আলমগীর মনসুর (মিন্টু) |
---|
জন্ম | ১ জানুয়ারি, ১৯৪৮ সাল
|
---|
মৃত্যু | ২৪ জানুয়ারি, ১৯৬৯ সাল
|
---|
পেশা | ছাত্র |
---|
পরিচিতির কারণ | শহীদ |
---|
আলমগীর মনসুর (মিন্টু) (জানুয়ারি ১, ১৯৪৮ - জানুয়ারি ২৪, ১৯৬৯) একজন শহীদ ছাত্র। তিনি আইয়ুব খানের পতনের দাবীতে মিছিল করার সময় নিহত শহীদ আসাদের মৃত্যুর প্রতিবাদে জানুয়ারি ২৪, ১৯৬৯ সালে ময়মনসিংহ শহরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন।[১]
একজন সক্রিয় প্রগতিশীল ছাত্রনেতা হিসেবে মিছিলের অগ্রভাগে থেকে ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা আর আদর্শিক জায়গা তুলে ধরেছিলেন শহীদ আলমগীর মনসুর মিন্টু।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে হামিদুল হক জানান,তিনি রাজপথের অন্যতম নায়ক ছিলেন। সেসময়ে আবুল হাসনাত, মকবুল হোসেনসহ অন্যান্য ছাত্রনেতাদের সান্নিধ্যে ছিলেন আলমগীর মনসুর। শহীদ আলমগীর মনসুর মিন্টু’র বড় ভাই জাহাঙ্গীর মনসুর ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।
প্রারম্ভিক জীবন
আলমগীর মনসুর মিন্টু ঢাকার ধামরাইয়ের কেলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নাসিরবাদ কলেজের ছাত্র ছিলেন।
শহীদ আলমগীর মনসুর মিন্টু ধামরাই থানার কেলিয়া গ্রামে ১৯৪৮ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মনসুর আলী। মাতার নাম সুফিয়া মনসুর। তার বড় ভাই হাসান মুনসুর প্রবাসী। তাঁরা ৫ ভাই ২ বোন। ৫ ভাইয়ের মধ্যে মিন্টু ছিলেন ৩য়।
ষে এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় অন্যান্য আসামীদের মুক্তি দাবীর আন্দোলনে আসাদের মৃত্যু পরিবেশকে আরো ঘোলাটে করে তুলে ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় রূপান্তরিত হয়। ৬ ডিসেম্বর, ১৯৬৮ সালে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাষাণী'র ডাকে হরতাল আহ্বানের ফলে ব্যবসায়ীরা তাতে পূর্ণ সমর্থন জানায়।[২] এ প্রেক্ষাপটে গভর্নর হাউজ ঘেরাওয়ের ফলে ছাত্র সংগঠনগুলো পূর্ব থেকেই নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েছিল।
৪ জানুয়ারি, ১৯৬৯ইং তারিখে ছাত্রদের ১১ দফা এবং বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা দাবীর সাথে একাত্মতা পোষণ করে ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, যাতে প্রধান ভূমিকা রাখেন শহীদ আসাদ। ১৭ জানুয়ারি, ১৯৬৯ইং সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ছাত্ররা দেশব্যাপী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ডাক দেয়। ফলে গভর্নর হিসেবে মোনেম খান ১৪৪ ধারা আইন জারী করেন যাতে করে চার জনের বেশি লোক একত্রিত হতে না পারে।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে ২০ জানুয়ারি, ১৯৬৯ইং তারিখ দুপুরে ছাত্রদেরকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পার্শ্বে চাঁন খাঁ'র পুল এলাকায় মিছিল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলেন আসাদুজ্জামান। পুলিশ তাদেরকে চাঁন খাঁ'র ব্রীজে বাঁধা দেয় ও চলে যেতে বলে। কিন্তু বিক্ষোভকারী ছাত্ররা সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান নেয় এবং আসাদ ও তার সহযোগীরা স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। ঐ অবস্থায় খুব কাছ থেকে আসাদকে লক্ষ্য করে এক পুলিশ অফিসার গুলিবর্ষণ করে। তৎক্ষণাৎ গুরুতর আহত অবস্থায় আসাদকে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মিছিল এবং মৃত্যু
হাজারো ছাত্র-জনতা আসাদের মৃত্যুতে একত্রিত হয়ে পুনরায় মিছিল বের করে এবং শহীদ মিনারের পাদদেশে জমায়েত হয়। কেন্দ্রীয় প্রতিরোধ কমিটি তাকে শ্রদ্ধা জানাতে ২২, ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি সারাদেশে ধর্মঘট আহ্বান করে। ধর্মঘটের শেষ দিনে ২৪ জানুয়ারি ময়মনসিংহ শহরের জেলা স্কুলের সামনে নাসিরাবাদ কলেজের ছাত্র আলমগীর মনসুর মিন্টুকে মিছিলের মাঝখানে গুলি করা হয়।[৩] গুলিটি তার বুকের মাঝ বরাবর ছিদ্র হয়ে বের হয়ে যায়। এতে তিনি শহীদ হোন।[৩]
স্মারক চিহ্নসমূহ
তার স্মরণে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, রফিক উদ্দীন ভূঁইয়ার সহযোগিতায় মতিউর রহমান আলমগীর মনসুর (মিন্টু) মেমোরিয়াল কলেজ প্রতিষ্ঠিত করেন।[৩]
তথ্যসূত্র