কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়

কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়
জন্ম(১৯৩৫-১০-০১)১ অক্টোবর ১৯৩৫
কলকাতা, বাংলা প্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু২৩ মে ২০০৯(2009-05-23) (বয়স ৭৩)
দক্ষিণ দিল্লী, ভারত
পেশাকণ্ঠশিল্পী
ভাষাবাংলা
জাতীয়তাভারতীয়
ধরনগান
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিঅতুলপ্রসাদী, দ্বিজেন্দ্রগীতি, রবীন্দ্রসঙ্গীত, বাংলা আধুনিক গান

কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায় (১ অক্টোবর, ১৯৩৫ – ২৩ মে, ২০০৯) একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী তথা বাংলা কাব্যগীতির জগতে এক প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব। অতুলপ্রসাদ এবং দ্বিজেন্দ্রলালের গানে বিশেষ খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা অর্জন করা এই শিল্পী রজনীকান্ত সেন, দিলীপকুমার রায়, হিমাংশু দত্তের গান তথা রবীন্দ্রসংগীত ও বাংলা আধুনিক গানেও সমান পারদর্শী ছিলেন।[]

সঙ্গীতজীবন

কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়ের পিতা হরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সেযুগের একজন বিশিষ্ট অতুলপ্রসাদী শিল্পী। কলকাতায় পিতৃগৃহের সাঙ্গীতিক পরিবেশে বেড়ে ওঠা কৃষ্ণার অতুলপ্রসাদের গানে তালিম পেয়েছিলেন পিতার হাতেই। তবে কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়ের পারিবারিক আদিনিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে। তবে তার ছেলেবেলা কাটে কলকাতার পৈত্রিক বাড়িতে। পিতা হরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সেযুগের বিশিষ্ট অতুলপ্রসাদী গায়ক। অতুলপ্রসাদের গানে কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়ের তালিম পিতার কাছেই। যদিও তার প্রথম রেকর্ড ছিল দ্বিজেন্দ্রগীতির। ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত এই গ্রামোফোন ডিস্কে এক পিঠে প্রকাশিত হয় দ্বিজেন্দ্রলালের ‘সে কেন দেখা দিল রে’ ও অপর পিঠে ‘মলয় আসিয়া কয়ে গেছে কানে’।

দ্বিজেন্দ্রগীতির শিক্ষা কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায় পেয়েছিলেন দ্বিজেন্দ্রলালের পুত্র তথা তার পিতৃবন্ধু দিলীপকুমার রায়ের কাছ থেকে; যদিও তার কাছে সরাসরি গান শেখেননি তিনি। সঙ্গীতবিশেষজ্ঞ শোভন সোমের মতে,

...তাঁর (দ্বিজেন্দ্রলাল রায়) দেশাত্মবোধক গানগুলি ছাড়া ডিস্‌কে কাব্যগীতিগুলি নাটুকে ঢঙে গাইতেন গত শতকের গোড়ার দিকের পেশাদার মঞ্চের অভিনেত্রীরা। দ্বিজেন্দ্রলালের গানে পরিশীলিত মাত্রা ও গাম্ভীর্য যোগ করে যে দুজন গায়িকা গত শতকের (বিশ শতক) মাঝামাঝি এই গানকে নতুন করে জনপ্রিয় করে তোলেন তাঁরা ছিলেন মঞ্জু গুপ্ত ও কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়। কৃষ্ণার কণ্ঠে দ্বিজেন্দ্রলালের খেয়ালাঙ্গ ও কীর্তনাঙ্গ দু’ধরনের গানই নবতর সৌন্দর্যে সঞ্জীবিত হয়েছিল। কৃষ্ণা ছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের ও অতুলপ্রসাদ সেনের গানের অন্যতম ব্যাখ্যাতা। তাঁরই কথায় পরবর্তীকালের স্বরলিপির চেয়ে তিনি বেশি নির্ভর করতেন গুরুমুখী বিদ্যার উপর।[]

কৃষ্ণধন বন্দ্যোপাধ্যায়ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম নেন কৃষ্ণা। রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। উল্লেখ্য, কণিকা অতুলপ্রসাদী শিখেছিলেন কৃষ্ণার পিতা হরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নিকট। আবার কমল দাশগুপ্তসলিল চৌধুরীর তালিমেও ডিস্কে গান গেয়েছিলেন কৃষ্ণা।

শেষ জীবন

২০০১ সালে গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষ্ণা বাকশক্তি রহিত হন। এরপর প্রায় আটবছর রোগভোগ করার পর জীবনের শেষদিনগুলি অতিবাহিত করেন দক্ষিণ দিল্লিতে কনিষ্ঠ পুত্র বিক্রমজিৎ রায়ের বাসভবনে। অবশেষে ২০০৯ সালের ২৩ মে ৭৪ বছর বয়সে এই কিংবদন্তি শিল্পীর জীবনাবসান ঘটে।

প্রকাশনা

তার বিখ্যাত সিডি অ্যালবামগুলির মধ্যে সবারে বাসরে ভাল (অতুলপ্রসাদী) ও অনন্ত মহিমা তব (রজনীকান্তের গান) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

পাদটীকা

  • স্মরণ: কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৫ – ২০০৯), শোভন সোম, দেশ , ২ জুন, ২০০৯ সংখ্যা

তথ্যসূত্র

  1. "বুকের কাছে বাজল যে বীণ"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১২ 
  2. স্মরণ: কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায় (১৯৩৫ – ২০০৯), দেশ , ২ জুন, ২০০৯ সংখ্যা

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!