শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজরাজশাহীতে অবস্থিত একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত এই কলেজটি রাজশাহীতে অবস্থিত বেসরকারি মেডিকেল কলেজসমূহের মধ্যে একটি। ২০১২ সালে সাবেক শিল্পমন্ত্রী জনাব ওমর ফারুক কলেজের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে কলেজটি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন পায়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০২০-২০২১ শিক্ষা বর্ষে তাদের ভর্তি নিষিদ্ধ করেছ। পরবর্তীতে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট মামলা করলে হাইকোর্ট ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তি অনুমোদন দিয়েছে।[১]
অবস্থান
শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস রাজশাহী শহরের উপকণ্ঠে মেট্রোপলিটন এলাকার বোয়ালিয়া থানার অন্তর্গত খড়খড়ীতে অবস্থিত। রাজশাহী বাস স্ট্যান্ড(নওদাপাড়া) থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা থেকে দুই কিলোমিটার দূরে সবুজ শ্যামল পরিবেশে কলেজ ক্যাম্পাস অবস্থিত।[২]
ইতিহাস
শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ইতিহাস ২০০৭ সালে শুরু হয়েছিলো স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্যসেবা এবং জন-সচেতনতা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে। তবে তখনও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয় নি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে ২০১১-১২ শিক্ষা বর্ষ থেকে নার্সিং ডিপ্লোমা ও মেডিকেল টেকনোলজি প্রোগ্রাম চালু করা হয়। তবে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমবিবিএস কোর্সের অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন ছিলো। অবকাঠামোগত কিছু সমস্যার কারণে পর পর তিনবার সরকারি পরিদর্শনে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বৃদ্ধির পরামর্শ দেওয়া হলেও উক্ত কোর্সের অনুমোদন দেওয়া হয় নি। অবশেষে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমবিবিএস কোর্সে ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে পাঠদানের অনুমতি দেওয়া হয়। বর্তমানে এখানে ৪০ জন শিক্ষকের অধীনে প্রায় ১৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে।
কলেজ অবকাঠামো
শাহ মখদুম মেডিকেল কমপ্লেক্সের নিজস্ব ২০ বিঘা জমির পূর্বাংশে প্রায় পাঁচ বিঘা জমির ওপর ১ লক্ষ বর্গফুট আয়তনের তিনতলা বিশিষ্ট ভবনে কলেজের একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। একাডেমিক ভবনের সামনে ছেলেমেয়েদের জন্য ফলজ,বনজ ও ঔষধি গাছে ঘেরা একটি খেলার মাঠ, মুক্ত মঞ্চ, শহীদ মিনার, শাপলা চত্বর এবং অন্য অংশে একটি হাসপাতাল অবস্থিত। হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা পরিচালিত আউটডোর, ইনডোর এবং ডায়াগনস্টিক ইউনিট চালু আছে। কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্রদের জন্য দুইটি আবাসিক হল ( একটি নির্মাণাধীন) এবং ছাত্রীদের জন্য আলাদা একটি হল রয়েছে। ছাত্র হলের নীচতলায় একটি আধুনিক ক্যান্টিন আছে,যেখানে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। কলেজের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। জমি সম্প্রসারণের মাধ্যমে আরো ভবন নির্মাণের কাজও প্রক্রিয়াধীন।
অনুষদ
কলেজ হিসেবে নতুন হলেও এখানে ৪০ জন শিক্ষক এবং ৬৩ জন স্টাফের মাধ্যমে ১৪ টি অনুষদ পরিচালনা করা হয়। আরো কিছু অনুষদ এবং স্নাতকোত্তর কোর্স সমূহ চালু করার কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে।
পরিবহণ ব্যবস্থা
ছাত্র-ছাত্রী, স্টাফ এবং শিক্ষকদের পরিবহন করার জন্য কলেজের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা আছে। কলেজটিতে একটি বাস, দুইটি কার, একটি মাইক্রোবাস ক্রয় করা হয়েছে। তাছাড়া দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছানোর জন্য কলেজে একটি আধুনিক সুবিধা সংবলিত এম্বুলেন্স আছে।
সমালোচনা
২০১৪ সাল থেকে কলেজটিতে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হলেও, প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না করায় কলেজটি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নিবন্ধন পায়নি। এতে এমবিবিএস পাস করা চারজন শিক্ষার্থী ইন্টার্নশিপ করতে না পেরে এক বছর বসে ছিলেন।[১] রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলেজ পরিদর্শন শেষে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমোদন দিলেও কলেজে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়, এ জন্য সেই সেশনের কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো।[৩]