ইন্দোনেশিয়া-হংকং সম্পর্ক, ইন্দোনেশিয়া এবং হংকং এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে।
আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক
হংকংয়ে, ইন্দোনেশিয়ার কোন স্থায়ী দূতাবাস নেই। তবে দূতাবাস না থাকলেও, হংকং এর কসওয়ে বে তে, ইন্দোনেশিয়ার একটি কনস্যুলেট রয়েছে। হংকং চীন এর অধীনে থাকলেও, উপযুক্ত বাণিজ্যিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রভৃতি ক্ষেত্রে বাইরের কোন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে হংকংয়ের সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন এর অধিকার রয়েছে।[১]
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় অবস্থিত হংকং ইকোনমিক অ্যান্ড ট্রেড অফিস, জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়ায় হংকং এর প্রতিনিধিত্ব করে। এর মাধ্যমেই হংকং, ইন্দোনেশিয়া সম্পর্কিত কূটনৈতিক বিষয়াবলী এবং কার্যক্রমের দেখাশোনা করে।[২]
বাণিজ্য
২০১৫ সালে, রপ্তানি বাজার হিসেবে ইন্দোনেশিয়া ছিল, হংকং এর ৭ম বৃহত্তম বাজার।[৩] ওই একইবছর, রপ্তানি বাজার হিসেবে হংকং ছিল, ইন্দোনেশিয়ার ১৫তম বৃহত্তম বাজার [৪]
দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক দৃঢ়। যার ফলে ইন্দোনেশিয়ার সামগ্রিক রপ্তানির ১.৪ শতাংশ হয় হংকংয়ে। অপরদিকে, হংকং এর সামগ্রিক রপ্তানি পণ্যের প্রায় ২.৩ শতাংশ আসে ইন্দোনেশিয়া হতে।[৩][৪]
হংকংয়ে অবস্থিত ইন্দোনেশীয় নাগরিক
ফিলিপিনো নাগরিকদের পর, ১,০২,১০০ সংখ্যক মানুষ নিয়ে, হংকংয়ে অবস্থিত ইন্দোনেশিয়ার নাগরিকেরা জাতিগত সংখ্যালঘুদের মাঝে বৃহত্তম।[৫]
হংকংয়ে অবস্থিত প্রায় সব ইন্দোনেশীয় মানুষই, সেখানে স্বল্পমেয়াদে কাজের চুক্তিতে যায়। হংকংয়ে অবস্থিত ইন্দোনেশীয় শ্রমিকেরা, হংকংয়ে অবস্থিত সকল বিদেশি শ্রমিকের সংখ্যার প্রায় ২.৪ শতাংশ।[৬]
উল্লেখযোগ্য ঘটনা
১৯৯৮ সালের মে মাসে ইন্দোনেশিয়ায় জাতিগত দাঙ্গা দেখা যায়। সেই দাঙ্গায় চীনা ইন্দোনেশীয় ব্যক্তিদের উপর হামলা চালানো হয়। এই হামলার পর হংকংয়ে অবস্থিত চীনা বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সদস্যরা প্রতিবাদ জানায়। এদের মধ্যে হংকং ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এর প্রধান মার্টিন লি, এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে, ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, বি যে হাবিবির নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি লেখেন। [৭]
হংকং এর, চীনের থেকে একটি স্বতন্ত্র নীতিমালা থাকায়, হংকং সরকার, ইন্দোনেশীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় এবং একই সাথে হংকংয়ে অবস্থানরত ইন্দোনেশীয় শ্রমিকদের বহিষ্কারের হুমকি দেয়। যদিও শেষপর্যন্ত হংকং এই হুমকির বাস্তবায়ন করে নি।[৮]
রাষ্ট্রীয় সফর
২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উইদোদো, ২ দিনের এক রাষ্ট্রীয় সফরে হংকংয়ে যান। সফরের দ্বিতীয় দিন। ১ মে তারিখে, হংকং এর প্রধান নির্বাহী, লিউং চুন ইয়িং, গভর্নমেন্ট হাউসে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান। পরে সেখানে এই দুই নেতা বৈঠকে মিলিত হন।[৯]
ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতির সেই সফরে, দুই দেশের সরকারের মধ্যে, সাংস্কৃতিক সমন্বয় এবং শ্রমিক সমন্বয়ের যৌথ ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে, সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়।[১০]
তথ্যসূত্র