সৌদি আরবের খেলাধুলা সৌদি আরবের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং দেশটি অনেক আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে থাকে। ফুটবল একটি বিশেষ জনপ্রিয় খেলা এবং সৌদি আরব তিনবার এশিয়ান কাপ জিতেছে এবং পাঁচ বার ফিফা বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণ করেছে, অন্যদিকে ক্রিকেট এবং বাস্কেটবলের মতো খেলাগুলিও ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে। ২০১০ এর দশকে সৌদি আরবে মহিলাদের খেলাধুলার উপর বিধিনিষেধ কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হলেও খেলাধুলায় নারীদের অংশগ্রহণ বিতর্কিত রয়ে গেছে।
সৌদি আরবের সর্বাধিক জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে খেলাটির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কিছু সৌদি খেলোয়াড় বর্তমানে ইউরোপের বিভিন্ন লীগে খেলেন। সৌদি আরব জাতীয় ফুটবল দল সৌদি ফুটবল ফেডারেশন (এসএফএফ) দ্বারা পরিচালিত হয়। এসএফএফ সৌদি লীগ এবং সৌদি আরব কাপের আয়োজন করে থাকে। সৌদি জাতীয় ফুটবল দল ১৯৯৪, ১৯৯৮, ২০০২, ২০০৬ এবং সম্প্রতি ২০১৮ সালে পাঁচটি ফিফা বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। সৌদি ফুটবল দল সাতটি এএফসি এশিয়ান কাপ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে, তারা ১৯৮৪ সালে প্রথম বার এএফসি এশিয়ান কাপে অংশ নেয়। এএফসি কাপে ১৯৮৪, ১৯৮৮ এবং সম্প্রতি ১৯৯৬ সালে মোট তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয় সৌদি আরব জাতীয় ফুটবল দল। সৌদি আরব নিয়মিতভাবে আরব উপসাগরীয় কাপ, এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং আরব নেশনস কাপে অংশ নেয়।
রাজধানী রিয়াদের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকণ্ঠে অবস্থিত সৌদি আরবের একটি শহর দিরিয়াহর রিয়াদ স্ট্রিট সার্কিটে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ট্র্যাকটির দৈর্ঘ্য ২.৪৯৫ কিমি এবং ২১ টি বাঁক আছে।
ক্রিকেট সৌদি আরবের দ্বিতীয় সর্বাধিক জনপ্রিয় খেলা, মূলত দক্ষিণ এশীয় প্রবাসীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার কারণে এটি হয়েছে। তারা তাদের অতিরিক্ত সময়ে খেলাটি খেলে থাকে। যাইহোক, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ক্রিকেট ফাইক হাবীব এবং নাদিম আল নাদভীর মতো অনেক স্থানীয় আরবদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করেছে, এরা উভয়ই জাতীয় পর্যায়ে সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বর্তমানে ৮০০০ এরও বেশি সৌদি ক্রিকেটার রয়েছেন, যাদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ স্থানীয় আরব এবং বাকিদের বেশিরভাগই পাকিস্তান, ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মতো দেশ থেকে আগত।
সৌদি আরবের অনেক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে, এর মধ্যে ইয়ানবু আল সিনাইয়াহ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন বৃহত্তম। প্রতিটি বড় শহরের নিজস্ব সংস্থা আছে যাদের প্রতিটি পদ্ধতির জন্য নিজস্ব ঘরোয়া কাপ আছে।
২০১০ সাল থেকে সৌদি আরব তার ক্রিকেটের শৈলীর জন্য যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছে, কারণ তারা ঘরের মাঠে বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক টুর্নামেন্ট জিতেছে, যদিও ঘরোয়া খেলোয়াড়রা কেবল কংক্রিটের পিচে খেলে থাকেন। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে সৌদি আরব সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় লাভ করে, তারা নামিবিয়ার জাতীয় দলকে ১৪১ রানে হারায়। এর ২ মাস পরে তারা তাদের প্রথম বড় সিরিজও জিতে নেয়। কেনিয়া, উগান্ডা এবং কাতারকে নিয়ে চারজাতি টুর্নামেন্টে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়।
সৌদি আরবের শ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার শোয়েব আলী, যিনি দেশে এবং দেশের বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই বেশিরভাগ জয়ের জন্য অবদান রেখেছেন এবং ২০০৮ সাল থেকে তিনি দেশটির ক্রিকেট দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি একজন বোলিং অলরাউন্ডার, ২০০৮ সালে এসিসি অনূর্ধ্ব -১৯ চ্যালেঞ্জ কাপে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁর অভিষেক হয়।
সৌদি ক্রীড়া কর্তৃপক্ষের অফিসিয়াল পেইজ অনুসারে, সৌদি ক্রিকেট ফেডারেশন, দল বা ইউনিয়নের কোনও অস্তিত্ব নেই।[১]
বাস্কেটবলও সৌদি আরবের একটি জনপ্রিয় খেলা। সৌদি প্রিমিয়ার লীগের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় এফআইবিএ এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছে এবং মাহমুদ আবদুল-রউফের মতো খেলোয়াড়রা এনবিএ-খেলোয়াড়দেরও আকৃষ্ট করেছে।
সৌদি আরবে রাগবি ইউনিয়ন একটি গৌণ তবে ক্রমবর্ধমান খেলা, যা সৌদি আরবে কয়েক দশক ধরে খেলা হয়ে আসছে। স্থানীয় রাগবি ক্লাবগুলির অনেকগুলি ১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে প্রতিষ্ঠিত হয়।
আইস হকিও একটি গৌণ খেলা তবে সৌদি আরবে এটি জনপ্রিয় নয়, ২০১০ সালে উপসাগরীয় আইস হকি চ্যাম্পিয়নশিপের সময় প্রথম খেলা হয়।
পেশাদারি কুস্তি
পেশাদারি কুস্তি সৌদি আরবের একটি স্বীকৃত গৌণ খেলা। দেশটি যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক প্রচারণার দ্বারা একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, জেদ্দায় ডব্লিওডব্লিওই ২৭ এপ্রিল, ২০১৮ তে গ্রেটেস্ট রয়্যাল রাম্বল খেতাবের আয়োজন করে। সৌদি ভিশন ২০৩০ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে সংস্থাটি ২০১৮ এর শেষের দিকে রিয়াদে দ্বিতীয় বার খেলার আয়োজন করে।[২]
ডব্লিউডব্লিউই এর প্রোগ্রামিং (উদাঃ ডাব্লুডাব্লুই ওয়াল৩ওহা) ওএসএন স্পোর্টস অ্যাকশন ১ এ সারা দেশে প্রচারিত এবং ডব্লিউডব্লিউই নেটওয়ার্ক স্ট্রিমিং সেবাতে যুক্ত আছে।