রংপুর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (সংক্ষেপে রংপুর ইপিজেড) রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় প্রস্তাবিত বাংলাদেশের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল।[১][২] বর্তমানে এটির জমি অধিগ্রহনের কাজ চলছে এবং চালু হলে তা হবে দেশের দশম ইপিজেড।[৩][৪]
অবস্থান
রংপুর শহরের অদূরে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে সাহেবগঞ্জ বাজার এলাকায় প্রস্তাবিত ইপিজেডটির অবস্থান। এই ইপিজেড থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ৭০ কিলোমিটার, হিলি স্থলবন্দর ৩২ কিলোমিটার এবং সম্প্রসারণাধীন বগুড়া বিমানবন্দরের অবস্থান ৩৪ কিলোমিটার দূরে। এছাড়াও প্রস্তাবিত ইপিজেড থেকে মহিমাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের দুরত্ব ১৭ ও গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনের দুরত্ব ৩২ কিলোমিটার এবং ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের দুরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার। যে কারণে যোগাযোগ ও মালামাল সরবরাহ এবং পরিবহনের ক্ষেত্রে এই ইপিজেড অত্যন্ত সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় বেপজা এই স্থান নির্বাচনে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে।
ইতিহাস ও স্থাপন বিতর্ক
২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বেপজা গভর্নর বোর্ডের ৩৪ তম সভায় রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের ১,৮৪২ একর জমিতে ‘রংপুর রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা’ (আরইপিজেড) স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।[১] সে মোতাবেক শিল্প মন্ত্রণালয় এ জমি বেপজার অনুকুলে হস্তান্তরের নির্দেশনা দেয়। এরও আগে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমিতে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে তিনজন নিহতসহ কয়েক জন সাঁওতাল আহত হন।[৫] শুরু থেকেই স্থানীয় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন এই ইপিজেড স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছিল যে তাঁদের পৈতৃক ভিটা-মাটিতে সাঁওতাল-বাঙালির মতামত উপেক্ষা করে যথাযথ আলোচনা ছাড়াই বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণের সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে।[৬][৭][৮][৯] একই সাথে স্থানীয়দের একটি অংশ ইপিজেড স্থাপনের পক্ষে এবং তাঁদের দাবি এটি স্থাপিত হলে এলাকাটির আর্থ-সামাজিক অবস্থা আমূলে পরিবর্তন হবে এবং বিপুল পরিমানে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।[৮][১০] সম্প্রতি ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জানানো হয় ১ হাজার ৮৪২ একর জমির মধ্যে ৪৫০ একর জমি বেপজার কাছে হস্তান্তর করে বাকি জমি আইন মেনে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সাঁওতাল-বাঙালিদের মধ্যে লিজ প্রদান করা হবে।[৯]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র