কাটাগড়ের মেলা ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড় গ্রামে আয়োজিত একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা।[১][২] প্রতিবছর ২৫, ২৬ ও ২৭শে মার্চ স্থানীয় সুফি সাধক শাগির শাহ দেওয়ানের মাজারকে কেন্দ্র করে এই মেলার আয়োজন করা হয়।[৩][৪]
ইতিহাস
বিভিন্ন গণমাধ্যমে অনুযায়ী কাটগড়ের মেলার বয়স প্রায় ৩০০ বছর।[৫] ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলনের আধ্যাত্মিক নেতা ছিলেন দেওয়ান শাগির শাহ। ধারণা করা হয় শাগির শাহ ১৮ শতকের গোড়ার দিকে বর্তমান ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড় গ্রামে আস্তানা গড়ে তোলেন।[৪] তার উদ্দেশ্য ছিল ইসলাম প্রচার করা।[৬] শাগির শাহ মারা যাওয়ার পর এখানে মাজার গড়ে ওঠে। প্রতিবছর ২৫, ২৬ ও ২৭শে মার্চ শাগির শাহ-এর ওরশ বা মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে তিন দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়।[৭]
মেলার সারংজাম
উনবিংশ শতকের চল্লিশের দশকের কোনো একবছর ১২ চৈত্র মৃত্যু হয় তার। তখন থেকেই এ দিবস উপলক্ষে সারাদেশ থেকে লক্ষ অধিক ভক্ত সমবেত হন কাটাগড়ে। বসে মেলা, ফকির ভক্তরা আসর জমান ভক্তিমূলক সংগীতের। নানা স্থান থেকে ভক্তরা আসেন মানত নজরানা নিয়ে। ১১ চৈত্র থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের এই মেলা ১৩ চৈত্র শেষ হলেও এর রেশ থাকে মাসব্যাপী।
বিশেষ করে ১২ চৈত্র মেলা ও মাজার প্রাঙ্গণে তিল ধারণের জায়গা থাকে না। মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য মনোরঞ্জন ও আনন্দদায়ক করার জন্য রয়েছে। সাঁজ-বাতাশার দোকান, দুই থেকে তিনশ প্রসিদ্ধ মিষ্টির দোকান ও কয়েকশো খাবার হোটেল, নাগরদোলা, ঝুলন্ত নৌকা, যাদু প্রদর্শনী, ভ্যারাইটি শো, মোটরবাইক শো, কসমেটিকস, মাটির তৈরি জিনিসপত্র, ফার্নিচার সামগ্রীসহ হরেক রকম খেলনা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থ সামগ্রীর কয়েক হাজার দোকানপাট।
অবস্থান
ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নে কাটাগড় গ্রামের অবস্থান।
কাটাগড় গ্রামের দূরত্ব আশপাশের সকল উপজেলা বাজার হতে সড়ক যোগাযোগে — ফরিদপুর শহর হতে ৪০ কিঃমিঃ, বোয়ালমারী উপজেলা শহর হতে ৮ কিঃমিঃ, আলফাডাঙ্গা উপজেলা বাজার হতে ৫ কিঃমিঃ, কাশিয়ানী উপজেলা বাজার হতে ১২ কিঃমিঃ, মুকসুদপুর উপজেলা বাজার হতে ১৫ কিঃমিঃ, সালথা উপজেলা বাজার হতে ১৮ কিঃমিঃ।
তথ্যসূত্র