যোনিদ্বার বা ভালভা (ইংরেজি vulva, যা ল্যাটিনvulva, বহুবচনে vulvae বা vulvas; ব্যুৎপত্তি দেখুন একটি বহিঃস্থ স্ত্রীযৌনাঙ্গ।[১] যদিও কথ্য ভাষায় স্ত্রী যৌনাঙ্গ বোঝাতে সচারচর যোনি ব্যবহৃত হয়, কিন্তু সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে যোনি একটি অভ্যন্তরীণ যৌনাঙ্গ, যেখানে ভালভা বলতে বোঝায় সমগ্র বহিঃস্থ যৌনাঙ্গ। এই নিবন্ধে মানুষের ভালভা আলোচনা করা হয়েছে, তবে গঠন সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীর জন্য একই।
জীবন শুরুর প্রথম আট সপ্তাহে ছেলে ও মেয়ে ভ্রূণের প্রাথমিক প্রজনন ও যৌন অঙ্গগুলো একই থাকে, এবং মাতৃ হরমোগুলো এগুলোর বিকাশ নিয়ন্ত্রণ করে। ছেলে ও মেয়ের বৈশিষ্ট্যসূচক অঙ্গগুলো পৃথক হওয়া শুরু করে তখন, যখন ভ্রূন নিজের হরমোন নিজেই উৎপাদনে সক্ষম হয়। যদিও বারো সপ্তাহের আগে দেখে লিঙ্গ নির্ধারণ করা কষ্টসাধ্য।
ষষ্ঠ সপ্তাহে ক্লোকাল মেমেব্রেনের সামনে থেকে জেনিটাল টিউবারকল বিকশিত হতে শুরু করে।
তৃতীয় মাসের শুরুতে জেনিটাল টিউবারকল ভগাঙ্কুরে পরিণত হয়। ইউরোজেনিটাল ভাঁজ হয় লেবিয়া মাইনরায় পরিণত হয় এবং লেবিওসক্রোটাল সুয়েলিংস হয় লেবিয়া মেজরা।
শিশুকাল
জন্মের পর, শিশুর ভালভা (এবং স্তন কলা—দেখুন উইচেস দুগ্ধ) তুলনামূলকভাবে বড়ো ও স্পষ্টদর্শন থাকে, এবং এটা ঘটে কারণ অমরা থেকেই মায়ের কারণে শিশুর দেহে হরমোন ক্ষরণের সীমার বৃদ্ধি অপরিবর্তিত থাকে। পরবর্তী সময়ের চেয়ে ক্লিটোরিস তাই তুলনামূলকভাবে বড়ো থাকে। যখন এই হরমোন ক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়, ভালভা ছোট হয়ে স্বাভাবিক আকৃতি ফিরে পায়।
এক বছর বয়স থেকে বয়ঃসন্ধি শুরুর পূর্ব পর্যন্ত, শরীরের অন্যান্য স্থানের বৃদ্ধি/পরিবর্তনের তুলনায় ভালভাতে কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় না।
বয়ঃসন্ধি
বয়ঃসন্ধি শুরুর পর থেকে ভালভাতে বেশ কতোগুলো পরিবর্তন আসে। এটি আগের তুলনায় আকার বড় ও আরও বেশি বাইরের দিকে প্রকাশিত হয়। এর রঙ পরিবর্তন হতে পারে এবং যৌনকেশ (পিউবিক হেয়ার) দেখা যায়। যৌনকেশের উপস্থিতি প্রথমে লেবিয়া মেজরায় দেখা যায়, পরবর্তীকালে তা মন্স পিউবিসে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া কিছুক্ষেত্রে উরুর ভেতরাংশে ও পেরিনিয়ামেও যৌনকেশের উপস্থিতি থাকতে পারে।
প্রাকবয়ঃসন্ধিকালীন মেয়েদের ক্ষেত্রে ভালভা প্রাপ্তবয়স্ক সময়ের চেয়ে কিছুটা সম্মুখদিকে বেরিয়ে এসে অবস্থান করে। দাঁড়িয়ে থাকলে তাই লেবিয়া মেজরা ও পিউডেন্ডাল ক্লেফট-এর বেশখানিকটা অংশ দৃশ্যমান হয়। বয়ঃসন্ধির সময় মন্স পিউবিস-এর আকৃতি বৃদ্ধি ঘটে। লেবিয়া মেজরার সামনের অংশ পিউবিক অস্থি থেকে সামনের দিকে ঠেলে দেয়, এবং দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তা ভূমির সাথে সমান্তরালে অবস্থান করে। মেদ কলার ভিন্নতাও এই পরিবর্তনে প্রভাব ফেলে।
শিশু জন্মদান
শিশু জন্মদানের সময় যোনি ও ভালভা অবশ্যই শিশুর মাথার আকৃতির প্রতি লক্ষ্য রেখে সে অনুযায়ী প্রসারিত হতে হয় (প্রায় ৯.৫ সেন্টিমিটার বা ৩.৭ ইঞ্চি)। এর ফলে যোনির প্রবেশমুখ, লেবিয়া ও ভগাঙ্কুর ছিড়ে যাবার সম্ভাবনাও থাকে। এই ছিড়ে যাওয়া রোধ করতে কিছু ক্ষেত্রে এপিসায়োটমি (পেরিনিয়াম কাটার শল্যচিকিৎসা) করা করা হয়, কিন্তু এটার প্রযোজ্যতা ও কর্মপদ্ধতি এখনো বিতর্কিত।
গর্ভধারণের সময় সংঘটিত কিছু পরিবর্তন স্থায়ী হয়ে যেতে পারে।
রজঃনিবৃত্তি পরবর্তী সময়
রজঃনিবৃত্তির সময় হরমোন ক্ষরণের সীমা কমে যায়, এবং এটা ঘটার ফলে প্রজনন কলা ও এসকল হরমোনের দ্বারা প্রতিক্রিয়াশীল অঙ্গগুলো আকৃতিতে ছোট হয়ে যেতে থাকে। মন্স পিউবিস, লেবিয়া, এবং ভগাঙ্কুর রজঃনিবৃত্তির পরে আকারে ছোট হয়ে যায়, তবে তা প্রাক-বয়ঃসন্ধি অবস্থার মতো নয়।
Pink Partsওয়েব্যাক মেশিনেআর্কাইভকৃত ২২ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে - "Walk through" of female sexual anatomy by sex activist and educator Heather Corinna (illustrations; no explicit photos)