ইসলামে এমন কিছু ঘটনার দাবি উল্লেখ করার জন্য বেশ কয়েকটি পরিভাষা ব্যবহার করা হয়, যেগুলো প্রাকৃতিক বা বৈজ্ঞানিক নিয়মের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। আর এসব বিষয়ের ক্ষেত্রেই কখনও কখনও অতিপ্রাকৃতের আশ্রয় নেওয়া হয়।[১]
আয়াহ: কুরআনে আয়াহ (/ˈɑːjə/; আরবি: آية; বহুবচন: آيات āyāt) শব্দটি আক্ষরিক অর্থে "চিহ্ন" বোঝায়। এখানে এটি আল্লাহর সৃষ্টির অলৌকিক ঘটনা এবং নবী ও রাসুলদের (যেমন ইব্রাহীম (আঃ) ও ঈসা(আঃ)) অলৌকিক ক্ষমতা বোঝায়।[২]
মুজিযাহ: পরবর্তী ইসলামিক উৎসগুলিতে নবীদের অলৌকিক কাজগুলোকে মুজিযাহ (مُعْجِزَة) দ্বারা উল্লেখ করা হয়েছে, যার আক্ষরিক অর্থ "যার দ্বারা [নবী] তার বিরোধীদের বিভ্রান্ত, পরাজিত করেন"। অন্যদিকে সাধু-সন্তদের অলৌকিক কর্মকাণ্ডকে কারামত (charismata) বলা হয়।[২]
ইজাজ আল-কুরআন: আল-কুরআনের অপ্রতিরোধ্যতাকে ইজাজ আল-কুরআন বলা হয়। কুরআনের দাবি হল এর (কুরআনের) নিখুঁততাকে কেউই অনুকরণ করতে পারবে না। এই গুণকে কুরআনের প্রাথমিক অলৌকিক বৈশিষ্ট্য এবং মুহাম্মদ (সাঃ) এর নবুয়তের প্রমাণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সাম্প্রতিক দশকগুলিতে, ইজাজ শব্দটি এমন বিশ্বাসকেও নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হচ্ছে যে কুরআন "বৈজ্ঞানিক অলৌকিক ঘটনা" ধারণ করে, যেমন - বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের ভবিষ্যদ্বাণী।[৩]
খার্ক আল-আদাদ: "আল্লাহর প্রথাগত নিয়মের মধ্যে বিরতি" - অলৌকিক ঘটনাগুলিকে উল্লেখ করার জন্য "ধর্মতাত্ত্বিক বা দার্শনিক আলোচনায়" এই শব্দটি ব্যবহৃত হতো।[২]
কারামত: সাধারণত সুফি সাধকদের অলৌকিক ক্ষমতার ক্ষেত্রে "উপহার বা অনুগ্রহ" অর্থের কারামত (charismata) ব্যবহৃত হয়। একে প্রায়শই অবিশ্বাসীদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করার জন্য ব্যবহার করা হতো। কারামতকে নবীদের অলৌকিক ক্ষমতার 'ঐশ্বরিক শক্তির' পরিবর্তে "ঐশ্বরিক উদারতার" কাজ হিসাবে বিবেচনা করা হয়।[২]
- ↑ Denis Gril, Miracles, Encyclopedia of the Qur'an
- ↑ ক খ গ ঘ Marcia Hermansen (২০০৪)। Martin, Richard C., সম্পাদক। Encyclopedia or Islam and the Muslim World। MacMillan Reference USA। পৃষ্ঠা 454।
- ↑ Sardar, Ziauddin (২১ আগস্ট ২০০৮)। "Weird science"। New Statesman। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৯।