রাবওয়া (উর্দু, পাঞ্জাবি: ربوہ), অফিসিয়াল নাম চেনাব নগর (উর্দু: چناب نگر), পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের চিনিট জেলার একটি শহর। এটি চেনাব নদীর তীরে অবস্থিত। আহমদীয়া সম্প্রদায়ের প্রধান সদর দফতর এখানে অবস্থিত । ১৯৪৮ সালের ২০শে সেপ্টেম্বর থেকে আহমদীয়া সম্প্রদায়ের সদর দফতর গঠন করা হয়, যেখানে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর সম্প্রদায়টি ভারতের কাদিয়ান থেকে এটির সদর দপ্তর পাকিস্তানে স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে পাকিস্তানের স্বাধীনতা অর্জনের পর আহমদীয়া খলিফাসহ সমাজের অন্যান্য বেশিরভাগ ভারতীয়ই নিজ দেশ থেকে চলে আসেন এবং রাবওয়ায় বসবাস শুরু করেন।।[৩] বর্তমানে সম্প্রদায়টির সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমান সরকারের কাছ থেকে রাবওয়া এলাকাটি ইজারা নিয়েছেন।[৩]
ইতিহাস
ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে, রাবওয়া হচ্ছে মুহাম্মদ বিন কাশিম সিন্ধু ও মুলতান জয় করে চিনাব নদী অতিক্রম করে কাশ্মির দিকে অগ্রসর হয়েছিলেন।
এখানে আরবরা "চন্দ্রোদ" (যেটি সম্ভবত চিনিটের প্রাচীন নাম) হিন্দু রাজা বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হয়। উক্ত যুদ্ধে ১০০ জনেরও বেশি সৈন্য নিহত হয় বর্তমান সময়ে সমাধিস্থলটি "শহীদদের কবরস্থান" নামে চিনিটের মধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে।[৪]
রাবওয়া প্রতিষ্ঠার পূর্বে এলাকাটি অনুর্বর ছিল এবং "চক দিগিয়ান" নামে পরিচিত ছিল। অধিকাংশ কাদিয়ান সদস্যের অভিবাসনের পর জমিটি আহমদীয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ইজারা দেওয়া হয়েছিল এবং ভারতের পাঞ্জাবের অন্যান্য অংশকে পুরানো সদর দপ্তর থেকে নতুনভাবে পাকিস্তানে নির্মাণ করা হয়।
↑Muhammad Bin Qasim Pakistan Men by Doctor Abdul Hameed Khan M.A. Ph.D Royal Pakistan Navy, page 21,22
নাম পরিবর্তন
১৯৯৮ সালের ১৭ নভেম্বর তারিখে পাঞ্জাব বিধানসভা রাবওয়া নাম পরিবর্তন করার জন্য একটি রেজোলিউশন পেশ করে। পাঞ্জাব সরকার ১২ই ডিসেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে যে, রাবওয়া শহরের নতুন নাম 'নবীন কাদিয়ান' তাত্ক্ষণিকভাবে রাখা হয়। ১৯৯৯ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি তারিখে আরেকটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় যে, পূর্বের বিজ্ঞপ্তিটি স্থগিত করে নবীন কাদিয়ানকে থেকে 'চেনাব নগর' (যার অর্থ: চেনাবের শহর) নামে নামান্তর করা হয়। এছাড়াও অন্যান্য বিবেচিত নাম ছিল চক ডিগিয়ান, মোস্তফা আবেদ, সিদ্দিক আবেদ ইত্যাদি। রাব্বাহ এর নাম পরিবর্তন করার জন্য প্রণীত নীতিমালা পাঞ্জাব সংসদের একজন বেসরকারী সদস্যের ব্যবসা দিবসে সর্বসম্মতিক্রমে পাশ করা হয়। যাইহোক, ২৭৫ জন শক্তিশালী হাউস থেকে মাত্র ৬৭ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।[১] স্থানীয় জনগণের সাথে কোনরুপ পরামর্শ ছাড়া নামটি পরিবর্তন করা হয়েছিল।[১] রাবওয়া একটি নাগরিক অধিকার সংগঠন এই প্রস্তাবটিকে; "অসাংবিধানিক, অনৈতিক এবং সভ্য সমাজের সমস্ত নিয়মনীতির পরিপন্থী, যেটি অসহিষ্ণুতা, সংকীর্ণ অগ্রগতী এবং কপটতা সৃষ্টি করবে" বলে অভিহিত করে।[২]