আজারবাইজানের নারীরা আইন অনুসারে পুরুষদের মতো সমান আইনি অধিকারের অধিকারী হলেও দেশটির সমাজে এখনো লিঙ্গ বৈষম্য প্রতীয়মান।
নির্বাচনের অধিকার
১৯১৮ সালে সার্বজনীন নির্বাচনের আজারবাইজান ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক দ্বারা সূচনা ঘটে। এই বছরেই প্রথম কোনো মুসলমান অধ্যুষিত রাষ্ট্রে নারীরা ভোটাধিকার ও নির্বাচনে অংশ নেয়ার অধিকার পায়।[২]
রাজনীতিতে অংশগ্রহণ
২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রাপ্ত রিপোর্টে, সরকারি বিভিন্ন উচ্চ পদে নারীরা দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় আছে। দেশটির সংসদের ডেপুটি স্পীকারসহ বেশকিছু প্রধান নির্বাচিত সংসদ সদস্য পদে নারী রাজণৈতিক ব্যক্তিত্বকে দেখা যায়। এছাড়াও দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশনের ডেপুটি চেয়ার পদে একজন নারী দায়িত্ব পালন করছিলেন।[৩] আইনত দেশটিতে নারীদের রাজনীতিতে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো নিষেধ নেই। ২০১৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, আজারবাইজানের ১২৫ আসনের সংসদে ২১ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন। ২০০৫ থেকে ২০১৫ সালে সংসদ সদস্যদের মাঝে নারী সংসদ সদস্যের হার ১১ থেকে ১৭ শতাংশতে বৃদ্ধি পেয়েছে।[৪]
২০১৭ সালে মেহরিবেন আলিয়েভা আজারবাইজানের প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে নিযুক্ত হন। এখন পর্যন্ত দেশটিতে এটিই কোনো নারীর জন্য সর্বোচ্চ পদ প্রাপ্তি।[৫]
ধর্ম
একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ হলেও, ধর্মীয় অধিকার পালন করতে চাইলে দেশোটির নাগরিকদের রাষ্ট্র থেকে নিবন্ধনামা ও সনদপত্র সংগ্রহ করতে হয়। আজারবাইজানের মুসলমান নারীরা চাইলে সনদপত্র প্রাপ্ত মোল্লা হতে পারেন। অবশ্য, পুরনো ঐতিহ্য মেনে এখনো নারী মোল্লারা শুধুমাত্র নারীদের নামাজেরই নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার রাখেন।[৬] ২০১৬ সাল অব্দি, আজারবাইজানে মাত্র একজন নারী লুথেরিয়ান পাদ্রী ছিলেন।[৭]
কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ
ঘরের বাইরে আজারবাইজানের নারীরা বিভিন্ন কর্মে অংশ নিলেও, উচ্চ-পর্যায়ের চাকুরিতে তাদের অংশগ্রহণের হার তুলনামূলকভাবে কম। একইভাবে বিভিন্ন ব্যবসা সংক্রান্ত উঁচু পদে নারীদের উপস্থিতি স্বল্প পরিসরে লক্ষণীয়।[৩]
গৃহস্থালি সহিংসতা
২০১০ সালের ২২শে জুন, আজারবাইজানের সংসদে গৃহস্থালি সহিংসতা রোধে আইন প্রণয়ন করা হয়।[৮]
ধর্ষণ আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ১৫ বছরের কারাদণ্ড।[৩] ২০১০ সালের গৃহস্থালি সহিংসতা আইনে নতুন ধারা যোগ করা হয়, যেটাতে গৃহ নির্যাতনকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে তালিকা ভূক্তি করা হয় এই একই আইনে ম্যারিটাল রেইপ বা বিবাহ পরবর্তী ধর্ষণকেও অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।[৯][১০] যদিও সাংস্কৃতিকগত কারণে, আজারবাইজানে এটাকে কোনো অপরাধ বলে মানা হয় না এবং ম্যারিটাল রেইপের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলকে নিরুতসাহিত করা হয়।[১১]
আজারবাইজানে পতিতাবৃত্তি
পতিতাবৃত্তি অপরাধ অপেক্ষা রাষ্ট্র অবমাননা হিসেবে বেশি গণ্য হয়। পতিতাবৃত্তির শাস্তি হিসেবে প্রায় ১০২ মার্কিন ডলার সমমূল্যের আজারবাইজানী মুদ্রা জরিমানা দিতে হয়। দেশটির আইনে পতিতার দালাল এবং গণিকালয়ের মালিকদের ছয় বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।