ইউরোপীয় সংসদ (ইংরেজি European Parliament সংক্ষেপে EP) জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠিত সংসদীয় ইউরোপীয় প্রতিষ্ঠান। ইউরোপীয় কমিশন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাথে একত্রে এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনপ্রণয়নকারীর ভূমিকা পালন করে। সংসদটি ৭৫১ জন সদস্য নিয়ে গঠিত। ভারতের সংসদের পরে এটি বিশ্বের ২য় সর্বোচ্চ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত আইনসভা। এছাড়া এটি বিশ্বের বৃহত্তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক
প্রতিনিধিত্বমূলক আইনসভা (২০০৯ সালে এতে প্রায় ৩৮ কোটি সম্ভাব্য ভোটার ছিল)।[২][৩][৪]
১৯৭৯ সাল থেকে পাঁচ বছর অন্তর ইউরোপের বিভিন্ন দেশের জনগণের সরাসরি ভোটে সংসদটির সদস্যরা নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তবে প্রত্যেক নির্বাচনেই ভোটার উপস্থিতি আগেরবারের চেয়ে হ্রাস পাচ্ছে এবং ১৯৯৯ সাল থেকে ভোটার উপস্থিতি ৫০%-এর নিচে। ২০১৪ সালের সাম্প্রতিকতম নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৪২.৫৪%।[৫]
ইউরোপীয় সংসদের আইনি ক্ষমতা আছে যা ইউরোপীয় পরিষদ বা কমিশনের নেই, তবে বিধিগতভাবে এর "আইনি উদ্যোগ" নেওয়ার ক্ষমতাও নেই।[৬][৭] ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য সমস্ত প্রতিষ্ঠানের আগে ইউরোপীয় সংসদকে স্থান দেওয়া হয়।[৮] ইউরোপীয় সংসদ ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতিকে নির্বাচন করে এবং সমগ্র কমিশনের কর্মনিয়োগ অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যান করতে পারে। এমনকি কমিশনকে পদত্যাগেও বাধ্য করতে পারে।[৬]
ইউরোপীয় সংসদের বর্তমান সভাপতি হলেন আন্তোনিও তাহানি। ২০১৪ সালে নির্বাচনশেষে ইউরোপীয় সংসদের সর্ববৃহৎ দুইটি দল হল ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টি এবং প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স অফ সোশালিস্টস অ্যান্ড ডেমোক্র্যাটস। ইউরোপীয় সংসদটি কার্যক্রম তিনটি ভিন্ন শহরে পরিচালিত হয়। এগুলি হলে বেলজিয়ামের রাজধানী শহর ব্রাসেলস, লুক্সেমবুর্গ শহর এবং ফ্রান্সের স্ত্রাসবুর শহর। লুক্সেমবুর্গ শহরে সংসদের প্রশাসনিক কার্যালয়গুলি অবস্থিত। অন্যদিকে সমগ্র সংসদের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনগুলি ব্রাসেলস ও স্ত্রাসবুর শহরে অনুষ্ঠিত হয়। সংসদীয় সমিতির সভাগুলি ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত হয়।[৯][১০]