কেওলুন মসজিদ ও ইসলামি কেন্দ্র বা কেওলুন মসজিদ হংকংয়ের পাঁচটি প্রধান মসজিদের মধ্যে একটি।[২] কেওলুনে, নাথান রোড এবং হাইফং রোডের সংযোগস্থলে সিম শা সুই এলাকার কেওলুন পার্কের পাশে এই মসজিদটি অবস্থিত। বর্তমানে এটি হংকংয়ের বৃহত্তম মসজিদ। মসজিদটিতে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাতের সাথে অনুষ্ঠিত হয় এবং ৩,৫০০ জন মুসল্লি একই সময়ে সালাত আদায় করতে সক্ষম।
ইতিহাস
কেওলুন মসজিদ ও ইসলামি কেন্দ্রটি ১৮৯৬ সালে প্রথম হংকং রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠা করেছিলো, যেখানে এখন সিম শা সুই থানা অবস্থিত। এটি মূলত ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ভারতীয় মুসলিম সেনাদের সেবা দেওয়ার জন্য নিকটবর্তী হুইটফিল্ড ব্যারাকসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো যা বর্তমানে কেওলুন পার্ক সংলগ্ন একটি স্থান।
১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে, ভূগর্ভস্থ মেস ট্রানজিট রেলপথ নির্মাণের কারণে ভবনটি কাঠামোগত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলো। এমটিআর কর্পোরেশনের ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুদানের সাহায্যে ১০৫ নাথান রোডে একটি নতুন মসজিদ নির্মিত হয় ও ১১ মে ১৯৮৪ সালে খোলা হয়েছিলো।
বর্তমানে মসজিদটি প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ এশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মুসলমানদের সেবা করে। তাদের মধ্যে অনেকে সিম শা সুইতেও বাস করেন, যেখানে জাতিগত সংখ্যালঘুরা বসতি স্থাপন করেছে। এটাও ব্যাখ্যা করে যে হংকংয়ের অ-চীনা মুসলিমদের জন্য এটি একটি সাংস্কৃতিক অংশ হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[৩]
কেওলুন মসজিদের বিপরীত পাশে চুংকিং ম্যানশনে বিক্রেতারা দক্ষিণ এশীয় পণ্য বিক্রি করে।[৪]
ভবন
স্থপতি আই. এম. কাদরির নকশা করা এই মসজিদটি হংকংয়ের মুসলিম সম্প্রদায়ের অনন্য পরিচয়ের প্রতিনিধিত্ব করে। সজ্জিত এবং বিস্তৃত মসজিদটির ঐতিহ্যবাহী ইসলামি স্থাপত্যগুলো নিকটবর্তী ভবনগুলোর আধুনিক স্থাপত্যের তুলনায় বিপরীত। ভবনটির সর্বাধিক বৈশিষ্ট্য হলো চারটি ১১ মিটার উঁচু মিনার যা উপরের চত্বরটির কোণগুলোকে চিহ্নিত করে এবং ফুটপাথ ও সম্মুখভাগে সাদা মার্বেলের ব্যাপক ব্যবহার।
তিনটি প্রার্থনা হল ও একটি কমিউনিটি হল ছাড়াও মসজিদটিতে একটি মেডিকেল ক্লিনিক ও একটি গ্রন্থাগার রয়েছে। প্রথম তলার প্রধান প্রার্থনা হলটিতে ১০০০ জন মুসল্লি সালাত আদায় করতে সক্ষম। উপরের তলায় মহিলাদের একটি ছোট প্রার্থনা হল রয়েছে এবং একটি চত্বর দ্বারা বেষ্টিত। এই উপরের হলটির শীর্ষে ৫ মিটার ব্যাস এবং ৯ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট একটি গম্বুজ রয়েছে।
কর্মরত ব্যক্তিবর্গ
হংকংয়ের প্রধান ইমাম মুফতি মুহাম্মদ আরশাদ (ইসলামি পড়াশুনায় এম-এ) ২০০১ সাল থেকে এই মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
যাতায়াত
মসজিদটি সিম শা সুই স্টেশনের বের হওয়ার গেইট এ১ এর নিকটে (ভূগর্ভস্থ রাস্তা দিয়ে পূর্ব সিম শা সুই স্টেশনের সাথে সংযুক্ত) অবস্থিত।এছাড়া সেখানে সুয়েন ওয়ান লাইন বা পশ্চিম রেললাইন দিয়েও সেখানে পৌঁছানো যেতে পারে (যদি আপনি স্টেশন দিয়ে পূর্ব সিম শা সুই স্টেশন যান তবে)।
মসজিদের বাইরে একটি বাসস্টপও রয়েছে, যেখানে কেওলুন, নিউ টেরিটরিজ এবং হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন গন্তব্যের বাস রয়েছে। এই স্টপটি কেওলুন মসজিদ বা কেওলুন পার্ক (যা মসজিদ সংলগ্ন) হিসেবেও পরিচিত।
জল কামান আক্রমণ
২০ অক্টোবর ২০১৯ এ ইএলবি বিরোধী আন্দোলনের সময়, হংকং পুলিশ ফোর্সের একটি যন্ত্রণাদায়ক নীল রঙ দিয়ে ভরা জল কামান দুইবার ইসলামি কেন্দ্রে স্প্রে করেছিল।[৫][৬]
তথ্যসূত্র