কোহি সুলতান পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের একটি আগ্নেয়গিরি। এটি ভারত ও এশিয়ার টেকটোনিক বেল্টের সংঘর্ষের ফলে সৃষ্ট বেল্টের অংশ। বিশেষত এরাবিয়ান প্লেটের চাপের ফলে এশিয়ান প্লেটে যে সাবডাকশন ঘটে যার ফলে যে আগ্নেয়গিরি সারির জন্ম হয়, এটি তার অংশ, যার মধ্যে রয়েছে ইরানের ব্যাজম্যান ও তাফতানও রয়েছে।আগ্নেয়গিরিটির ৩ টি মূল জ্বালামুখ রয়েছে, এগুলোর ভারীমাত্রার লাভাস্রোত উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়, এবং এগুলো বেশকিছু শাখা আগ্নেয় উৎস দ্বারা বেষ্টিত। কোহি সুলতানের চূড়া ২৩৩৪ মিটার (৭৬৫৬ ফুট) উঁচু এবং মিরি জ্বালামূখের ভেতরে মধ্যে আরেকটি ছোট জ্বালামুখ আছে।
আগ্নেয়গিরিটি গঠিত হয়েছে আ্যন্ডেসাইট ও ড্যাসাইট শিলা দ্বারা, এই শিলাগুলো মূলত লাভাস্রোতের উপরে অবস্থান করে। শিলাগুলোর মধ্যে আগ্নেয়গিরি উৎক্ষিপ্ত শিলাগুলির মতই চিরাচরিত ধরন দেখা যায়, যেখানে আ্যন্ডেসাইট নিক্ষিপ্ত হবার পর অল্পসময়েই ড্যাসাইটে রুপান্তরিত হয়। পটাশিয়াম-আর্গন ডেটিং এর সাহায্যে দেখা গেছে যে, এই শিলাগুলোর বয়স প্রায় ৫৯০০০০ থেকে ৯০০০০ বছর। আগ্নেয়গিরিটির পাদদেশে বিশাল খন্ডিত শিলাস্তুপ দেখা যায়, যা বাকানো শিলার কাঠামো তৈরী করেছে। মূলত দীর্ঘসময়ের শিলা ক্ষয়ের ফলে সৃষ্ট এই শিলা কাঠামোগুলো প্রথম দিকের পরিব্রাজকদের মুগ্ধ করতো। নেজা ই সুলতান এরকম একটি সুপরিচিত শিলা কাঠামো।
ভূঅভ্যন্তরের উত্তাপ এবং আগ্নেয় গ্যাসের নিঃসরণ এখনও চলমান এবং আগ্নেয়গিরিটির ভূউত্তাপজনিত শক্তি সঞ্চিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এরফলে বিপুল পরিমাণে শিলার রুপান্তর ঘটছে ও সালফারের মজুদ তৈরী হচ্ছে। এই বিষয়ের উল্লেখ ১৯০৯ সালের রিপোর্ট ও পরবর্তী সময়ের খননের প্রতিবেদনে আছে। কোহি সুলতানে অন্যান্য খনিজেরও মজুদ আছে।
ভূগোল ও ভূতত্ত্ব
রাজনৈতিক ভূগোল ও মানব ইতিহাস
কোহি সুলতানের অবস্থান পাকিস্তানের [১] বেলুচিস্তানের কোয়েটা বিভাগের [২] চাগাই জেলায়। ৩৭ কিলোমিটার (২৩ মাইল) [৩][৪] দক্ষিণে অবস্থিত নক্কুন্ডি রেলওয়ে স্টেশন হল এর নিকটবর্তী একটি বসতি। ১৮৬২ সালে [৫] হেনরী ওয়াল্টার বেলিউ প্রথম আগ্নেয়গিরিটির অস্তিত্ব সমন্ধে রিপোর্ট করেন এবং ভারতের ভূতাত্তিক জরিপ অধিদপ্তর ১৯৪১ থেকে ১৯৪৪ [৬] সালের মধ্যে খনিজ ও কৌশলগত জরিপ করে। ১৯৬১ সালে নক্কুন্ডি থেকে আগ্নেয়গিরির চূড়া পর্যন্ত [৭] একটি ট্রাক যাতায়াতের রাস্তা তৈরী করা হয়। স্থানীয় বেলুচি একজন সাধুর নামানুসারে চূড়াটির যে নাম রাখা হয় অনুবাদ করলে তার অর্থ হয় “পর্বতের রাজা”। [৫]
আঞ্চলিক
ভারত ও এশিয়ার সক্রিয় টেকটোনিক বেল্টের সংঘর্ষের ফলে উৎপন্ন হয় হিমালয়ের, আর সেই টেকটোনিক বেল্টের অংশ পাকিস্তান। আর এই কার্যক্রমের ফলে পাকিস্তান জুড়েই জলের তাপ পরিবর্তন ও জলের তাপের সক্রিয়তার ব্যাপক পরিবর্তন প্রত্যাশিত বিষয়। কোহি সুলতান পাকিস্তানের সবচেয়ে তরুণ আগ্নেয়গিরি।
স্থানীয়
কোহি সুলতান একটি বিসতৃত আগ্নেয় পাহাড়ের সমষ্টি, যার অন্তত তিনটি জ্বালামুখ আছে, যেগুলির নাম তাদের চূড়ার নাম অনুসারে রাখা হয়েছে কানসুরি, আবু এবং মিরি।প্রত্যেকের একটি প্রধান গহ্বর আছে, সবচেয়ে বড়টি ৫ কিলোমিটারেরও বেশি প্রশস্ত এবং ব্যপকভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত। কোহি সুলতানের শৃঙ্গ ২৩৩৪ মিটার (৭৬৫৬ ফুট) উচুু এবং সবচেয়ে নবীন মিরি জ্বালামুখটি ২৩৩৩ মিটার (৭৬৫৪ ফুট) উচু। এর গহ্বর স্তর বিশিষ্ট ; বহি:গহ্বরের পরিধি ৬.৫ কিলোমিটার(৪.০ মাইল) এবং অন্ত;গহ্বর, যা বিভিন্ন পরিবর্তনের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে তার পরিধি ৮০০ মিটার (২৬০০ ফুট)।
তথ্যসূত্র