আবদুল্লাহ ইবনে আবু বকর আরবি: عبدالله ابن أبي بكر) (৬১০-৬৩৩) ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকরের সন্তান, আয়েশার সৎ ভাই এবং ইসলামে নবী ও রাসূল মুহাম্মদের একজন সাহাবা ছিলেন।
শৈশব
আবদুল্লাহ মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশের তাইম গোত্রে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবু বকর ইবনে আবি কুহাফা এবং মাতা হলেন কুতাইলা বিনতে আবদুল উজ্জা, তার মা আমির ইবনে লুয়া গোত্রের ছিলেন।[১]:২৮–২৯[২]:১৪০–১৪১[৩]:১৯৩ তাঁর জন্মের কিছু দিন পূর্বে বা পরে তার বাবা-মা বিবাহবিচ্ছেদ করেছিলেন।[৪]
৬২২ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে মুহাম্মদ এবং আবু বকর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করলে আবু বকর আবদুল্লাহকে প্রাপ্তবয়স্কদের কথোপকথন শোনার জন্য এবং প্রতি রাতে থাউর পর্বতের গুহায় তাদেরকে দিনের সংবাদটি জানানোর নির্দেশ দেন। আবদুল্লাহ যথাযথভাবে জানিয়েছিলেন যে, কুরাইশরা ঘোষণা করেছিল যে মুহাম্মদকে বন্দী করতে পারবে তাকে একশ উট উপহার দেওয়া হবে। প্রতি সকালে যখন তিনি গুহাটি ছেড়ে চলে যেতেন, তখন তার পরিবারের চাকর তার পদচিহ্ন ঢাকতে একই পথের উপর দিয়ে একটি মেষপাল পরিচালনা করত।[১]:১৩১[৫]:২২৪
মদিনায় গমন
কয়েক মাস পরে, আবদুল্লাহ তার সৎ মা ও দুই বোনের সঙ্গে মদিনায় চলে আসেন।[৩]:১৭২[৬]
৬৩০ সালে আবদুল্লাহ তায়েফের যুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, যেখানে সাকাফি কবি আবু মিহজান তার দিকে একটি তীর ছুড়ে মারেন। এটি থেকে হওয়া ক্ষতটিই শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যুর কারণ হয়েছিল, যদিও তিনি এটির পর থেকে প্রায় তিন বছর বেঁচে ছিলেন।[৫][৭]
বিবাহ
তিনি কুরাইশের আদি গোত্রের কবি আতিকা বিনতে জায়েদকে বিয়ে করেছিলেন। এই বিবাহ নিঃসন্তান ছিল। বলা হয়ে থাকে যে, আবদুল্লাহ আতিকার দেয়া সিদ্ধান্তকে তার নিজের চেয়ে বেশি সম্মান দিয়েছিলেন এবং তিনি তার সাথে এতটা সময় কাটিয়েছিলেন যে তিনি ইসলামি রাষ্ট্রের প্রতি তার দায়িত্বগুলি অবহেলা করেছিলেন। আতিকাকে তালাক দেওয়ার আদেশ দেয়ার মাধ্যমে আবু বকর তার ছেলেকে শাস্তি দিয়েছিলেন। আবদুল্লাহ পিতার আদেশমত তালাক দিয়েছিলেন, ও তিনি ব্যথিত ছিলেন:
আমি আমার মতো কোনও পুরুষকে জানিনি যে তার মতো কোনও মহিলাকে তালাক দিয়েছে,
বা তার মতো কোনও মহিলাকে জানিনি যে কিনা তার নিজের কোনও দোষের জন্য তালাকপ্রাপ্ত হয়নি।[৮]
শেষ অবধি, আবদুল্লাহকে আতিকার ইদ্দত (প্রতীক্ষার সময়) পালনের সময় শেষ হওয়ার আগেই আতিকাকে ফেরত নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।[৯]>:৮৭
মৃত্যু
তায়েফের কাছে হওয়া তার পুরানো ক্ষতটির ব্যথা হঠাত জেগে উঠার পর, আবদুল্লাহ ৬৩৩ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে মৃত্যুবরণ করেন।[৭][১০]:৭৬[১১]:১০১ তাঁর স্ত্রী তাঁর জন্য এক শোকসূচক চরণ রচনা করেছিলেন:
আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে আমার প্রাণ আপনার জন্য ব্যথিত থাকবে
এবং আমার ত্বক ধূলিমলিন হয়ে থাকবে।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ Saʻd, Muḥammad Ibn। Kitab at-Tabaqat Al-Kabir: The Companions of Badr (ইংরেজি ভাষায়)। Ta-Ha Publishers Limited। আইএসবিএন 978-1-84200-133-2।
- ↑ Blankinship, Khalid Yahya, সম্পাদক (১৯৯৩)। The History of al-Ṭabarī, Volume XI: The Challenge to the Empires। SUNY Series in Near Eastern Studies.। Albany, New York: State University of New York Press। আইএসবিএন 978-0-7914-0851-3।
- ↑ ক খ Landau-Tasseron, Ella, সম্পাদক (১৯৯৮)। The History of al-Ṭabarī, Volume XXXIX: Biographies of the Prophet's Companions and their Successors: al-Ṭabarī's Supplement to his History। SUNY Series in Near Eastern Studies.। Albany, New York: State University of New York Press। আইএসবিএন 978-0-7914-2819-1।
- ↑ Saʻd, Muḥammad Ibn। Kitab al-Tabaqat al-Kabir [The Women of Madina] (ইংরেজি ভাষায়)। Bewley, A. কর্তৃক অনূদিত। Ta-Ha।
- ↑ ক খ Hishām, ʻAbd al-Malik Ibn; Ishak (d), Muhammad Ibn (১৯৫৫)। The Life of Muhammad: A Translation of Ishāq's Sīrat Rasūl Allāh (ইংরেজি ভাষায়)। Pakistan Branch, Oxford University Press।
- ↑ McDonald, M.V., সম্পাদক (১৯৮৭)। The History of al-Ṭabarī, Volume VII: The Foundation of the Community: Muḥammad at Madina, A.D. 622–626। SUNY Series in Near Eastern Studies.। Albany, New York: State University of New York Press। পৃষ্ঠা ৮। আইএসবিএন 978-0-88706-344-2।
- ↑ ক খ Donner, Fred M., সম্পাদক (১৯৯৩)। The History of al-Ṭabarī, Volume X: The Conquest of Arabia, A.D. 632–633/A.H. 11। SUNY Series in Near Eastern Studies.। Albany, New York: State University of New York Press। পৃষ্ঠা 39। আইএসবিএন 978-0-7914-1071-4।
- ↑ ইবনে হাজার আল আসকালানী। আল-ইসাবা ফি তামিয আল-সাহাবা খণ্ড ৮ #১১৪৪৮।
- ↑ Abbott, Nabia (১৯৪২)। Aishah, the Beloved of Mohammed: A Biography (ইংরেজি ভাষায়)। University of Chicago Press।
- ↑ Jalal al-Din al-Suyuti. History of the Caliphs. Translated by Jarrett, H. S. (1881). Calcutta: The Asiatic Society.
- ↑ Smith, G. Rex, সম্পাদক (১৯৯৪)। The History of al-Ṭabarī, Volume XIV: The Conquest of Iran, A.D. 641–643/A.H. 21–23। SUNY Series in Near Eastern Studies.। Albany, New York: State University of New York Press। আইএসবিএন 978-0-7914-1293-0।