ক্যামি স্মিথ
|
পূর্ণ নাম | ক্যামেরন উইল্বারফোর্স স্মিথ |
---|
জন্ম | ২৯ জুলাই, ১৯৩৩ আপার ডেরেলস, সেন্ট মাইকেল, বার্বাডোস |
---|
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি |
---|
ভূমিকা | উইকেট-রক্ষক, ম্যাচ রেফারি |
---|
|
জাতীয় দল | |
---|
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১১৩) | ৯ ডিসেম্বর ১৯৬০ বনাম অস্ট্রেলিয়া |
---|
শেষ টেস্ট | ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৬২ বনাম ভারত |
---|
|
---|
|
|
|
---|
|
ক্যামেরন উইল্বারফোর্স স্মিথ (ইংরেজি: Cammie Smith; জন্ম: ২৯ জুলাই, ১৯৩৩) বার্বাডোসের সেন্ট মাইকেল এলাকার আপার ডেরেলস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ম্যাচ রেফারি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৩ থেকে ২০০২ সময়কালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে বার্বাডোস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিং করতেন ক্যামি স্মিথ।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
১৯৫১-৫২ মৌসুম থেকে ১৯৬৪-৬৫ মৌসুম পর্যন্ত ক্যামি স্মিথের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। অকুতোভয়, আক্রমণধর্মী ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যামি স্মিথ যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছিলেন। দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলিংয়ের বিপক্ষে চমৎকার খেলতেন। তবে, স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে যথেষ্ট দূর্বলতা লক্ষ্য করা যায়। ১৯৫০-এর দশকে বার্বাডোস দলে নিয়মিতভাবে খেলতেন। এ পর্যায়ে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন অথবা তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামতেন।
ব্রিজটাউনের হ্যারিসন কলেজে অধ্যয়ন করেছেন তিনি। ১৮ বছর বয়সে বার্বাডোসের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৯৫১-৫২ মৌসুমে ব্রিটিশ গায়ানার বিপক্ষে অভিষেক ঘটা ঐ খেলায় তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে তিনি ৮০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।[১] পরের খেলায় জ্যামাইকার মুখোমুখি হন। দ্বিতীয় উইকেটে কনরাড হান্টের সাথে ২৪৩ রানের জুটি গড়েন। নিজে করেন ১৪০ রানের মনোরম শতরান। ঐ খেলায় তার দল ইনিংস ব্যবধানে বড় ধরনের জয় পেয়েছিল।[২]
১৯৫৮ সালে জ্যামাইকার বিপক্ষে একটি খেলায় ১১৬ রান তুলেন। ঐ একই খেলায় উইকেট-রক্ষণের দায়িত্বে থেকে ছয়টি ক্যাচ গ্লাভস বন্দী করেছিলেন ক্যামি স্মিথ[৩] ১৯৬১-৬২ মৌসুমের শুরুতে ১২৭ রানের ইনিংস খেলে যাত্রা শুরু করেন। জ্যামাইকার বিপক্ষে ঐ খেলার প্রথম উইকেট জুটিতে ২৪৪ রান সংগৃহীত হয়েছিল। ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড স্পর্শ করেন। ত্রিনিদাদের বিপক্ষে ১৪০ রান তুলেন। এ পর্যায়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সেম্যুর নার্সের সাথে ৩১৮ রান সংগ্রহ করেন।[৪]
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পাঁচটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ক্যামি স্মিথ। ৯ ডিসেম্বর, ১৯৬০ তারিখে ব্রিসবেনে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬২ তারিখে পোর্ট অব স্পেনে সফরকারী ভারত দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
১৯৬০-৬১ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। ব্রিসবেনে সিরিজের প্রথম টেস্টে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেক ঘটে তার। ৭ ও ৬ রান তুলতে সক্ষম হন। দ্বিতীয় টেস্টে তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। তৃতীয় টেস্টে দলে পুনরায় অন্তর্ভূক্তি ঘটে তার। ১৬ ও ৫৫ রান করেন। তন্মধ্যে, চতুর্থ উইকেটে জুটিতে ফ্রাঙ্ক ওরেলের সাথে সাতষট্টি মিনিটে দৃষ্টিনন্দন ১০১ রান তুলেন।[৫] ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ২২২ রানে বিজয়ী হয়। পরবর্তীতে এটিই টেস্টে তার একমাত্র অর্ধ-শতরানের ইনিংস হিসেবে রয়ে যায়। সিরিজের শেষ দুই টেস্টে ২৮, ৪৬, ১১ ও ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন। ফ্রাঙ্ক মিসনের বলে ফাইন লেগ অঞ্চল দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে অর্ধ-শতরানের জুটি গড়তে তিনি ও হান্ট বেশ কিছু মিনিট ব্যয় করেন।[৬]
১৯৬১-৬২ মৌসুমে ভারত দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করে। পোর্ট অব স্পেনে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ১২ ও অপরাজিত ৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন। জ্যাকি হেনড্রিক্সের পরিবর্তে অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে রুসি সুর্তিকে স্ট্যাম্পিং করেছিলেন তিনি।[৭] দ্বিতীয় টেস্টে ইস্টন ম্যাকমরিসের কাছে ব্যাটিং উদ্বোধনের বিষয়টি হাতছাড়া হয়ে যায়। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশ নিতে দেখা যায়নি।
অবসর
১৯৬৪ সালের শেষদিকে স্যার ফ্রাঙ্ক ওরেল একাদশের সদস্যরূপে তিনটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পূর্বে ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে কমনওয়েলথ একাদশের সদস্যরূপে ভারতে একটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। ১৯৬৫, ১৯৬৬ ও ১৯৬৭ সালে ইন্টারন্যাশনাল ক্যাভেলিয়ার্সের সদস্যরূপে ইংল্যান্ডের মাটিতে কয়েকটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন।
বীমা কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন ক্যামি স্মিথ।[৮] ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কয়েকবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের ব্যবস্থাপকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এছাড়াও ১৯৯৩ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে ৪২টি টেস্ট ও ১১৮টি ওডিআইয়ে আইসিসি’র ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৯] বার্বাডোসের ক্রিকেটের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন তিনি।
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ