১৯৮৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল (ইংরেজি: 1979 Cricket World Cup Final) ২৫ জুন, ১৯৮৩ তারিখে লন্ডন নগরীর লর্ডসে অনুষ্ঠিত হয়। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলাটি লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়। এ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে গত আসরের ন্যায় আবারো ওয়েস্ট ইন্ডিজ অংশগ্রহণ করে। এবার তারা ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। কিন্তু ভারতীয় দলের কাছে ৪৩ রানের স্বল্প ব্যবধানে নাটকীয়ভাবে পরাজিত হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নতুন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে প্রথমবারের মতো ভারতীয় দলের অধিনায়ক কপিল দেব প্রুডেন্সিয়াল ট্রফি উত্তোলন করেন।
ব্যাটিং ও বোলিংয়ে অসামান্য দক্ষতা প্রদর্শন করায় অল-রাউন্ডার মহিন্দর অমরনাথ ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। এ বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ভারতীয় ক্রিকেট দলকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়নি। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে তারা বিশ্বকাপের ফাইনাল-পর্বে উত্তীর্ণ হয় এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাভূত করে।
বিবরণ
চূড়ান্ত খেলায় টসে হেরে ভারত ব্যাটিংয়ে নামে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বসেরা বোলিং আক্রমণের মুখে পড়ে দলটি মাত্র ১৮৩ রানে অল-আউট হয়ে যায়। কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্ত, মহিন্দর অমরনাথ অ্যান্ডি রবার্টস, ম্যালকম মার্শাল, জোয়েল গার্নার এবং মাইকেল হোল্ডিংয়ের বোলিং আক্রমণ কিছুটা আটকাতে পেরেছিলেন। নিচের সারির ব্যাটসম্যানের অংশগ্রহণে ৫৮.৪ ওভার পর্যন্ত খেলতে পেরেছিল ভারত। ভারতীয় ইনিংসে শ্রীকান্ত, সন্দ্বীপ পাতিল এবং মদন লাল একটি করে ছক্কা হাকান।
পরবর্তীতে অনুকূল আবহাওয়া এবং পীচের সুবিধা নিয়ে সঠিকমানের বোলিংয়ের ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বখ্যাত ব্যাটিং লাইন-আপ ভেঙ্গে পড়ে। গত দুইবারের বিশ্বকাপ জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল মাত্র ১৪০ রানে অল-আউট হয়ে যায়। ফলে, ভারত ৪৩ রানে বিজয়ী হয় এবং ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঘটন ঘটায়। অমরনাথ এবং মদন লাল - উভয়েই ৩টি করে উইকেট নেন। এছাড়াও, ভারতের অধিনায়ক কপিল দেব প্রায় ২০ গজ দূর থেকে দৌঁড়িয়ে এসে ভিভ রিচার্ডসের ক্যাচ লুফে নেয়া ছিল উল্লেখযোগ্য ঘটনা। মহিন্দর অমরনাথ সুনিয়ন্ত্রিত বোলিং করে ৭ ওভারে মাত্র ১২ রান দেন। তার অল-রাউন্ড নৈপুণ্যে বিচারকদের বিবেচনায় তাকে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার প্রদান করা হয়।[১]
স্কোরকার্ড
ভারতীয় ইনিংস
উইকেট পতন ১-২ (গাভাস্কার), ২-৫৯ (শ্রীকান্ত), ৩-৯০ (অমরনাথ), ৪-৯২ (শর্মা), ৫-১১০ (কপিল), ৬-১১১ (আজাদ), ৭-১৩০ (বিনি), ৮-১৫৩ (পাতিল), ৯-১৬১ (মদন), ১০-১৮৩ (কিরমানী)
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস
উইকেট পতন ১-৫ (গ্রীনিজ); ২-৫০ (হেইন্স), ৩-৫৭ (রিচার্ডস), ৪-৬৬ (গোমস), ৫-৬৬ (লয়েড), ৬-৭৬ (বাক্কাস), ৭-১১৯ (ডুজন), ৮-১২৪ (মার্শাল), ৯-১২৬ (রবার্টস), ১০-১৪০ (হোল্ডিং)
তথ্যসূত্র