কার্বন কর হল জ্বালানি ব্যবহারের ফলে নির্গত কার্বনের উপর ধার্যকৃত কর।[১]কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপাদনের জন্য তথা পরিবেশ দূষিত করার জন্য জ্বালানি ব্যবহারকারীকে যে কর দিতে হয় প্রথাগতভাবে তাই কার্বন কর হিসেবে গণ্য কর হয়। পেট্রোল, ডিজেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাসসহ প্রায় সকল জীবাশ্ম জ্বালানিতেই কার্বন বিদ্যমান এবং তা পুড়িয়ে শক্তি উৎপাদন করলে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়। অপরদিকে কিছু কিছু নবায়নযোগ্য শক্তি যেমন বায়ু শক্তি, সৌর বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ এবং পারমাণবিক বিদ্যৎ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয় না। কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং কার্বন মনোক্সাইড নির্গত হয়ে পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়লে তা পৃথিবীর তাপকে ধরে রাখে যার ফলে পৃথিবীতে তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে পৃথিবীর নিম্নাংশ প্লাবিত করে দিতে পারে। একে গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া বলে। যেহেতু কার্বনের নিঃসরণই এই প্রতিক্রিয়ার প্রধান কারণ, তাই কার্বন-সম্পন্ন জ্বালানি ব্যবহারের উপর অনেক উন্নত দেশে কর আরোপ করা হয়।[২][৩][৪]
কার্বন কর আরোপ করার মাধ্যমেই সবচেয়ে স্বল্প ব্যয়ে কার্বনের নিঃসরণ কমানো সম্ভব। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বিবেচনা করলে কার্বন কর হল একটি প্রতিক্রিয়াশীল কর কারণ কার্বনের নিঃসরণের ফলে যে পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে, কর উত্তোলনের মাধ্যমে তার ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব নয়। এই করের আরোপের একমাত্র উদ্দেশ্য হল জনগণকে কার্বন-সম্পন্ন জ্বালানি ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা। অপর দিক দিয়ে বিবেচনা করলে কার্বন কর একটি প্রত্যাবর্তনশীল কর। এটি প্রত্যাবর্তনশীল কর এই কারণে যে গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে উত্তোলিত কর থেকে সহায়তা প্রদান করা যেতে পারে।
কার্বন কর নীতির বিরুদ্ধেও অনেক ধরনের প্রচারণা ও বিতর্ক রয়েছে। অনেকের মতে সব ক্ষেত্রে কার্বন কর আরোপ করা হলে জ্বালানি ব্যবহারকারী অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বা তাদের লাভ কমে যেতে পারে। এতে করে অনেক মানুষ বেকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া কার্বন করের কল্যাণে মানুষ যদি ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে দেয় তাহলে যানবাহন শিল্পও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে এবং এথেকেও বেকারত্বের হার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনের অনেক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানি শুরু থেকেই কার্বন করের বিরোধিতা করে আসছে।
↑Bashmakov, I.; ও অন্যান্য (২০০১)। "6.2.2.2.1 Collection Point and Tax Base"। B. Metz; ও অন্যান্য। Policies, Measures, and Instruments। Climate Change 2001: Mitigation. Contribution of Working Group III to the Third Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change। Print version: Cambridge University Press, Cambridge, UK, and New York, N.Y., U.S.A.. This version: GRID-Arendal website। ২০১৩-১২-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৪-০৮।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: ও অন্যান্য স্পষ্টভাবে ব্যবহার করছে (link)