সাধনা বসু

সাধনা বসু
সাধনা বসু আলিবাবা ছবির পোস্টারে, ১৯৩৭
জন্ম
সাধনা সেন

(১৯১৪-০৪-২০)২০ এপ্রিল ১৯১৪
মৃত্যু৩ অক্টোবর ১৯৭৩(1973-10-03) (বয়স ৫৯)
পেশাঅভিনেত্রী
পরিচিতির কারণঅভিনয়, নৃত্য শিল্পী
দাম্পত্য সঙ্গীমধু বসু

সাধনা বসু (জন্ম: ২০ এপ্রিল, ১৯১৪ - মৃত্যু: অক্টোবর ৩, ১৯৭৩)[] বাংলা মঞ্চেব় ও সবাক চলচ্চিত্রের প্রথম যুগের প্রখ্যাত অভিনেত্রী ও নর্তকী। উদয় শঙ্করের সমসাময়িক এই অভিনেত্রী তাঁর পরিচালনায় মঞ্চস্থ ব্যালে ভুখওমর খৈয়াম, এবং সিনেমার পর্দায় তাঁর স্বামী প্রখ্যাত পরিচালক মধু বসুর পরিচালনায় আলিবাবা, কুমকুম, রাজনর্তকী ইত্যাদি ছবিতে অভিনয়ের জন্যে বিখ্যাত হয়ে আছেন।

জন্ম ও বাল্যকাল

ব্রক্ষ্মানন্দ কেশব সেনের পুত্র ব্যারিস্টার সরল চন্দ্র সেন ও তার পত্নী নির্মলা সেন-এর তিন কন্যার মধ্যমা সাধনার জন্ম ২০ শে এপ্রিল, ১৯১৪। তার বড় দিদি বিনীতার বিবাহ হয় চট্টগ্রামের রাজপরিবারে; ছোটো বোন নিলিনার বিবাহ হয় কাপুরথলার রাজপরিবারে, যিনি পরবর্তীকালে প্রখ্যাত ঠুমরী গায়িকা নয়না দেবী নামে প্রসিদ্ধ হন।[] সাধনার শিক্ষার সূচনা হয় তাঁরই পিতামহের প্রতিষ্ঠিত ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশনে; পরে লোরেটো কনভেন্টে ভর্তি হন। শৈশবেই মার অনুপ্রেরণায় তিন বোন বিষানী নামে একটি নাচ-গানের দল গড়ে তোলেন।

অভিনয় জীবন; বিবাহ

খুবই কম বয়সে সাধনা মধু বসুর প্রতিষ্ঠিত কলকাতা আর্ট প্লেয়ার নামক থিয়েটার-গোষ্ঠীতে যোগ দেন। ১৯২৮ সালে গোখেল মেমোরিয়াল স্কুলের সাহায্যকল্পে এমপায়ার থিয়েটারে কলকাতা আর্ট প্লেয়ার প্রযোজিত ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ-এর আলিবাবা নাটকে গৌণ ভূমিকায় অভিনয় করেন। মধু বসু পরিচালিত দালিয়া নাটকে (১৯৩০) তার প্রথম মুখ্য চরিত্রে অভিনয়। সেই বছরেরই ১৫ই ডিসেম্বর মধু বসুর সাথে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়। ১৯৩৪ সালে আলিবাবা নাটকের পুনরাভিনয়ে মুখ্য ভূমিকায় তিনি অভিনয় করেন। এই নাটকটিরই চলচ্চিত্র রূপ দেন মধু বসু ১৯৩৭ সালে[]; যার প্রধান ভূমিকায় ছিলেন সাধনা। ভারতলক্ষী স্টুডিও প্রযোজিত বাণিজ্য সফল এই ছবিটিকে আজও দর্শক মনে রেখেছেন।

মঞ্চ ও চলচ্চিত্র, উভয় মাধ্যমেই সাধনা বসুর প্রধান পরিচয় নর্তকী হিসাবে। শৈশবকাল থেকে নাচ শিখেছেন গুরু তারানাথ বাগচী (কথ্থক), সেনারিক রাজকুমার (মণিপুরী) ইত্যাদিদের থেকে; গান-বাজনা শিখেছেন ওস্তাদ ইনায়েত্ খাঁ, তিমির বরণ এবং শচীন দেব বর্মণের কাছে; পিয়ানো শিখেছেন ফ্রাংকো পোলোর কাছে। নবজাগ্রত ধ্রুপদী নাচগুলির বিভিন্ন শৈলীগুলিকে একত্রিত করে ব্যালের অনুপ্রেরণায় তিনি যে আধুনিক ডান্স ফর্মের জন্ম দেন, তার অসামান্য উদাহরণ ভুখ, ওমর খৈয়াম ইত্যাদি নাটিকা। বাঙ্গালী মধ্যবিত্ত সমাজে নাচকে একটি সম্মাননীয় আর্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে সাধনা বসুর অবদান অনস্বীকার্য।

আলিবাবা ছবিটির বাণিজ্যিক সাফল্যের পরে মধু বসু-সাধনা বসু জুটি একাধিক সফল বাংলা ও দ্বিভাষিক (বাংলা ও হিন্দী) ছবি উপহার দেন। এই সব ছবির মধ্যে অভিনয় (১৯৩৮), কুমকুম (১৯৪০), রাজনর্তকী (১৯৪২) বিশেষ উল্লেখযোগ্য। রাজনর্তকী ছবিটির একটি ইংরাজী সংস্করণ দা কোর্ট ডান্সার নামে মুক্তি পায়। সাধনা বসু অভিনীত শেষ ছবি বিক্রমোর্বশী (১৯৫৪)| মধু বসু ছাড়াও হিন্দী ভাষায় তিনি চতুর্ভুজ যোশী, কিদার শর্মা প্রভৃতি পরিচালকদের সাথে কাজ করেন।[] প্রখ্যাত কত্থক শিল্পী শোভনা নারায়ন সাধনা বসুর শিষ্যা।[]

মৃত্যু

১৯৬৯ সালে মধু বসুর দেহাবসানের পর সাধনা বসুর শেষ জীবন নিদারুণ অর্থকষ্টের মধ্যে কাটে। ৩রা অক্টোবর, ১৯৭৩ সালে সাধনা বসু শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

চলচ্চিত্রপঞ্জী

তথ্যসূত্র

  1. শিল্পীর আত্মকথা, সাধনা বসু, প্রতিভাস, জানুয়ারি ২০১২, বইমেলা
  2. http://www.imdb.com/name/nm0097895/bio
  3. আমার জীবন, মধু বসু, প্রতিভাস, জানুয়ারি ২০১২, বইমেলা
  4. https://wiki.indiancine.ma/wiki/Sadhona%20Bose
  5. http://www.hindu.com/br/2007/01/02/stories/2007010200751800.htm[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!