লাস ভেগাস সংস্কৃতি হল দক্ষিণ আমেরিকার এক সুপ্রাচীন সংস্কৃতি। প্রাগঐতিহাসিক এই সংস্কৃতির বিকাশকাল মোটামুটি ৮০০০ - ৪৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।[১] কালের বিচারে এই সভ্যতার সময়কাল প্লাইস্টোসিন যুগের একেবারে শেষ দিক থেকে শুরু হয়ে বর্তমান হলোসিন উপযুগে বিস্তৃত বলে মনে করা হয়। তবে অত্যন্ত ছোট ছোট মূলত পরিবারকেন্দ্রিক উৎপাদনভিত্তিক এই সংস্কৃতি তখনও তেমন কোনও কেন্দ্রীয় প্রশাসন যতদূর সম্ভব গড়ে তুলতে পারেনি। এই কারণে সভ্যতা শব্দটির তুলনায় সংস্কৃতি শব্দটি এদের বর্ণনায় বেশি উপযুক্ত। নৃতত্ত্ববিদ কারেন ই স্টোটার্ট'এর মতে ইকুয়েডরের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল অঞ্চলের জটিল জীববৈচিত্রের সাথে সাথে সুন্দরভাবে খাপ খাইয়ে এরা এদের বসতিগুলি গড়ে তুলেছিল।[১] এই অঞ্চলে খুঁজে পাওয়া প্রায় ৩১টি সুপ্রাচীন বসতির অবশেষ থেকে পাওয়া জিনিসপত্রের রেডিওকার্বন পরীক্ষায় এদের বয়সের প্রাচীনত্ব সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত হয়েছে।[২]
এখানকার মানুষ ছিল মূলত শিকারী ও সংগ্রাহক; তবে এরা মাছ ধরতে জানতো। এদের বসতিতে হাড়ের তৈরি সূঁচ ও চামচ জাতীয় যে জিনিসগুলি খুঁজে পাওয়া গেছে, তার থেকে ধারণা করা হয়, তারা সুতো দিয়ে জাল এবং সম্ভবত অন্যান্য কাপড়ও বুনতে পারত। নব্যপ্রস্তরযুগের পাথর ও হাড় দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরনের হাতিয়ার তৈরির প্রমাণ এখানে বেশ ক'টি জায়গায় খুঁজে পাওয়া গেছে। পরবর্তীকালে এরা আদিম পদ্ধতিতে চাষও শুরু করে। ৬০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ তারা যে লাউ, মেইজ, প্রভৃতি কিছু খাদ্যদ্রব্য অন্তত চাষ করতে শুরু করেছিল, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া কাঠ, বাঁশ, লম্বা ঘাস ও গাছের ছালও এরা নানা কাজে ব্যবহার করতো।[৩] তবে মৃৎপাত্র তৈরির পদ্ধতি এদের জানা ছিল না।
এরা ছোট ছোট দলে বাস করতো। তবে আশেপাশের নানা অঞ্চলের মানুষের সাথে এদের যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রায় ৩০০০ বছরের মধ্যে এদের জীবনযাপন পদ্ধতিতে খুব সামান্যই পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল।[১] বর্তমান ইকুয়েডরের সান্তা এলেনা অঞ্চলের সুম্পাতে এদের সবচেয়ে বড় বসতিটি আবিস্কৃত হয়েছে।
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন