এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ইংরেজি: Asian Development Bank) বা এডিবি আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক হিসেবে ১৯ ডিসেম্বর, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।[২] এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরো দ্রুত, বেগবান ও সহজ করাই ব্যাংকটির মূল উদ্দেশ্য।
প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ব্যাংকের সদস্য সংখ্যা ছিল ৩১টি। ২৬ আগস্ট, ২০২০ তারিখ পর্যন্ত ৬৮টি দেশ এর সদস্য।[৩] ৪৮টি দেশই এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা থেকে। বাদ-বাকী ১৯টি দেশ বহিঃবিশ্ব থেকে।
দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ এডিবি'র সদস্য পদ লাভ করে।
গঠনতন্ত্র
বিশ্বব্যাংকের প্রায় সমরূপ ধাঁচে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সদস্যভূক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক বুনিয়াদের উপর নির্ভর করে ভোট প্রদানের সীমারেখা নির্ধারিত করা হয়েছে যা বিশ্বব্যাংকের সমস্তরের। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপান প্রত্যেকেই ৫৫২,২১০টি শেয়ারের অধিকারী। এরফলে তারা প্রত্যেকেই মোট শেয়ারের ১২.৭৫৬% শেয়ার নিয়ে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। এছাড়াও, চীন ২,২৮,০০০ এবং ভারত ২২৪,০১০ সংখ্যক শেয়ার নিয়ে যথাক্রমে ৬.৪২৯% এবং ৬.৩১৭% দখল করেছে। এরফলে তারা ২য় এবং ৩য় স্থান অর্জন করেছে।
ব্যাংকের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারক হিসেবে ১২ সদস্যের বোর্ড অব গভর্নরস্ রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তারা পরিচালক ও সহকারী পরিচালক নির্বাচিত করে থাকে। তন্মধ্যে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে ৮ জন এবং বহিঃবিশ্ব থেকে ৪ জন অন্তর্ভুক্ত হয়।
বোর্ড অব গভর্নরস্ কর্তৃক ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়। তিনি পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হিসেবে ব্যাংক পরিচালনা করে থাকেন। প্রেসিডেন্ট ৫ বছর সময়কালের জন্য নিযুক্ত হন। প্রয়োজনে তিনি পুনরায় নির্বাচিত হতে পারেন। সচরাচর এবং সর্বোবৃহৎ মালিকানার অধিকারী বিধায় জাপানীরাই এর প্রেসিডেন্ট হয়ে থাকেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন মাসাতসুগু আসাকাওয়া। তিনি ২০১৩ সালে হারুহিকো'র স্থলাভিষিক্ত হন।
এডিবি'র সদর দফতর ফিলিপাইনে অবস্থিত।[৫][৬] এর ঠিকানা হচ্ছে -
৬ এডিবি এভিনিউ
মান্দালিয়ং সিটি
মেটো ম্যানিলা
ফিলিপাইন।
এছাড়াও, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এর প্রতিনিধিত্বকারী কার্য্যালয় বা শাখা রয়েছে। ব্যাংকে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৩,০০০। সদস্যভূক্ত ৫৫টি দেশ থেকেই কর্মরত ও নিযুক্ত রয়েছেন তারা। তন্মধ্যে - অর্ধেকেরও বেশীসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীই ফিলিপাইনের অধিবাসী বা ফিলিপিনো।
ইতিহাস
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা পেয়েছে মূলতঃ কিছুসংখ্যক জাপানীদের আগ্রহের প্রেক্ষিতে। তারা ১৯৬২ সালে ব্যাংকের মাধ্যমে আঞ্চলিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রাইভেট প্ল্যান বা বেসরকারী পরিকল্পনা ও চিন্তাধারা গ্রহণ করে। পরবর্তীকালে জাপান সরকার এতে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে। জাপানীরা অনুভব করেছিল যে, বিশ্বব্যাংক এশিয়ার অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করবে না। ফলে এশিয়া তথা এশীয়দের তেমন কোন উন্নয়ন ঘটবে না। ফলশ্রুতিতে একটি ব্যাংক প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গঠনের মাধ্যমে জাপান লাভবান হবে।
অতঃপর ১৯৬৬ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বা এডিবি প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকেই জাপান ব্যাংকটির শীর্ষস্থানে আসীন হয়। তারা সভাপতির আসন দখল করে। এছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত পদও করায়ত্ত্ব করে। তন্মধ্যে - প্রশাসনিক বিভাগ অন্যতম।
জাপানের অর্থনৈতিক লাভের প্রেক্ষাপটে এডিবি কাজ করে যায়। এর অধিকাংশ ঋণ সহায়তা কার্যক্রমে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া,দক্ষিণ কোরিয়া এবং ফিলিপাইনকে সম্পৃক্ত করে। কেননা জাপানের সাথে দেশগুলোর ব্যাপক বৈদেশিক লেনদেন পরিচালিত হয়। ১৯৬৭-৭২ সাল পর্যন্ত দেশগুলো এডিবি'র মোট ঋণের ৭৮.৪৮% অর্থ পেয়েছিল।
↑
[Wan] (Winter, 1995-1996)। "Japan and the Asian Development Bank"। Pacific Affairs। University of British Columbia। 68 (4): 509–528। জেস্টোর2761274। ডিওআই:10.2307/2761274।|author-link1= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য); এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
↑"ADB Graduation policy"(পিডিএফ)। ৩০ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১২।