ভারত তার প্রাণীজগৎ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য পৃথিবীখ্যাত।[১] মুষ্টিমেয় কিছু গৃহপালিত পশু যেমন গোরু, মহিষ, ছাগল, মুরগি, এবং ব্যাক্ট্রিয়ান ও ড্রোমেডারি উট ছাড়াও ভারতে বহু ধরনের প্রাণী বসবাস করে। এখানে বসবাস করে বেঙ্গল ও ইন্দোচীন বাঘ, এশীয় সিংহ, ভারতীয় ও ইন্দোচীন চিতা, তুষার চিতা, মেঘলা চিতা, হরিণের বিভিন্ন জাত, যেমন চিত্রা, হাঙ্গুল, বারশিঙ্গা; ভারতীয় হাতি, ভারতীয় গণ্ডার, এবং আরও অনেক।[২][৩] এলাকাটির সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ বণ্যপ্রাণী ১২০+ জাতীয় উদ্যানে, ১৮ বায়োস্ফিয়ার সংরক্ষণে এবং ৫০০+ বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে সংরক্ষিত আছে। ভারতে পৃথিবীর সবচেয়ে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা গুলির একটি আছে এবং এখানে পৃথিবীর ৩৬টি জীববৈচিত্র্য হটস্পট[৪] – বা ধনভাণ্ডার গুলির ৪টি[৫] আছে – সেগুলি হল পশ্চিমঘাট পর্বতমালা, পূর্ব হিমালয়, ইন্দো-বার্মা ও সুন্ডা ল্যান্ড।[৬] যেহেতু ভারতে বহু দুর্লভ ও বিপন্ন প্রজাতি বসবাস করে, সেইহেতু এই প্রাণী গুলির সংরক্ষণের জন্য বণ্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা কার্যকর।[৭] ভারত ১৭টি বিশালবিবিধ দেশগুলির একটি। একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারত ও অন্য ১৬টি বিশালবিবিধ দেশে একত্র ভাবে পৃথিবীর প্রায় ৬০-৭০% জীববৈচিত্র্য আছে।[৮] ভারতে, যা ইন্দোমালয় এলাকার একটি অংশ, বাস করে ৭.৬% স্তন্যপায়ী, ১২.৬% পক্ষী, ৬.২% সরীসৃপ, এবং ৬.০% সপুষ্পক উদ্ভিদের প্রজাতি।[৯]
বহু ভারতীয় প্রজাতির পূর্বপুরুষ টাক্সন যার উৎপত্তি গন্ডোয়ানাল্যান্ডে, যার অন্তর্গত আসলে ভারত ছিল। উপদ্বীপীয় ভারতেরলরেশিয়ার প্রতি গমন ও ধাক্কা প্রজাতিতে বিশাল বদল এনেছিল। যদিও, ২ কোটি বছর আগে আগ্নেয়প্র্রক্রিয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বহু ভারতীয় স্থানীয় ধরনের বিলুপ্তি ঘটালো।[১০] তারপর দ্রুত, ভারতে স্তন্যপায়ীরা ঢুকে পড়ল এশিয়া থেকে, উদীয়মান হিমালয়ের দুই দিকের প্রাণীভুগোলিক গিরিপথ দিয়ে। ফলস্বরূপ, ভারতীয় প্রজাতিগুলির মধ্যে, মাত্র ১২.৬% স্তন্যপায়ী এবং ৪.৫% পাখিই স্থানীয়, ৪৫.৮% সরীসৃপ এবং ৫৫.৮% উভচরের সঙ্গে। উল্লেখযোগ্য স্থানীয়রা হচ্ছে নীলগিরি লেঙ্গুর এবং পশ্চিমঘাটের খয়েরি ও গাঢ় লাল বেড ডোমস্ টোড বা কচ্ছপ। ভারতে বাস করে আইইউসিএন-চিহ্নিত বিপন্ন প্রাণীগুলির মধ্যে ১৭২টি প্রাণী, অর্থাৎ ২.৯%।[১১] এগুলির অন্তর্গত এশীয় হাতি, এশীয় সিংহ, বেঙ্গল টাইগার, ভারতীয় গণ্ডার, স্বাদুপানির কুমির, এবং ভারতীয় হোয়াইট-রাম্পড্ শকুন, যা একটি প্রায়-বিলুপ্তি ভুগেছিল এবং আইইউসিএন লাল তালিকায় ২০০০ সাল থেকে আছে।
সাম্প্রতিক দশকগুলিতে, মানব আক্রমণ ভারতের বণ্যপ্রাণীর বিরাট ক্ষতি করেছে; সমাধানে, জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত এলাকার রীতি, ১৯৩৫ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠিত, সম্প্রসারিত করা হয়েছিল। ১৯৭২ সালে, ভারত কার্যকর করল বণ্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন ও ব্যাঘ্র প্রকল্প অতি গুরুত্বপূর্ণ আবাস রক্ষা করতে; আরও ফেডারেল সুরক্ষা ৮০'র দশকে সালে কার্যকর হয়। ৫৪৩টি অভয়ারণ্যের পাশাপাশি, এখন ভারতে ১৮টি বায়োস্ফেয়ার সংরক্ষণ আছে, যার ১০টি আন্তর্জাতিক বায়স্ফেয়ার সংরক্ষণের নেটওয়ার্কের অংশ; ২৬টি জলাভূমিরামসার কনভেনশানে নিবন্ধভুক্ত।
মহেঞ্জো দারোর সিলমোহরগুলিতে প্রদর্শিত, অশ্বত্থ গাছটি, গৌতম বুদ্ধকে ছায়া প্রদান করেছিল যখন তিনি বিশেষ জ্ঞানলাভ করেন। ভারতের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য ও বণ্যপ্রাণী এলাকার সংস্কৃতিতে স্পষ্ট প্রভাব রেখেছে। শব্দটি রুডইয়ার্ড কিপলিং-এর দ্য জাংগল বুক-এও খ্যাত করা হয়েছে। ভারতের বণ্যপ্রাণী আরও অনেক গল্প এবং উপকথার বিষয় হয়েছে যেমন পঞ্চতন্ত্র।
↑
Groombridge, B. (ed). 1993. The 1994 INDUCT Red List of Threatened Animals. INDUCT, Gland, Switzerland and Cambridge, UK. lvi + 286 pp.
↑
Luo, S.-J.; Kim, J.-H.; Johnson, W. E.; van der Walt, J.; Martenson, J.; Yuhki, N.; Miquelle, D. G.; Uphyrkina, O.; Goodrich, J. M.; Quigley, H. B.; Tilson, R.; Brady, G.; Martelli, P.; Subramaniam, V.; McDougal, C.; Hean, S.; Huang, S.-Q.; Pan, W.; Karanth, U. K.; Sunquist, M.; Smith, J. L. D., O'Brien, S. J. (২০০৪)। "Phylogeography and genetic ancestry of Panthera tigris"। PLoS Biology। 2 (12): e442। ডিওআই:10.1371/journal.pbio.0020442। পিএমআইডি15583716। পিএমসি534810।উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: একাধিক নাম: লেখকগণের তালিকা (link)
↑
Jhala, Y. V., Qureshi, Q., Sinha, P. R. (Eds.) (2011). Status of tigers, co-predators and prey in India, 2010. National Tiger Conservation Authority, Govt. of India, New Delhi, and Wildlife Institute of India, Dehradun. TR 2011/003 pp-302
↑
Pocock, R. I. (১৯৩৯)। "Panthera leo"। The Fauna of British India, including Ceylon and Burma. Mammalia. – Volume 1। London: Taylor and Francis Ltd.। পৃষ্ঠা 212–222।
Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!