan Pasti 1982String Module Error: Match not foundString Module Error: Match not found Secita Cerita adalah album dari penyanyi Achmad Albar yang dirilis dengan label Sky Records. Album ini merupakan kerjasama Albar dengan Fariz RM. Daftar ...
هذه مقالة غير مراجعة. ينبغي أن يزال هذا القالب بعد أن يراجعها محرر مغاير للذي أنشأها؛ إذا لزم الأمر فيجب أن توسم المقالة بقوالب الصيانة المناسبة. يمكن أيضاً تقديم طلب لمراجعة المقالة في الصفحة المخصصة لذلك. (يوليو 2020) كلية ترينيتي (كونيتيكت) معلومات التأسيس 1823 الكليا...
List of atomic weapons exploded in Australia Map showing nuclear test sites in Australia The United Kingdom conducted 12 major nuclear weapons tests in Australia between 1952 and 1957. These explosions occurred at the Montebello Islands, Emu Field and Maralinga.[1] Sites Memorial tablet in Paisley remembering the people concerned in the tests The British conducted testing in the Pacific Ocean at Malden Island and Kiritimati known at the time as Christmas Island (not to be confused wit...
Roman Catholic diocese in Paraguay Not to be confused with Roman Catholic Diocese of Villarrica in Chile. Diocese of Villarrica del Espíritu SantoDioecesis Villaricensis Spiritus SanctiLocationCountryParaguayMetropolitanAsunciónStatisticsArea13,342 km2 (5,151 sq mi)Population- Total- Catholics(as of 2004)293,500290,140 (98.9%)InformationRiteLatin RiteCurrent leadershipPopeFrancisBishopAdalberto Martínez FloresMap The Roman Catholic Diocese of Villarrica del Es...
Untuk hewan, lihat Belut. Belut asap Unadon, masakan belut khas Jepang Belut merupakan ikan yang menjadi salah satu bahan makanan di dunia. Belut dewasa memiliki ukuran yang bervariasi dari 5 cm hingga 4 meter tergantung spesiesnya.[1] Ikan ini tidak memiliki sirip pelvis, dan beberapa spesies tidak memiliki sirip pektoral. Sirip dorsal dan sirip anus bersatu dengan sirip ekor membentuk satu sirip yang memanjang di sepanjang tubuhnya.[2] Sebagian besar spesies belut hidup...
Untuk Nina Bobo sebagai lagu anak, lihat Nina Bobo.Lullaby oleh François Nicholas Riss [fr] Ninabobo[1], dodoi[2] atau rima-bobo[3] adalah lagu pengantar tidur untuk anak-anak.[1][4] Tujuan lagu ninabobo bisa beragam. Dalam masyarakat tertentu, lagu ninabobo dimanfaatkan untuk mewariskan pengetahuan tentang budaya atau tradisi. Lain daripada itu, ninabobo juga sering digunakan untuk mengembangkan kemampuan komunikasi, emosional dan perhati...
This article needs to be updated. Please help update this article to reflect recent events or newly available information. (December 2021) Turkish-German footballer Esra Sibel Tezkan Esra Sibel Tezkan playing for Turkey women's national (April 2016)Personal informationDate of birth (1993-02-23) February 23, 1993 (age 30)Place of birth Bremerhaven, GermanyPosition(s) DefenderTeam informationCurrent team Bergisch Gladbach 09Youth career2004–2008 Fortuna KölnSenior career*Years Team Apps...
Equipment used to transfer heat between fluids Tubular heat exchanger Partial view into inlet plenum of shell and tube heat exchanger of a refrigerant based chiller for providing air-conditioning to a building A heat exchanger is a system used to transfer heat between a source and a working fluid. Heat exchangers are used in both cooling and heating processes.[1] The fluids may be separated by a solid wall to prevent mixing or they may be in direct contact.[2] They are widely ...
Public university in Kent, Ohio, US Not to be confused with University of Kent. Kent State UniversityFormer nameOhio State Normal College At Kent (1910–1911)Kent State Normal School (1911–1915)Kent State Normal College (1915–1929)Kent State College (1929–1935)TypePublic research universityEstablishedSeptember 27, 1910; 113 years ago (1910-09-27)[1]Parent institutionUniversity System of OhioAcademic affiliationsNortheast Ohio Medical UniversitySpace-grantEndow...
Cancelled British interceptor aircraft design This article possibly contains original research. Please improve it by verifying the claims made and adding inline citations. Statements consisting only of original research should be removed. (November 2010) (Learn how and when to remove this template message) P.1103 Model of P.1103 on display at the Royal Air Force Museum Cosford Role InterceptorType of aircraft National origin United Kingdom Manufacturer Hawker Aircraft Status Design only Numbe...
Penegak Bantara adalah tingkatan Syarat-syarat Kecakapan Umum pertama dalam satuan Pramuka Penegak sebelum Penegak Laksana. Golongan Pramuka Penegak yang belum menyelesaikan Syarat-syarat Kecakapan Umum (SKU) Penegak Bantara belum dianggap sebagai Pramuka Penegak dan disebut sebagai “Tamu Ambalan”, atau “Tamu Penegak” Syarat Untuk mencapai tingkat Penegak Bantara, calon Penegak harus memenuhi Syarat Kecakapan Umum (SKU) sebagai berikut: Spiritual Untuk yang beragama Islam: Dapat menje...
Tom MischTom Misch performing live at The NovoBackground informationBirth nameThomas Isaac Misch[1]Also known asSupershyBorn (1995-06-25) June 25, 1995 (age 28)[2][3]London, EnglandGenres Neo soul[4] nu jazz funk jazz[5] hip-hop[6][5] electronic[5] jazz-funk acid jazz R&B jazz rap ambient nu-disco alternative Instrument(s)Vocalsguitarviolindrumsbass guitarsaxophoneYears active2012–presentLabels Beyond the Groove Blue N...
Grand Prix Malaysia 2017Detail lombaLomba ke 17 dari 18Grand Prix Sepeda Motor musim 2017Tanggal29 Oktober 2017Nama resmiShell Malaysia Motorcycle Grand Prix[1]LokasiSepang International Circuit, Sepang, MalaysiaSirkuitFasilitas balapan permanen5.543 km (3.444 mi)MotoGPPole positionPembalap Dani Pedrosa HondaCatatan waktu 1:59.212 Putaran tercepatPembalap Andrea Dovizioso DucatiCatatan waktu 2:13.084 di lap 13 PodiumPertama Andrea Dovizioso DucatiKedua Jorge Lore...
1998 single by Brandy Top of the WorldSingle by Brandy featuring Masefrom the album Never Say Never ReleasedJuly 7, 1998 (1998-07-07)GenreR&B[1]Length4:41LabelAtlanticSongwriter(s)LaShawn DanielsFred Jerkins IIIRodney JerkinsIsaac PhillipsNycolia TurmanMason BethaProducer(s)Rodney JerkinsBrandyBrandy singles chronology The Boy Is Mine (1998) Top of the World (1998) Have You Ever? (1998) Mase singles chronology Lookin' at Me(1998) Top of the World(1998) Take ...
Official state cars for the British Monarch Motor vehicle Bentley State LimousineNote the monarch's personal English mascot made by Edward Seago of St George slaying the dragon. The mascot is changed to match the car's duties.OverviewManufacturerBentleyProduction20022 producedBody and chassisClassFull-size luxury car Limousine Official state carBody style4-door landaulet saloonLayoutFR layoutDoorsConventional doors (front)Coach doors (rear)PowertrainEngineRolls-Royce – Bentley L Series...
Опис Серце закоханих Джерело НЕ Официальный сайт истории города Херсона Час створення Невідомий Автор зображення Костянтин Сухенко Ліцензія Цей твір поширюється на умовах ліцензії Creative Commons Attribution-Share Alike 4.0. Коротко: ви можете вільно поширювати цей твір, змінюва...