ডঃ কলামন্ডলম রাধিকা একজন ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী, নৃত্য পরিকল্পক, গবেষক, শিক্ষক, লেখক এবং সমাজসেবী। তিনিই প্রথম, যিনি কেরালাবাসী না হয়েও, মোহিনীঅট্টমের জন্য কেরালা সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার জিতেছিলেন। তিনি প্রধানত একজন মোহিনীঅট্টমের শিল্পী হলেও, কুচিপুড়ি, ভরতনাট্যম, কথাকলি এবং অন্যান্য নৃত্যধারাতেও সুদক্ষ।
প্রারম্ভিক বছর এবং শিক্ষা
ডাঃ কলামন্ডলম রাধিকার জন্ম বেঙ্গালুরুতে। তাঁর পিতা কে.কে নায়ার ছিলেন একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট্যান্ট। তিনি গুরু রাজনের অধীনে তিন বছর বয়সে নাচ শিখতে শুরু করেছিলেন এবং পরে মুত্তার শ্রী নারায়ণ পানিক্কারের থেকে কথাকলি এবং গুরু পোন্নিহাপিল্লাইয়ের অধীনে মৃদঙ্গমবৈঠারি শিখতে শুরু করেন। ১৯৬০ এর দশকের শেষের দিকে, তিনি চেরুতুরুতি চলে যান এবং চার বছর কেরালা কলামন্ডলমে অবস্থান করে আবাসিক হিসেবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। চিন্মাম্মু আম্মা, কলামণ্ডলম সত্যভামা এবং কলামণ্ডলম পদ্মনাভন নায়রের অধীনে প্রশিক্ষণ তাঁকে একজন দক্ষ এবং পরিপূর্ণ নৃত্যশিল্পী হিসেবে বিকশিত করে। প্রয়াত কলামন্ডলম কল্যাণীকুট্টি আম্মার অধীনে তাঁর শিক্ষাজীবন এবং কথাকলিতে কলামন্ডলম পদ্মনাভ আশানের অধীনে তাঁর প্রশিক্ষণ তাঁকে সুদক্ষ এবং কমনীয় এক কথাকলি শিল্পী হিসেবে গড়ে তোলে।[১]
কর্মজীবন
তিনি ভারত ও বিদেশে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দুই হাজারেরও বেশি নৃত্যানুষ্ঠান করেছেন। তিনি ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক নৃত্য কাউন্সিলের সদস্য এবং তিনি ডাব্লুএইচও প্রতিনিধি, সার্ক প্রতিনিধি, কূটনীতিক, সোভিয়েত প্রতিনিধি এবং অন্যদের জন্য নৃত্যানুষ্ঠান করেছেন[২]। মোহিনীঅট্টমের গভীরতা অনুসন্ধান করতে তিনি ব্যাপক গবেষণা করেছেন এবং ১৯৪০ এর দশকের গোড়ার দিকে মোহিনীঅট্টম নৃত্যশিল্পীদের মৌলিক মুদ্রা ও পদক্ষেপ, গহনা এবং পোশাক ইত্যাদির সময়োপযোগী পরিবর্তন করেছেন[৩][৪]। তিনি ভারতে খ্রিস্টধর্মের আবির্ভাব এবং খ্রিস্টের জন্ম সহ বাইবেলের মূল বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করে নৃত্য রচনা এবং পরিবেশনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ, আটলান্টা এবং জার্মানিতে রাধিকা কর্মশালা পরিচালনা করেছেন। তিনি ইতালীয় পুরোহিত ফিরার জেরার্ড পরিচালিত বাইবেলের উপর আধারিত চলচ্চিত্র 'বিহোল্ড দাই মাদার'- এর জন্য নৃত্যরচনা করেছেন। তিনি বিভিন্ন ভাষায় পাঁচটি চোলকেত্তু, তিনটি বর্ণম এবং অসংখ্য পদ রচনা করেছেন এবং সেগুলির নৃত্য পরিকল্পনা করেছেন। মোহিনীঅট্টমের মাধ্যমে বাইবেলের মূল বিষয় পরিবেশনের জন্য তিনি সমালোচিত হয়েছিলেন।[৫]
লেখক
রাধিকা নৃত্য ও সংগীত পত্রিকা 'শ্রুতিলয়'য়ের জন্য অসংখ্য নিবন্ধ লিখেছেন এবং ‘বিদ্যালয়ে নৃত্যশিক্ষা’ শীর্ষক এনসিইআরটি আয়োজিত একটি সেমিনারে মোহিনীঅট্টমের উপর গবেষণাপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ইন্দুর জন্য কেরালার দেবদাসী প্রথা সম্পর্কে একটি নিবন্ধও লিখেছেন। মাতৃভূমি প্রকাশিত 'মোহিনীঅট্টম-দ্য লিরিকাল ডান্স' ও 'মুদ্রা' বইয়ের লেখক ছিলেন রাধিকা। [৬][৭]
অভিনয়
- টেলিভিশন
- চলচ্চিত্র
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র