মিশর রহস্য সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ২০১৩ সালের একটি বাংলা রোমাঞ্চকর থ্রিলার চলচ্চিত্র।[২] সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত বিখ্যাত সিরিজ কাকাবাবুর উপন্যাস মিশর রহস্যর উপর নির্মিত[৩] এ চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছে শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস এবং এতে মুখ্য ভূমিকায় আছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, আরিয়ান ভৌমিক সহ আরো অনেকে।[৪] এর কাহিনী মিশরের পিরামিডের নিচের হায়ারোগ্লিফিক ভাষার উপর ভিত্তি করে শুরু হওয়া এক রোমাঞ্চকর যাত্রার উপর গড়ে উঠেছে। চলচ্চিত্রটি ২০১৩ সালের অন্যতম সেরা "হিট" ছিল।
কাহিনী
মিশরের একনায়কের পতনের খবর শুনে কাকাবাবু (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) ওরফে রাজা রায়চৌধুরী ও তার ভাইপো সন্তু (আরিয়ান ভৌমিক) আসে, এবং এই থেকেই চলচ্চিত্রটি শুরু হয়।
২০১০ সাল। মিশরীয় ব্যবসায়ী আল মামুন (রজত কাপুর) কাকাবাবুর কাছে হিয়েরোগ্লাফিক চিহ্ন বুঝিয়ে দেবার জন্য সাহায্য প্রার্থনা করে। এই চিহ্নগুলো তার শিক্ষক মুফতি মুহম্মদ (বরুন চন্দ) হঠাৎই ঘুম থেকে উঠে আঁকেন। মুহম্মদ বেশ অসুস্থ এবং তার শেষ ইচ্ছা প্রকাশ করতে চান। তিনি তখন দিল্লিতে চিকিৎসাধীন। মামুন মনে করে এই চিহ্নগুলো হল মিশরের কোন গুপ্ত অস্ত্রাগারের, যা মুফতি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সময়ে এক বিদ্রোহ চলাকালীন সংগ্রহ করেছিলেন। তবে কাকাবাবুকে বোঝানো হয় যে এই চিহ্নগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ অন্যদিক থেকে। মুফতির সাথে কাকাবাবুর দেখা হলে সে কিছু চিহ্নর সাহায্যে কাকাবাবুকে তার শেষ ইচ্ছা কি তা বোঝায়। কাকাবাবু সেইমত মিশরে যান। এখানে তিনি আল মামুন (রজত কাপুর) ও হানি আল-কাদি (ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত) এ দুই বিদ্রোহী দলের মধ্যে পড়ে যান। মুফতির অপর শিষ্য এই আলকাদি দাবি করে, মুফতি-এর শেষ ইচ্ছে পূরণ হলে তা হবে তার। এদিকে দিল্লিতে একবার কাকাবাবুকে খুনের চেষ্টা হয় এবং কাকাবাবু আহত হন। কাকাবাবুকে আলকাদির লোকেরা অপহরণ করে এবং পিরামিডের মধ্যে অনুপ্রবেশ করে। মিশরে প্রবাসী ভারতীয় কাকাবাবুর পরিচিত সিদ্ধার্থ (নীল মুখোপাধ্যায়) ও তার পরিবার সন্তুর সাথে কাকাবাবুকে খুঁজতে থাকে। এসময় তাদের সাথে যোগ দেন সিবিআই কর্তা কাকাবাবুর বন্ধু নরেন্দ্র বর্মা। ওদিকে পিরামিডের মধ্যে কাকাবাবু মুফতি মুহম্মদের কোডের মাধ্যমে হারানো রাণীর মমিকৃত দেহ খুঁজে পান। মিশরের হোসনি মোবারকের সময় ঘটে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতাও চলচ্চিত্রে এসেছে। শেষে দেশে ফিরে আসার সময় কাকাবাবু আল-কাদিকে মমির মধ্যে থাকা শেষ বার্তাটি দেন এবং আসন্ন বিদ্রোহের জন্য শুভকামনা জানান। শেষে আলকাদি মিশরকে একনায়ক যাশনি মুবারক (হোসনি মুবারকের অনুকরণে কাল্পনিক নাম)-এর হাত থেকে মুক্ত করে।
অভিনয়ে
উন্নয়ন
সৃজিত কাকাবাবু সিরিজের প্রথম তিনটি বইয়ের লাইসেন্স ক্রয় করেন এবং প্রতি বছর একটি করে চলচ্চিত্র বানাবেন (প্রসেনজিৎ কাকাবাবুর রোলে) বলে ঠিক করেন।[৫] এই চলচ্চিত্রের শ্যুটিং হয় ২০১৩-এর প্রথম দিকে কায়রো এবং দিল্লিতে,[৬][৭] চ্যাটার্জীর সাথে কারণ মুখার্জী তার চরিত্রটিকে আর বাস্তবসম্মত করে তুলছিলেন।[৮][৯] প্রসেনজিৎ আরো বলেন যে যদিও তারা কাহিনীর খুব একটা পরিবর্তন করেনি, তবুও চলচ্চিত্রের কাকাবাবু আরো বেশি আধুনিক।[১০]
সংগীত
২রা অক্টোবর, ২০১৩, বুধবার কলকাতার ওবেরয় গ্রান্ড হোটেলে চলচ্চিত্রের সঙ্গীত মুক্তি দেয়া হয়। ছবির কলা-কুশলীরা সেদিন উপস্থিত ছিলেন।[১১] ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্তর সুর করা এবং শ্রীজাতর লেখা ছয়টি গান অ্যালবামে আছে।[১১]
সমালোচকদের গ্রহণ
সুতপা সিংহ দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার হয়ে রেটিং দেন এবং বলেন যে এর অডিও অ্যালবামটি পর্দায় থ্রিলার দেখার এক জানালা ছিল।[১২]
গ্রহণ
মিশর রহস্য ভালর দিকেই অধিকাংশ রিভিউ লাভ করে।
আনন্দবাজার পত্রিকার গৌতম চক্রবর্তী একে রেটিং দেয়।[১৩]
তবে এবেলার দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ একে দেয়।[১৪]
পুরস্কার ও মনোনয়ন
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ