যোধপুর ভারতের রাজস্থান রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ১.৫২ মিলিয়নের অধিক জনসংখ্যার সাথে রাজ্যের দ্বিতীয় মহানগর।[৮] এটি পূর্ববর্তী যোধপুর রাজ্যের (দেশীয় রাজ্য) রাজধানী ছিল। যোধপুর ঐতিহাসিকভাবে মারোয়ার রাজ্যের রাজধানী ছিল, যা বর্তমানে রাজস্থানের অংশ। থর মরুভূমির প্রাকৃতিক দৃশ্যপটে স্থাপিত বহু প্রাসাদ, দুর্গ ও মন্দিরসমূহের দ্বারা সমন্বিত যোধপুর একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এটি রাজস্থান ও সমগ্র ভারতের মানুষের মধ্যে "ব্লু সিটি" বা নীল শহর নামে জনপ্রিয়।[১] শহরটি যোধপুর জেলা ও যোধপুর বিভাগের প্রশাসনিক সদর দপ্তর হিসাবে কাজ করে।
পুরানো শহরটি মেহরানগড় দুর্গের চারদিকে বৃত্তাকারভাবে অবস্থিত এবং বেশ কয়েকটি দরজা বিশিষ্ট প্রাচীর দ্বারা আবদ্ধ।[৯] যদিও বিগত কয়েক দশক ধরে শহরটি প্রাচীরের বাইরে বিস্তৃত হয়েছে। যোধপুর রাজস্থান রাজ্যের ভৌগোলিক কেন্দ্রের নিকটে অবস্থিত, এটি পর্যটকদের দ্বারা প্রায়শই এই অঞ্চলে ভ্রমণের জন্য একটি সুবিধাজনক ঘাঁটি তৈরি করে।[১] শহরটি নিউ ইয়র্ক টাইমসের২০২০-এর ৫২ টি সেরা স্থান শীর্ষকে প্রদর্শিত হয়।[১০]
রাজস্থান জেলা গেজেটিয়ার (ভৌগোলিক অভিধান) অনুসারে অভিরারা মারওয়ারের বাসিন্দা ছিল এবং পরে রাজপুতরা মারোয়ারে তাদের শাসন প্রতিষ্ঠা করে। রাঠোরের শাসনের আগে এই অঞ্চলে হয়তো ছোট ছোট জনবসতি ছিল।[১১][১২]
যোধপুর শহরটি রাঠোর বংশের রাজপুত প্রধান রাও যোধা ১৪৫৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি পার্শ্ববর্তী অঞ্চল জয় করতে সফল হন এবং এইভাবে একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন, যা মারোয়ার নামে পরিচিতি লাভ করে। রাও যোধা নিকটবর্তী শহর মান্ডোরের বাসিন্দা ছিলেন, সেই শহরটি প্রথমে রাজ্যের রাজধানী হিসাবে কাজ করে; তবে তাঁর জীবদ্দশায় যোধপুর রাজধানী শহরে উন্নীত হয়। শহরের মধ্যদিয়ে দিল্লিকে গুজরাটের সাথে সংযুক্তকারী কৌশলগত সড়ক অগ্রসর হয়ছে। এটি শহরটিকে আফিম, তামা, সিল্ক, চন্দন, খেজুর ও অন্যান্য ব্যবসা যোগ্য পণ্যসমূহের একটি সমৃদ্ধ বাণিজ্য থেকে লাভ করতে সক্ষম করে।[১৩]
জনসংখ্যার উপাত্ত
২০১১ সালের আদমশুমারির প্রতিবেদন অনুসারে,[৭] যোধপুরের জনসংখ্যা ছিল ১০,৩৩,,৯১৮ জন, যার মধ্যে প্রায় ৫২.৬২ শতাংশ পুরুষ এবং প্রায় ৪৭.৩৮ শতাংশ মহিলা রয়েছেন।
জলবায়ু
যোধপুরের জলবায়ু প্রায় বছরব্যাপী শুকনো মরসুমে উত্তপ্ত ও আধা শুষ্ক থাকে, তবে জুনের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরের (কপ্পেন বিএসএইচ) সংক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হয়। যদিও গড় বৃষ্টিপাত ৩৬২ মিমি (১৪.৩ ইঞ্চি) এর কাছাকাছি হয়, তবে এটি ব্যাপকভাবে ওঠানামা করে। দুর্ভিক্ষ বছর ১৮৯৯ সালের যোধপুরে মাত্র ২৪ মিমি (০.৯৪ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত প্রাপ্ত হয়, তবে ১৯১৭ সালের বন্যার বছরে ১,১৭৮ মিমি (৪৬.৪ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত ঘটে।
যোধপুর (১৯৭১–২০০০, চূড়ান্তভাবে ১৯৬৮–১৯৯৬)-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
বিভিন্ন শিল্পের মাধ্যমে রাজস্থানের অর্থনীতিতে যোধপুরের ৪ বিলিয়ন ডলারের (প্রায়) অবদান রয়েছে। যোধপুর হল ভারতের ২০০ মিলিয়ন ডলারের হস্তশিল্প শিল্পের কেন্দ্র। ভারতের শীর্ষস্থানীয় ঐতিহ্যবাহী হোটেলসমূহের সাথে বহু পোর্টালের মাধ্যমে যোধপুর অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।[১৮][১৯]
↑Gopal, Madan (১৯৯০)। K.S. Gautam, সম্পাদক। India through the ages। Publication Division, Ministry of Information and Broadcasting, Government of India। পৃষ্ঠা 178।
↑"Station: Jodhpur RS/RW Climatological Table 1971–2000"(পিডিএফ)। Climatological Normals 1971–2000। India Meteorological Department। অক্টোবর ২০১১। পৃষ্ঠা 365–366। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল(পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০২০।