মুম্বই বন্দর হল ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীন (প্রথম কলকাতা) বন্দর। এটি ভারতের পশ্চিম উপকূলে আরব সাগরের তীরে অবস্থিত। বর্তমানে বন্দরটির আধুনিকীকরন করা হয়েছে। বন্দরের ৪০০ বর্গ কিলোমিটার (১৫০ বর্গ মাইল) বিস্তৃত পোতাশ্রয়ের পূর্ব ও উত্তর থেকে কঙ্কনের মূল ভূখণ্ড এবং পশ্চিমে মুম্বইয়ের দ্বীপ অবস্থিত।[৩] পোতাশ্রয়টির দক্ষিণে আরব সাগর।
বন্দর মুম্বই মুম্বই বন্দর ট্রাস্ট (এমপিপিটি) দ্বারা পরিচালিত হয়, একটি স্বশাসিত সংস্থা যা সম্পূর্ণ ভারত সরকারের মালিকানাধীন।[৪] বন্দরটি মূলত বাল্ক পণ্যসম্ভার জন্য ব্যবহার করা হয় এবং কনটেইনার নবসেবা বন্দর দ্বারা পরিচালিত হয়।
অবস্থান
বন্দরটি উত্তর ও দক্ষিণে অবস্থিত।এটি আরোব সাগরের মুম্বই দ্বীপের আড়ালে অবস্থিত।বন্দরটি সমুদ্র সমতল থেকে সামান্য উচ্চতায় অবস্থিত।[৫]
ইতিহাস
শত শত বছর ধরে জাহাজ এবং নৌকা দ্বারা মুম্বই পোতাশ্রয় ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহার করেছে মারাঠা নৌবাহিনী এবং ব্রিটিশ ও পর্তুগিজ উপনিবেশিক নৌবাহিনী।
১৮৭০-এর দশকে মুম্বই বন্দরের বর্তমান দিনের ডকগুলি নির্মিত হয়েছিল। [৩] ১৮৭৩ সালের ২৬ জুন বম্বে পোর্ট ট্রাস্ট (বি.পি.টি.) একটি কর্পোরেশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। [৬] বি.পি.টি. এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন কর্নেল জে.এ. ব্যালার্ড।
ঊনবিংশ শতাব্দির শেষে বেসামরিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অংশীদারীতে স্যার জন উলফ-ব্যারি এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল আর্থার জন ব্যারিকে বোম্বে পোর্ট ট্রাস্টের যৌথ কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে বন্দর উন্নয়ন পরিচালিত হয়। [৭]
বন্দর প্রতিষ্ঠার দিক থেকে, বিদেশিদের কাছে বন্দরটি ভারতে প্রবেশের পথ ছিল এবং মুম্বই ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত হওয়ার একটি প্রধান কারণ ছিল মুম্বই বন্দর। বন্দর এবং কর্পোরেশন ১৯৯০ সালে বর্তমান নাম গ্রহণ করে।
কয়েক দশক ধরে, বার্থ এবং পণ্যসম্ভার হ্যান্ডলিং ক্ষমতা বিরধি করার সাথে, বন্দরের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছিল। তবে, মুম্বই শহরের প্রসারিত বৃদ্ধি এবং জনসংখ্যা চাপ ১৯৭০ সালের বন্দরের বৃদ্ধিকে সীমিত করেছে। এর জন্য নতুন মুম্বইের মুম্বই পোতাশ্রয়ের পার্শ্ববর্তী মূল ভূখণ্ডে কঙ্কনা উপকূলে নবসেবা বন্দর প্রতিষ্ঠা করা হয়। নবসেবা ১৯৯৮ সালে শুরু করে এবং এখন বেশিরভাগ কন্টেইনার ট্রাফিক নবসেবা বন্দরের মধ্য দিয়ে পরিবাহিত হয়।
সুযোগ-সুবিধা
মুম্বই বন্দর তিনটি ডক নিয়ে গঠিত। প্রিন্সেস ডককে ১৮৮০ সালে খোলা করা হয়েছিল। ২০০৮ সালের হিসাবে, এটি ৬.৪ মিটার (২১ ফুট) এর ন্যূনতম গভীরতাসহ ৮ টি বার্থ রয়েছে। ১৮৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত ভিক্টোরিয়া ডক, ২০০৮ সালের নথি অনুযায়ী ৬.৭ মিটার (২২ ফুট) ন্যূনতম গভীরতাসহ ১৪ টি বার্থ নিয়ে গঠিত। ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ইন্দিরা ডক, ৭.০ মিটার (২৩.০ ফুট)-এর ন্যূনতম গভীরতাসহ ২১ টি বার্থ নিয়ে গঠিত। প্রিন্স ডক এবং ভিক্টোরিয়া ডক আধা জোয়ার ডক। ডক দুটি থেকে জাহাজ ডকিং এবং প্রস্থান উচ্চ জোয়ারের দ্বারা হয়। ইন্দিরা ডক একটি লক আছে, যে কোনো সময়ে জাহাজের প্রবেশ বা প্রস্থান জন্য ডকটি সক্রিয় থাকে। [১]
বন্দরটির চারটি জেটি পোতাশ্রয়ে অবস্থিত একটি দ্বীপ জওহর দ্বীপে রয়েছে, যা কাঁচামাল এবং পেট্রোলিয়াম পণ্য পরিচালনা করার জন্য পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই জেটি ১২.২ মিটার (৪০ ফুট) গভীরতা যুক্ত। তরল রাসায়নিক পরিবহন পিরাপা'য় অবস্থিত একটি জেটি থেকে পরিচালনা করা হয়।
ব্যালার্ড জেটি এক্সটেনশন'য়ে কর্মী এবং ক্রুজ সংস্থার যাত্রীদের জন্য অভিবাসন ছাড়পত্র সুবিধা সহ একটি যাত্রী টার্মিনাল রয়েছে।
বন্দরের মোট ৬৩ টি নোঙরের স্থান রয়েছে। ১০০ টনের বেশি পণ্য পরিবহনকারি জাহাজে একজন নাবিক বা পাইলট থাকা বাধ্যতামূলক। [৮]