ইভা মেন্ডেজ (ইংরেজি: Eva Mendes) (জন্ম: ৫ মার্চ, ১৯৭৪)[১] একজন মার্কিন অভিনেত্রী। ১৯৯০-এর দশকে তার অভিনয়ের শুরু। ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন হলিউড চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পর তিনি সত্যিকারভাব জনসম্মুখে পরিচিতি লাভ করেন ট্রেনিং ডে চলচ্চিত্রে নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করার মাধ্যমে। পরবর্তী তিনি মূলধারার অনেক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এসকল চলচ্চিত্রের মাঝে আছে টু ফাস্ট টু ফিউরিয়াস, হিচ, উই ওন দ্য নাইট, এবং দ্য স্পিরিট।
প্রাথমিক জীবন
মেন্ডেজের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রেরফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামি শহরে। তার মা-বাবা জাতিতে কিউবান। মা-বাবার বিবাহ বিচ্ছেদের পর মেন্ডেজ বড় হন ক্যালিফোর্নিয়ারলস অ্যাঞ্জেলস শহরের উপশহর গ্লেন্ডেলে।[২] মেন্ডেজের ভাষ্যমতে তার মা প্রাথমিক জীবনে “মেন্ডেজকে ভালোভাবে রাখতে অনেক বেশি কষ্ট স্বীকার করেছেন”।[৩] তার বাবা ছিলেন একজন গাড়ি বিক্রির দোকানের বিক্রয়কর্মী, এবং মা (তার নামও ইভা) বর্তমানে একটি স্কুলের অধ্যক্ষ্যা। ইভা মেন্ডেজ তার চার ভাই-বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। তার দুটি ভাই ও একটি বোন আছে। ক্যাথলিক হিসেবে বড় হয়ে ওঠা মেন্ডেজ হতে চেয়েছিলেন একজন গির্জার সেবিকা।[৪] তিনি অনর্গল স্প্যানিশ বলতে পারেন।
মেন্ডেজ কখনোই একজন অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে চিন্তা করেন নি, কারণ জীবন নিয়ে তার অন্যান্য ইচ্ছা ছিলো। প্রথমে গ্লেন্ডেল শহরের হার্বাট হুভার হাই স্কুলে পড়াশোনা করার পর তিনি বিপণন (মার্কেটিং) পড়ার জন্য যোগ দেন নরহিজের ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। কিন্তু অভিনয় জীবনের চাপে পরবর্তীতে আর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন তার সহাপাঠী ছিলো অভিনয় প্রশিক্ষক ইভানা চাবাক।
পেশা জীবন
মডেলিং
অভিনয় জীবনের সাথে মেন্ডেজ রেভলন কসমেটিক্সের একজন আন্তর্জাতিক মুখপাত্র। জুলিয়ান মুর, হ্যালি বেরি, সিন্ডি ক্রফোর্ডের মতো মডেল ও অভিনেত্রী দুই পেশাতেই পদচারণা করেছেন। তারাও রেভলনের টেলিভিশন ও কাগজের বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়েছিলেন। মেন্ডেজ সেই সাথে রেভলনের স্তন ক্যান্সারের নিরাময় গবেষণার জন্য অর্থ সংগ্রহের ক্যাম্পেইনে তহবিল সংগ্রহের কাজও করেছেন এবং সমর্থন জানিয়ে আসছেন।
ম্যাক্সিম ম্যাগাজিনের ২০০৭ সালের হট ১০০ ইস্যুতে মেন্ডেজ ৭ম স্থান অধিকার করেছিলেন।[৫] এছাড়া ম্যাক্সিমের ২০০৭ সালের নভেম্বরের সংখ্যার প্রচ্ছদে তাকে দেখা যায়।[৬] এছাড়াও মেন্ডেজ ফ্লন্ট ম্যাগাজিনের জন্য নগ্ন অবস্থায় পোজ দেন। যদিও তিনি এই ফটোশুট সম্পর্কে বলেন যে, তার নগ্ন দেহ এখানে পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়নি, কারণ তিনি নিজেই নিজেকে ঢেকে রেখেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি কেলভিন ক্লেইনের জন্য নগ্ন অবস্থায় পোজ দেন, যেখানে দেখা যায় যে, তিনি নগ্ন অবস্থায় বিছানায় শুয়ে আছেন, এবং তার ডান স্তন ও স্তনবৃন্ত দৃশ্যমান।
২০০৭ সালের ডিসেম্বরে তিনি পিপল ফর দি ইথিকাল ট্রিটমেন্ট অফ অ্যানিম্যালসের পশমী কাপড় ব্যবহার বিরোধী ক্যাম্পেইনের জন্য নগ্ন পোজ দেন। সেখানে নিচে ট্যাগলাইন হিসেবে লেখা ছিলো, ‘Fur? I'd rather go naked.’ অর্থাৎ, ‘পশম? আমি বরং নগ্ন অবস্থায়ই যাবো।’ ২০০৮ সাল থেকে তিনি ক্যালেন্ডার অফ কামপারিরও একজন মুখমডেল।[৭]
ব্যক্তিগত জীবন
২০০৮ সালের শুরুতে মেন্ডেজ জানান যে, তিনি ইউটার একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে কয়েক সপ্তাহ অবস্থান করেছেন। তার বিবরণের বরাত দিয়ে তার প্রতিনিধি গণমাধ্যমকে জানান, “তিনি বিগত কয়েক বছরের কঠোর পরিশ্রম করেছেন, এবং তিনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, ব্যক্তিগত কিছু কাজে সময় দেবার জন্য তিনি এখন খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিরতি গ্রহণ করবেন। যদিও মারাত্মক কিছু নয়, কিন্তু তিনি মনে করেন যে, এ কাজে তাঁর বাইরের পেশাদার কিছু মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন আছে।”[৮]
২০০৮ সালে ইভা মেন্ডেজ বারাক ওবামার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন।[৯] ইভা ও তার প্রেমিকা পেরুভীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা জর্জ অগাস্টো ২০০২ সাল থেকে একত্রে অবস্থান করছেন।[১০]