সর্দার আখতার (১৯১৫ – ১৯৮৬) হিন্দি চলচ্চিত্র এবং উর্দু চলচ্চিত্রের একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ছিলেন। তিনি উর্দু মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন। অভিনয় জগতে তাঁর প্রথম দিকের অধিকাংশ চলচ্চিত্র ছিল সরোজ মুভিটোনের সাথে, যেখানে তিনি বেশিরভাগ অভিনয় অ্যাকশন নির্ভর চরিত্রে করেছিলেন। তিনি ১৯৩৯ সাল মুক্তিপ্রাপ্ত সোহরাব মোদীর পুকারে রামি ধোবান চরিত্রে অভিনয় করেছেন; যেখানে তাঁর "ধোপানী" চরিত্রটি সকলের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিল। উক্ত চলচ্চিত্রে একজন নারী তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য ন্যায়বিচার কামনা করেছে,- এই চরিত্রটি ছিল তাঁর জন্য এক যুগান্তকারী চরিত্র। এই চলচ্চিত্রে "কাহেকো মোহে ছেড়ে" নামক একটি জনপ্রিয় গানে তিনি কণ্ঠ দিয়েছিলেন।[২] তার চলচ্চিত্র জীবনের উল্লেখযোগ্য চরিত্রটি হচ্ছে স্বামীর অনুপস্থিতিতে একজন কৃষক নারীর সংগ্রাম; এই চরিত্রটি তিনি ১৯৮০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মেহবুব খানের আউরতে চিত্রায়ন করেছেন। পরবর্তীতে এই চরিত্রটি মেহবুবের পুনঃতৈরিকৃত চলচ্চিত্র মাদার ইন্ডিয়ায় নার্গিস দ্বারা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।[৩]
১৯৩৩–৪৫ সালের সময়কালে সর্দার তাঁর অভিনয় জীবনে ৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সর্দার ১৯৪২ সালে মেহবুব খানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, যাঁকে তিনি ১৯৪০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আলি বাবা চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী নির্বাচনের সময় সর্বপ্রথম দেখেছিলেন। তিনি ১৯৪৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ফ্যাশন চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবনের প্রথম ভাগ শেষ করেন। ১৯৭০-এর দশকে মুক্তিপ্রাপ্ত ও. পি. রায়হানের হালচালে অভিনয় করার মাধ্যমে তাঁর অভিনয় জীবনের দ্বিতীয় ভাগ শুরু হয়।[৪]
প্রারম্ভিক জীবন
সর্দার আখতার ১৯১৫ সালে, তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমানে পাকিস্তান) লাহোরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি চমকপ্রদ কৌশল দেখানো নেপথ্য শিল্পী (স্টান্ট) হিসাবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন[৫] এবং মদন থিয়েটার্স লিমিটেডের প্রযোজনায় আয়োজিত মঞ্চ নাটকগুলোতে অভিনয় করার মাধ্যমে অভিনয় জগতে পদার্পণ করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
ব্যক্তিগত জীবন
সর্দার আখতার বাহার আখতারের বড় বোন ছিলেন, তিনিও একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিনেত্রী ছিলেন।[৫] এ. আর. কার্দারের বিপরীতে কাতিল কাতার নামক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁদের উভয়ের একসাথে অভিষেক হয়েছিল। এই চলচ্চিত্র নির্মাণের সময় এর প্রযোজনা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত বাহার চলচ্চিত্রে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
আলিবাবা তৈরির সময় সর্দার আখতারের মেহবুব খানের সাথে দেখা হয়েছিল এবং দুজন একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, যা ১৯৪২ সালে তাঁদের বিবাহে পরিণতি লাভ করে। এটি ছিল মেহবুবের দ্বিতীয় বিবাহ।[৬]
যদিও আখতার ১৯৪৫ সালের পরে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি মেহবুব খানকে ১৯৫২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আন, আন্দাজ এবং মাদার ইন্ডিয়ার মতো চলচ্চিত্র নির্মাণে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন।[৭] তিনি তাঁর পছন্দের অভিনয়শিল্পীদের চলচ্চিত্র দেখতে খুব ভালবাসতেন; যাঁদের মধ্যে বেটি ডেভিস, নর্মা শিয়েরার, ভিভিয়েন লেই এবং শার্ল বোয়ায়ে অন্যতম।[৮]
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ