ইয়োহানা ভেলিন (ইংরেজি: Johanna Welin; জন্ম: ২৪ জুন ১৯৮৪) হলেন সুইডেনে জন্মগ্রহণকারী একজন জার্মান ২.০ পয়েন্ট হুইলচেয়ার বাস্কেটবল খেলোয়াড়। তিনি জার্মান হুইলচেয়ার বাস্কেটবল লীগে ইউ.এস.সি. মিউনিখ-এর হয়ে এবং জার্মান জাতীয় দলে খেলে থাকেন। এ দলটি লন্ডনে অনুষ্ঠিত ২০১২ গ্রীষ্মকালীন প্যারালিম্পিকে স্বর্ণ পদক জেতে এবং একই সালে রাষ্ট্রপতি জোয়াকিম গোঁউক-এর নিকট হতে জার্মানির সর্বোচ্চ ক্রীড়া পুরস্কার সিলভার লরেল লিফ (ইংরেজি: Silver Laurel Leaf) লাভ করেছিল।
জীবনী
ভেলিন সুইডেনের পাজালা নামক একটি ছোট্ট গ্রামে ১৯৮৪ সালের ২৪ জুন জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামটি সুমেরু বৃত্ত থেকে ১০০ কিলোমিটার উত্তরে ফিনল্যান্ড-সুইডেন সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত। তিনি সুয়েডীয় লীগে টরবোদা আই.কে.-এর হয়ে ফুটবল খেলতেন। শীতকালে তার স্নোবোর্ডিংয়ের শখ ছিল, ২০০৪ সালে গোথার্নবাগে একটি স্নোবোর্ডিং প্রতিযোগিতায় খারাপ পতনের ফলে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং তার কোমরের বামদিকের নিচের অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়।[১][২] এরপর তিনি হু্ইলচেয়ার বাস্কেটবলকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন এবং সুয়েডীয় লীগে জি.আর.বি.কে. গোথার্নবাগ-এর হয়ে খেলেন। কিন্তু সুইডেনে কোন জাতীয় মহিলা দল ছিল না। তিনি ইন্সব্রুকে দুটি সেমিস্টারে জার্মান শেখেন, কিন্তু সেখানেও হুইলচেয়ার বাস্কেটবল দল ছিল না। পরে তিনি মিউনিখে চলে আসেন এবং ইউ.এস.সি. মিউনিখে খেলা শুরু করেন যা ছিল তাদের দ্বিতীয় পর্যায়ের দল। সেখানে জোয়ানা জার্মান জাতীয় দলের কোচ হোলগার গ্লিনিকের নজরে আসেন, তিনি তাকে জার্মান জাতীয় দলের হয়ে খেলার আগ্রহ আছে কিনা জিজ্ঞাসা করেন। একজন ক্রীড়াবিদ হিসাবে তিনি সহজভাবেই জার্মান নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন এবং জার্মান জাতীয় দলে যোগ দেন। সে বছরই তারা ইসরাইলে নাজরেথে অনুষ্ঠিত ২০১১ ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে নেদারল্যান্ডকে ৪৮-৪২ ব্যবধানে পরাজিত করে স্বর্ণ পদক জেতেন।[২][৩]
২০১২ সালের জুনে লন্ডনে ২০১২ গ্রীষ্মকালীন প্যারালিম্পিক অংশগ্রহণের জন্য জাতীয় দলে তার নাম ঘোষণা করা হয়[৪], সেখানে তারা অস্ট্রেলিয়া জাতীয় মহিলা হুইলচেয়ার বাস্কেটবল দলের মুখোমুখি হয়েছিল[৫],যারা মাত্র কয়েক মাস আগে তাদের সিডনিতে ৪৮-৪৬ ব্যবধানে পরাজিত করেছিল।[৬] উত্তর গ্রীণউইচ এরেনায় প্রায় ১২,০০০ হাজার দর্শকের সামনে অস্ট্রেলীয়দের ৪৪-৫৮ ব্যবধানে পরাজিত করে তারা স্বর্ণ জিতে নেন।[৫] প্যারালিম্পিকে মহিলাদের হুইলচেয়ার বাস্কেটবলে জার্মানি প্রথম স্বর্ণ জিতেছিল ১৯৮৪ সালে।[৭] ২০১২ সালের নভেম্বরে জার্মান রাষ্ট্রপতি জোয়াকিম গোউক কর্তৃক জার্মানি সর্বোচ্চ ক্রীড়া পুরস্কার সিলভার লরেল লিফ-এ ভূষিত হন[৭] এবং ২০১২ সালের বর্ষসেরা ক্রীড়া দল নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোল্ডেন বুক অব মিউনিখে ভেলিনের নাম যুক্ত করা হয়।[৮] ২০১৪ সালে ভেলিন কানাডার টরেন্টোতে অনুষ্ঠিত ২০১৪ ওয়ার্ল্ড উইমেন্স হুইলচেয়ার বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়নশিপে জার্মান দলের হয়ে রৌপ্য পদক জিতেন[৯] এবং ২০১৫ ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে নেদারল্যান্ড জাতীয় দলকে পরাজিত করে দশম বারের মত স্বর্ণ পদক ছিনিয়ে নেয়।[১০] ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রাজিলের রিও দি জেনেরিও শহরে অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মকালীন প্যারালিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিকট পরাজিত হয়ে রৌপ্য পদক জিতেছে।[১১]
বর্তমানে ভেলিন মিউনিখে চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করছেন এবং সেই সাথে তিনি দলের পৃষ্ঠপোষক আই.এন.জি. ডিবা এবং লোফরিক-এর বিজ্ঞাপনী অভিযানের মডেল হিসাবে কাজ করছেন।[১][২]
সাফল্য
পুরস্কার
-
জাপানের বিপক্ষে ইয়োহানা ভেলিন
-
জাপানের বিপক্ষে ইয়োহানা ভেলিন
-
জাপানের বিপক্ষে ইয়োহানা ভেলিন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ