উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়বাংলাদেশেরবরিশাল শহরে অবস্থিত একটি প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯৫৩ সালে একটি ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারক সংঘ দ্বারা বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ও তখন থেকে ধর্মপ্রচারক সম্প্রদায় কর্তৃক পরিচালিত হয়ে আসছে। এই বিদ্যালয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়।
ইতিহাস
১৯৫৩ সালে চট্টগ্রাম ধর্মপ্রদেশের বিশপ লারোজ, সি.এস.সি এর অধীনস্থ পুরোহিত পিকার্ড, পুরোহিত ওবে ও আরও কয়েকজন ধর্মপ্রাণ ও প্রগতিশীল ব্যক্তিদের উদ্যোগে বরিশাল নগরীর ৫নং সদর রোড এলাকায় ‘‘কিশোর প্রাথমিক বিদ্যালয়’’ নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন স্থান হতে আগত বরিশালে বসবাসরত খ্রিষ্টান ও অন্যান্য ছাত্রদের আধুনিক ও সময়োপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করা এবং বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করা। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ৮০ জন ও তখন প্রধান শিক্ষক ছিলেন সন্ন্যাসী কার্ডিনাল, সিএসসি। [১]
১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দের দিকে কিশোর প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থানান্তরিত করে নবগ্রাম রোড মাদার তেরেসা প্রেম নিবাসে নিয়ে আসা হয় ও বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে ‘‘সেন্ট পলস্ প্রাথমিক বিদ্যালয়’’ রাখা হয় ও মাধ্যমিক পর্যায়েও পাঠদান শুরু করে। এসময় সন্ন্যাসী গ্রামো, সিএসসি প্রধান শিক্ষক এর দায়িত্ব পালন করেন ও ছাত্র সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০০ জন। এ সময়ে সদর রোডে "প্রভাতী বালিকা বিদ্যালয়" প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে বাড়তি ছাত্রদের স্থান সংকুলানের কথা বিবেচনা করে ১ম ও ২য় শ্রেণী প্রভাতি বালিকা বিদ্যালয়ের সাথে এবং ৩য়-৮ম শ্রেণী প্রভাতীর প্রাঙ্গনে পৃথকভাবে সেন্ট পলস্ নামে ছাত্ররা পড়াশুনা করে ও ‘প্রভাতী বালিকা বিদ্যালয়’ এ প্রতিষ্ঠা করে সেখানে ছাত্রীদের ছুটির পর ছাত্রদের পাঠদান হত।
কয়েক বছর পরে বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে বাংলা নাম রাখার প্রস্তাব করা হয় ও সর্বসম্মতিক্রমে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক বাবু পঞ্চানন ঘোষের প্রস্তাবিত ‘উদয়ন’ নামটি গৃহীত হয় ও সে অনুযায়ী বিদ্যালয়ের নতুন নামকরণ হয় "উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়"।
অবস্থান ও অবকাঠামো
উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় বর্তমানে বরিশাল নগরীর ৩২, ফজলুল হক এভিনিউ রোডে অবস্থিত। বিদ্যালয়টির জমির মালিকানা চট্টগ্রাম ধর্মপ্রদেশের বিশপ এর অধীন। বিদ্যালয় প্রাঙ্গনের পাশেই সেন্ট পল গির্জা অবস্থিত। বিদ্যালয়টি ইংরেজি "L" আকৃতির। এখানে পৃথক অথচ লাগোয়া দুতলা তিনটি ও চারতলা একটি পাকা ভবন রয়েছে।
এছাড়া বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় স্থানন্তরিত করে নবগ্রাম রোডে উদয়ন প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে নতুন প্রস্তাবিত পাঁচ ভবনে পরিচালিত হচ্ছে।
শিক্ষা কার্যক্রম
উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় থেকে নবম শ্রেনীতে শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়। মাধ্যমিক শ্রেনীতে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগে পড়ার সুযোগ রয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রম বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে মোট ২৬৬৬ জন ছাত্র পড়াশুনা করছে। এখানে ৪২জন শিক্ষক-শিক্ষিকা পাঠদান করছেন ও এবং ১ জন অফিস সহকারী ও দপ্তরী কর্মরত আছেন। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি দুই বার জাতীয় শ্রেষ্ঠ পুরস্কার লাভ করে। [২]
শিক্ষা-সহায়ক কার্যক্রম
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা
সাহিত্য-সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালন
শরীরচর্চা শিক্ষা
লাইব্রেরি অনুশীলন
বিতর্ক প্রতিযোগিতা
শিক্ষা সফর
বার্ষিক বিচিত্রা প্রকাশ
বাংলাদেশ স্কাউটস
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বি,এন,সি,সি)
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট
বিদ্যালয়ে কর্মরত প্রধান শিক্ষকদের তালিকা
ব্রাদার কার্ডিনাল, সিএসসি
সিষ্টার রাণী, সিএসসি
ব্রাদার মাভেন ব্যাপ্টিস্ট, সিএসসি
ব্রাদার হ্যামেন, সিএসসি
ব্রাদার জেমস, সিএসসি
ব্রাদার মার্সেল, সিএসসি
এন্ডু বিশ্বাস
ব্রাদার সিলবেস্টার রোজারিও, সিএসসি
পলিনুস গুদা
রাজেন্দ্র নাথ রায় (ভারপ্রাপ্ত)
রুপচান বাড়ৈ (ভারপ্রাপ্ত)
ব্রাদার আলবার্ট রত্ন, সিএসসি
ব্রাদার স্যামূয়েল সবুজ বালা, সিএসসি
ব্রাদার নিকোলাস টলেন্টিনু, সিএসসি
উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রী
১)তানজিদ মঞ্জু:প্রভাষক,বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
২)ফিজিওথেরাপি এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন প্রাকটিশনার,মোঃ সাইফুল ইসলাম (ফিজিওথেরাপিষ্ট)ব্যাচেলর অব ফিজিওথেরাপি (বিপিটি)গণ বিশ্ববিদ্যালয়, সাভার, ঢাকা।
স্পেশাল ট্রেনিং ইন ফিজিওথেরাপি এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন, কলকাতা, ভারত
স্পেশাল ট্রেনিং ইন স্ট্রোক-ফিজিও এন্ড স্পোর্টস ইনজুরী।
মডার্ণ ফিজিওথেরাপি এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার, হাসপাতাল রোড , বরিশাল।