ব্রুস টেলর

ব্রুস টেলর
১৯৬৭ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ব্রুস টেলর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ব্রুস রিচার্ড টেলর
জন্ম(১৯৪৩-০৭-১২)১২ জুলাই ১৯৪৩
তিমারু, নিউজিল্যান্ড
মৃত্যু৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১(2021-02-06) (বয়স ৭৭)
লোয়ার হাট, নিউজিল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১০৮)
৫ মার্চ ১৯৬৫ বনাম ভারত
শেষ টেস্ট৫ জুলাই ১৯৭৩ বনাম ইংল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৪)
১৮ জুলাই ১৯৭৩ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ ওডিআই২০ জুলাই ১৯৭৩ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩০ ১৪১ ১৪
রানের সংখ্যা ৮৯৮ ২২ ৪,৫৭৯ ২৭২
ব্যাটিং গড় ২০.৪০ ২২.০০ ২৪.৭৫ ২৪.৭২
১০০/৫০ ২/২ ০/০ ৪/১৭ ০/১
সর্বোচ্চ রান ১২৪ ২২ ১৭৩ ৫৯*
বল করেছে ৬৩৩৪ ১১৪ ২১,৫৬২ ৪১০
উইকেট ১১১ ৪২২ ১৬
বোলিং গড় ২৬.৬০ ১৫.৫০ ২৫.১৩ ২৫.৬২
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৫
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ৭/৭৪ ৩/২৫ ৭/৭৪ ৪/৩৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১০/- ১/- ৬৬/- ৭/-
উৎস: ক্রিকইনফো.কম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

ব্রুস রিচার্ড টেলর (ইংরেজি: Bruce Taylor; জন্ম: ১২ জুলাই, ১৯৪৩ - মৃত্যু: ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১) তিমারু এলাকায় জন্মগ্রহণকারী নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেকে শতরান ও পাঁচ-উইকেট লাভের কীর্তিগাঁথার সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন।[][]

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটে ক্যান্টারবারি ও ওয়েলিংটন দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন ব্রুস টেলর

ঘরোয়া ক্রিকেট

১৯৭২-৭৩ মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ডুনেডিনে ওতাগোর বিপক্ষে ১৭৩ রান তুলেছিলেন তিনি। ব্যাট হাতে যখন তিনি মাঠে নামেন তখন দলীয় সংগ্রহ ছিল ৪২/৪।[] ১৯৭৯-৮০ মৌসুমে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন ব্রুস টেলর।[]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৩০টি টেস্ট ও ২টি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন ব্রুস টেলর। ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড দলের সদস্যরূপে ভারত গমন করেন।[] ৫ মার্চ, ১৯৬৫ তারিখে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ব্রুস টেলরের। কলকাতায় অনুষ্ঠিত অভিষেক ঘটা সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ১০৫ রানের মনোজ্ঞ শতরানের ইনিংস খেলার পাশাপাশি ৫/৮৬ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। এরফলে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেকেই অল-রাউন্ডারের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন তিনি।[] এরপূর্বে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে আর কোন সেঞ্চুরির সন্ধান পাননি ব্রুস টেলর ও কেবলমাত্র তিনটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। আট নম্বর অবস্থানে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫৮ মিনিটে ১৪টি চারের মার ও ৩ ছক্কা সহযোগে দর্শনীয় ১০৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। সপ্তম উইকেট জুটিতে বার্ট সাটক্লিফের সাথে ১৬৩ রান ওঠান।[] এ ইনিংসে বার্ট সাটক্লিফের সংগ্রহ ছিল অপরাজিত ১৫১ রান।

এছাড়াও, ১৯৬৯ সালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বাধিক দ্রুততম সময়ে টেস্ট সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি তার এ রেকর্ডটি ভেঙ্গে নিজের করে নিয়েছেন। অকল্যান্ডে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে তিনি যখন মাঠে নেমেছিলেন তখন দলের সংগ্রহ ছিল ১৫২/৬। ১৪ চার ও ৫ ছক্কায় ১২৪ রান সংগ্রহ করেন। ৩০ মিনিটে অর্ধ-শতক ও ৮৬ মিনিটে শতরানের কোটা স্পর্শ করেন তিনি। তার সংগৃহীত দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরিটিও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি ছিল।[]

ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন, ১৯৭১-৭২

১৯৭১-৭২ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন। এ সিরিজে তিনি অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে সক্ষমতা দেখান। সিরিজটি ‘ব্যাটসম্যানদের সিরিজ’ নামে পরিচিতি পায় ও পাঁচ টেস্টের সবকটি টেস্টই ড্রয়ে পরিণত হয়। উভয় দলের কোন বোলারই ১৪ উইকেটের বেশি পাননি। ব্যতিক্রম হিসেবে তিনি ১৭.৭০ গড়ে ৪ টেস্টে অংশ নিয়ে ২৭ উইকেট পেয়েছিলেন। ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। প্রথম ইনিংসে ৭/৭৪ পান ও স্বাগতিক দলকে প্রথমদিনের চা-বিরতির পূর্বেই ১৩৩ রানে গুটিয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

এ প্রসঙ্গে উইজডেন মন্তব্য করে যে, বাস্তবিকই অনিন্দ্য সুন্দর ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেছেন তিনি।[] সামগ্রিকভাবে সিরিজে তার ভূমিকা নিয়ে উইজডেনে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করা হয়। আদর্শ ভঙ্গীমায় সুনিয়ন্ত্রিত পন্থায় অগ্রসর হয়েছেন তিনি ও পুরো নিউজিল্যান্ডীয় দলে তার সমকক্ষ আর কেউই ছিল না।[] ১৯৭৩ সালে ইংল্যান্ড সফরে সর্বশেষ টেস্ট খেলায় অংশ নিয়েছিলেন ব্রুস টেলর।

অবসর

খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর ওয়েলিংটন ও ওতাগো দলের নির্বাচক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। এছাড়াও, ১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে জাতীয় দলের নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যরূপে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।[]

১৯৯৩ সালের শুরুরদিকে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে ডুনেডিনের জন ম্যাকগ্ল্যাশান কলেজের কোষাধ্যক্ষের পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দান করা হয়েছিল। জুয়া খেলায় তার প্রবল আসক্তি ছিল। বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে $৩৬০,০০০ ডলার অর্থ তছরুপ করেছিলেন তিনি।[১০][১১] প্রতারণার কারণে তার বিরুদ্ধে ২২টি অভিযোগ আনা হয় ও এক বছরের সাজা দেয়া হয়। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত কারাভোগ করেন তিনি।[][১১]

ব্যক্তিগত জীবন

২০১৬ সালে অস্ত্রোপচার করতে হয়। তার শারীরিক অবস্থাও তেমন ভালো ছিল না। মার্চ, ২০১৬ সালে তার এক পা অচল হয়ে যায় ও পঁচন ঠেকাতে এর প্রয়োজন পড়ে।[] অতঃপর, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ তারিখে বোলকটের হাট হাসপাতালে ৭৭ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে।[][১১]

তথ্যসূত্র

  1. "Zero sum"। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৯ 
  2. "Record-holding New Zealand allrounder Bruce Taylor dies"ESPN Cricinfo। ESPN Internet Ventures। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  3. "Remembering Bruce Taylor"New Zealand Cricket। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  4. "2nd Test: India v New Zealand at Kolkata, Mar 5-8, 1965"espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-১৮ 
  5. "An Australian menace"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১৭ 
  6. "New Zealand cricket genius Bruce Taylor dies in hospital, aged 77"Stuff। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  7. Wisden 1970, p. 907.
  8. Wisden 1973, p.892.
  9. Henry Blofeld, "New Zealand in the West Indies, 1971-72", Wisden 1973, p.880.
  10. Grant, David (১৯৯৪)। On a roll: a history of gambling and lotteries in New Zealand। Victoria University Press। পৃষ্ঠা 299। আইএসবিএন 978-0864732668 
  11. "Cricket: Former New Zealand test standout Bruce Taylor passes away at age 77"The New Zealand Herald। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 

বহিঃসংযোগ

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!