অ্যাডেলাইন ভার্জিনিয়া উল্ফ (১৮৮২-১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ) ইংরেজি ভাষার একজন সাহিত্যিক। উনিশ শতকের ব্রিটিশ আধুনিকতাবাদী লেখকদের মধ্যে তিনি অন্যতম। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়কালে তিনি লন্ডন লিটারেসি সোসাইটি এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য রচনা হল, মিসেস ডাল্লাওয়ে (১৯২৫), টু দ্যা লাইটহাউজ (১৯২৭), ওরলান্ডো (১৯২৮)। তার রচিত ভাষন সংকলন এ রুম ওয়ান’স ওন (১৯২৯) বইটি তার উক্তি “নারী যখন ফিকশন লেখে তখন তার একটি কক্ষ আর কিছু অর্থ খুব প্রয়োজন।” এর জন্য বিখ্যাত। উল্ফ ডিপোলার ডিজঅর্ডার নামক একটি মানসিক রোগে ভুগেছিলেন। তিনি ১৯৪১ সলে ৫৯ বছর বয়সে আত্মহত্যা করেন।
শৈশব
ভার্জিনিয়া উল্ফ এর কুমারী নাম ছিল এ্যডেলাইন ভার্জিনিয়া স্টিফেন। [১] তার বাবার নাম স্যার লেসলী স্টিফেন এবং মার নাম জুলিয়া প্রিন্সেপ ডাকওয়ার্থ স্টিফেন। কাকা বিখ্যাত আইনবিদ ও ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের জনক জেমস ফিটজেমস স্টিফেন। বাবা স্যার লেসলী ছিলেন একজন স্বনামধন্য ইতিহাসবিদ, লেখক, সমালোচক এবং পর্ব্বত আরোহী। বাবার লেখালেখি ভার্জিনিয়াকে একজন সাহিত্যিক হতে উৎসাহ যুগিয়েছিল। ভার্জিনিয়ার মা জুলিয়া স্টিফেনের জন্ম তৎকালিন ব্রিটিশ ভারতে। পরে তিনি ইংল্যান্ডে চলে আসেন। ভার্জিনিয়ার বাবা মা দুইজনই পূর্বে একাধিকবার বিয়ে করেন। ছোটবেলায় ভার্জিনিয়া উল্ফ তার বেশ কয়েকজন সৎ ভাইবোনের সাথে একই পরিবারে বসবাস করতেন।
সাহিত্য কর্ম
পেশা হিসাবে উল্ফ লেখালেখি শুরু করেন ১৯০০ সালে। টাইমস লিটারারি সাপ্লিমেন্ট এ তার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। তার প্রথম উপন্যাস ‘দ্য ভয়েজ আউট’ ১৯১৫ সালে প্রকাশিত হয়।তার সৎ ভাইয়ের কোম্পানি গেরাল্ড ডাকওয়ার্থ এন্ড কোম্পানি লিঃ এর প্রকাশক ছিল। তার বেশীরভাগ লেখার প্রকাশক তিনি নিজে। প্রকাশিত হয়েছিল হগার্থ প্রেস থেকে। উল্ফ তার লেখায় চরিত্রগুলির মনস্তাত্ত্বিক ও আবেগের বিষয়গুলি নিয়ে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তার খ্যাতি কিছুটা হ্রাস পেয়েছিল।[১]
মৃত্যু
ভার্জিনিয়া উল্ফ এর শেষ উপন্যাস ‘বিটউইন দ্যা এ্যাক্টস’ লেখা শেষ করার পর তিনি বিষন্নতায় ভুগতে শুরু করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তার লন্ডনের বাড়ি ধ্বংস হওয়া এর পিছনে একটি কারণ।[২] অবশ্য এর আগেও তিনি বিভিন্ন কারণে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। ২৮শে মার্চ ১৯৪১ সালে উল্ফ তার ওভারকোটের পকেট ভারি পাথর দিয়ে ভর্তি করে ওউজ নদীতে আত্মহত্যা করেন। ১৮ই এপ্রিল নদীতে তার দেহাংশ পাওয়া যায়। রডমেল, সাসসেক্স এর মংক হাউজে একটি এলম গাছের নিচে তাকে সমাহিত করা হয়।[২]
তথ্যসূত্র
↑Critical Essays on Virginia Woolf, Morris Beja, 1985, Introduction, pp. 1, 3, 53.