বর্তমান তালেবান শাসিত রাষ্ট্র জন্য আফগানিস্তান দেখুন।
আফগানিস্তান ইসলামি আমিরাত[১](পশতু: د افغانستان اسلامي امارات; দ্য আফগানিস্তান ইসলামি আমিরাত) ছিল ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান সরকার শাসিত একটি ইসলামি রাষ্ট্র। ১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বরেকাবুুল পতন হলে আফগানিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হয়। তাদের সেরা সময়ে তালেবানের দখলে দেশের ৯০ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ ছিলো; যেখানে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছিল নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের নিকট, যাদের আফগানিস্তানের বৈধ সরকার হিসাবে অধিক গ্রহণযোগ্য স্বীকৃতি ছিলো সারা বিশ্বব্যাপী।[২] তালেবানেরা ওসামা বিন লাদেন ও আল-কায়েদার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসাবে কাজ করে, তাদেরকে বিশ্বজুড়ে বড় বড় সন্ত্রাসী হামলা চালানো, যেমনঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে১১ সেপ্টেম্বরের হামলার মতো প্রধান প্রধান সন্ত্রাসী হামলার জন্য সহায়তা করে। ৯/১১-এর পর এদের শাসনব্যবস্থা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিরোধিতার মুখে পড়ে, এমনকি কূটনৈতিক তৎপরতার দ্বারা সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তান থেকে প্রাপ্ত স্বীকৃতি পর্যন্ত প্রত্যাহার করানো হয়। ২০০১ সালের ১৭ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের সহায়তায় নর্দার্ন অ্যালায়েন্স কর্তৃক তালেবান বিতাড়িত হওয়ার মাধ্যমে আমিরাতের সমাপ্তি ঘটেছিল। তালেবানরা ২০০১ সালের ১৫ আগস্ট থেকে সরকারী যোগাযোগে নিজেকে আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত হিসেবে উল্লেখ করে আসছে।[৩]
ইতিহাস
সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের পর সৃষ্টি হওয়া বিশৃঙ্খলার প্রেক্ষিতে উম্মেষ ঘটে তালেবান ও তার শাসনের। এর শুরু হয়েছিলো দক্ষিণ আফগানিস্তানে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গড়া একটি ইসলামি ও পশতুন রাজনৈতিক-ধর্মীয় আন্দোলন হিসেবে। ব্যাপকভাবে জাতিগত পাশতুন সম্প্রদায়ের মধ্যে তালেবান পশতুনওয়ালি জীবনাচার ও বিধিমালাকে সুন্নী ইসলামি শিক্ষার সাথে মিশ্রিত করে উপস্থাপন করেছিল যা পশ্চিমা ও আধুনিকতা বিরোধী একটি ইসলামি মতাদর্শের প্রবর্তন করে এবং এর দ্বারা তারা শাসন কার্যটি পরিচালনা করেছিল।[৪] এটি প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান থেকে যেমন সমর্থন লাভে সমর্থ হয় তেমনইভাবে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের নিকট থেকেও সমর্থন লাভ করতে সক্ষম হয়। অপরদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ দূরত্ব বজায় রেখে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছিল এবং আশা করেছিলো যে - আফগান গৃহযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটলেই এই নতুন আন্দোলনটিরও অবসান ঘটবে।
তালেবানরা আফগানিস্তানের অন্যান্য জাতিগত সম্প্রদায়কে বিদেশী বলে মনে করত। পশতুন জনগণ আফগানিস্তানের বৃহত্তম জাতিগত গোষ্ঠী এবং তালেবান আন্দোলনের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ নিয়ে গঠিত। তালেবানরা তাদের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের দুর্গ থেকে প্রসারিত হওয়ার সাথে সাথে তারা আরও প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়; পশতুনওয়ালির পশতুন উপজাতীয় বিষয়ের সাথে অন্তর্ভুক্ত তাদের দেওবন্দী ইসলামকে আফগানিস্তানের অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী বিদেশী হিসেবে মনে করতো।[৫][৬][৭][৮] মাজার-ই-শরীফের যুদ্ধ এই জাতিগত উত্তেজনার চিত্র তুলে ধরে।[৯][১০]
জাতিগত সংঘাত
তালেবান আফগানিস্তানের অন্যান্য আরো অনেক জাতিগোষ্ঠীকে বিদেশী হিসাবে বিবেচনা করে। পশতুন জনগণ আফগানিস্তানে বৃহত্তম জাতিগত দল এবং তালেবান আন্দোলনেও তারা বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে যুক্ত ছিলো।
শাসন
কান্দাহার হতে যাত্রা শুরু করে তালেবানেরা অবশেষে ১৯৯৬ সালে কাবুুলের ক্ষমতা দখল করতে সমর্থ হয়।
২০০০ সালের শেষে তালেবান দেশের ৯০ শতাংশ এলাকা তাদের শাসনের আওতাভূক্ত করতে সক্ষম হয়। অপরদিকে প্রাথমিকভাবে বাদাখশন প্রদেশের উত্তর-পূর্ব কোণের নিয়ন্ত্রণ দখল করে রাখতে সক্ষম হয় প্রধান বিরোধী নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের গেরিলারা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণ
২০২১ সালের ১৫ই আগস্ট থেকে আফগানিস্তান ইসলামি আমিরাতের ক্ষমতা হাতে নেয় দেশটির রাজনৈতিক দল তালেবান। ১১শে সেপ্টেম্বর ২০২১ অর্থাৎ নাইন ইলেভেনের ২০ বছর পূর্তির দিন শপথ পাঠ করে নতুন সরকার।[১১]
↑Directorate of Intelligence (২০০১)। "CIA – The World Factbook – Afghanistan"। ২১ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল(mirror) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০০৮। note – the self-proclaimed Taliban government refers to the country as Islamic Emirate of Afghanistan