টরন্টোর ইসলামিক ফাউন্ডেশনকানাডার বৃহত্তম এবং প্রাচীনতম ইসলামী সম্প্রদায় কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি। এটি পূর্বের স্কার্বোরো শহরের মার্কহাম রোড এবং নুগেট অ্যাভিনিউয়ের চৌরাস্তার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত। এটি বিশাল টরন্টো অঞ্চলের অন্যতম বহুল স্বীকৃত মসজিদ এবং এটি বহু আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান বক্তা এবং অতিথিদের অতিথিয়তায় যুক্ত ছিল। ফাউন্ডেশনের বর্তমান ইমাম ও মসজিদের ধর্ম বিষয়ক পরিচালক হলেন ইউসুফ বাদাত।
ইতিহাস
টরন্টোর ইসলামিক ফাউন্ডেশনটি ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, উক্ত সময়ে একটি পুরানো ৩,০০০-বর্গফুট (২৮০ মি২) বিল্ডিং রোডস অ্যাভিনিউতে ক্রয় করা হয়েছিল এবং মসজিদে রূপান্তরিত হয়েছিল।
২.৩-একর (৯,৩০০ মি২) এলাকা, বর্তমানে যেখানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন অবস্থান করছে, এটি ১৯৮৪ সালে ক্রয় করা হয়েছিল। তখন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও ফাউন্ডেশনের মূল অংশ হিসাবে ধরা হয়েছিল। সাদা পাথর দিয়ে তৈরি ফাউন্ডেশনটির বর্তমান জমকালো তিনতলা ভবনটি ১৯৯২ সালে প্রায় ৬ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে সম্পন্ন হয়েছিল, যার প্রায় সবই স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় মাধ্যমে যোগাড় হয়েছিল। একটি ১২৫-ফুট (৩৮ মি) লম্বা আকাশচুম্বী মিনার কানাডায় মুসলিম উপস্থিতির প্রতীক হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে, যার গম্বুজ তামা দ্বারা আবদ্ধ। বিল্ডিং এলাকাটি ৫৩,০০০ ফু২ (৪,৯০০ মি২) প্রশস্ত, যার মধ্যে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য প্রার্থনা হল, ১২টি শ্রেণিকক্ষ, একটি ক্যাফেটেরিয়া এবং রান্নাঘর, একটি ব্যায়ামাগার, একটি গ্রন্থাগার, একটি সমাধিস্থল, একটি লিফট এবং ২০০-এরও বেশি পার্কিং স্থান রয়েছে।[১]
আগস্ট ২০১৭ তে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনটি হঠাৎ করে বিদ্যালয়ের উচ্চ বিদ্যালয়ের অংশটি বন্ধ করে দিয়েছিল, যার ফলে সেপ্টেম্বর মাসে স্কুলের বছর শুরুর আগেই ১৬০ জনের বেশি শিক্ষার্থী একটি নতুন স্কুল খুঁজে পাওয়ার ঝামেলায় পড়ে গিয়েছিল।[২] শত শত পিতা-মাতা এবং শিশুদের জন্য এটি ছিল এক বিপর্যয়কর সংবাদ, যার মধ্যে অনেকেই স্কুলটিতে হাজার হাজার ডলার এবং অনেক স্বেচ্ছাসেবায় সময় ব্যয় করেছিল। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অংশগুলি তখনও খোলা ছিল, যদিও ভর্তি প্রক্রিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
২০২০ সালের ১৬ই মার্চ তারিখে অন্টারিওতেকরোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সমস্ত সুবিধা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।[৩] অন্টারিওর প্রধান মেডিকেল স্বাস্থ্য অফিসার মসজিদ বন্ধ করার সুপারিশের বরাত দিয়ে[৪] ফাউন্ডেশন ঘোষণা করেছিল যে "পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না হওয়া পর্যন্ত কোন জামায়েত অনুষ্ঠিত হবে না"।
কার্যক্রম এবং সংস্থা
ইসলামিক কমিউনিটি সেন্টারটি সর্বজনীন যাতায়াতের মাধ্যমে প্রবেশযোগ্য এবং প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য উন্মুক্ত। জুমার জামাতের নামাজে প্রায় ২ হাজার মুসল্লি উপস্থিত থাকেন। ফুলটাইম স্কুলে জুনিয়র কিন্ডারগার্টেন থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ৩০০-এর বেশি শিক্ষার্থী সহ বেশ কিছু যোগ্য কর্মী রয়েছে।[২] সন্ধ্যা ও সাপ্তাহিক ইসলামিক ক্লাসে চার শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালনা কমিটি সাত সদস্যের সমন্বয়ে একটি নির্বাচিত মজলিস। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য, সেখানে একটি নির্বাচিত ট্রাস্টি বোর্ডও রয়েছে, যা সম্পত্তিতে উপাধি ধারণ করে এবং মজলিসকে পরামর্শ দেয়। নিরীক্ষিত অ্যাকাউন্টগুলি প্রতি বছর প্রকাশিত হয় এবং ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র অনুসারে বই এবং সভাগুলি সদস্যদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।[১] তা সত্ত্বেও, মজলিসের স্বচ্ছতার সাথে সমস্যা রয়েছে বলে জানা গেছে এবং স্বার্থপর আচরণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে, বিশেষত সাম্প্রতিক উচ্চমাধ্যমিক স্কুল বন্ধ হওয়ার কারণে।[২]